রাজৈর হানাদার মুক্ত দিবস আজ

নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে সাড়ে তিনশ মুক্তিযোদ্ধাসহ শহীদের আত্মত্যাগের মধ্যে দিয়ে ৪ ডিসেম্বর মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলা হানাদার মুক্ত হয়।

১৯৭১ সালের এই দিনে রাজৈর থানার মুক্তিযোদ্ধাদের হামলায় পরাস্ত পাক হানাদার বাহিনী মাদারীপুরের রাজৈর থানা থেকে পালিয়ে পাশের গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের ছাগলছিড়া এলাকায় চলে যায় এবং সেখানে গ্রামবাসীর সহায়তায় ১৩৫ পাক হানাদারকে বন্দী করেন মুক্তিযোদ্ধারা। এরপরই হানাদার মুক্ত হয় রাজৈর উপজেলা।

মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার কমলাপুর, পাখুল্যা, লাউসর, কদমবাড়ি, মহিষমারী, ইশিবপুর ও কবিরাজপুরসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করে মুক্তিযোদ্ধারা পাকবাহিনীর সঙ্গে লড়াই করে। পাকবাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার আলবদর আলশামসরা মুক্তিকামী মানুষের কয়েক হাজার ঘরবাড়ী পুড়িয়ে দয়ে।

খালিয়ার সেন্দিয়ায় পাকবাহিনী ও রাজাকাররা আখ ক্ষেত ও ঝোপ জঙ্গলের মধ্যে পলাতক ১৩১ মুক্তিকামী মানুষকে হত্যা করে। পাকবাহিনী ও রাজাকারদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের মুখোমুখি যুদ্ধ হয়।

সর্বশেষ ৩ ডিসেম্বর মধ্য রাতে পাকবাহিনী রাজৈর ছেড়ে পালানোর সময় মুক্তিযোদ্ধারা ও স্থানীয় গ্রামবাসী দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। এরপরে গ্রামবাসীর সহায়তায় ১৩৫ পাক হানাদারকে বন্দী করেন মুক্তিযোদ্ধারা। নয় মাসের যুদ্ধে পাকবাহিনী ও তাদের দোসরদের হাতে মুক্তিযোদ্ধাসহ প্রায় সাড়ে তিনশ' মানুষ শহীদ হন।

মানবতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হওয়ায় দেশ আজ কলঙ্কমুক্ত হচ্ছে। দেশ কলঙ্কমুক্তের পথে রাজৈরের কুখ্যাত রাজাকাররা এখনও বিচারের আওতায় না আসায় ক্ষুব্ধ মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা।

রাজৈর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সেকান্দার আলী শেখ বলেন, জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন হলেও দেশের মাটিতে এখনো রাজাকাররা ঘুরে বেড়ায় এটাই যেন মুক্তিযোদ্ধাদের কষ্ট।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //