বরিশালে পেঁয়াজের দাম এক লাফে ২০০ টাকা

আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত ভারত থেকে আমদানি বন্ধের খবরে বরিশালের পাইকারি বাজার থেকে উধাও হয়ে গেছে পেঁয়াজ। শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকেই পাইকারি বাজারে পেঁয়াজ কিনতে মানুষের ভিড় জমে যায়। সেই সুযোগে বাড়তি দামেই বিক্রি করা হয় পেঁয়াজ।

গত বৃহস্পতিবার সারাদিন যেই পেঁয়াজ ৯০ টাকা দরে বিক্রি হয় শুক্রবার সন্ধ্যার মধ্যেই তা ১৭০ টাকায় পৌঁছায়। আর শনিবার পেঁয়াজ বিক্রি হয় ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়।

শুধু পেঁয়াজই নয়, বেড়েছে রসুন, আলু এবং আটা-ময়দার দামও। প্রতিটি পণ্যে কেজি প্রতি ১০ টাকা থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে দ্রব্যমূল্য নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে নাভিশ্বাস সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে বাড়তি দামে পেঁয়াজ বিক্রি করায় বরিশালে পেঁয়াজের পাইকারি বাজারে অভিযান শুরু করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। শনিবার দিনভর নগরীর হাটখোলা পেঁয়াজ পট্টিতে অভিযান পরিচালনা করে ৬টি পাইকারি আড়তে ৯৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছে তারা। এছাড়া কয়েকটি প্রতিষ্ঠান মালিককে কঠোরভাবে সতর্ক করা হয়েছে।

জরিমানা দেওয়া আড়তগুলোর মধ্যে মেসার্স একতা ট্রেডার্সকে ৩০ হাজার টাকা, মেসার্স রহমত ভাণ্ডারকে ১০ হাজার, জম মজ বাণিজ্যালয়কে ১০ হাজার, নগরীর হাটখোলা এলাকার মেসার্স নিউ আদর্শ বাণিজ্যালয়কে ২৫ হাজার, এলাহি বাণিজ্যালয়কে ১০ হাজার এবং অপর একটি প্রতিষ্ঠানকে আরো ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

অপরদিকে খুচরা বাজারে নজরদারি দেখা যায়নি ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বা জেলা প্রশাসনের। ফলে পাইকারি বাজার কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসলেও খুচরা বাজারে অতিরিক্ত মূল্যেই বিক্রি হচ্ছে পিঁয়াজ।

সরেজমিনে দেখা যায়, নগরীর পেঁয়াজ পট্টির ৩২টি পাইকারি দোকানের বেশির ভাগ দোকানই এখন পেঁয়াজ শূন্য। পেঁয়াজের আমদানি না থাকায় অনেকেই বিক্রি করছেনা।

আর যারা বিক্রি করছেন তারা পাইকারি এলসি সাইজের পেঁয়াজ ১৭০-১৮০ টাকা দরে বিক্রি করেন। যা বৃহস্পতিবারও ৯০-৯৫ টাকা দরে বিক্রি হয়।

পেঁয়াজের আড়ৎ ঘুরে দেখা যায়, এলসি সাইজের পেঁয়াজ পাইকারি ১৭০-১৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর খুচরা বাজারে দাম ২০০ টাকা।

খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করার খবরে সকালে বাজারে এসে দেখেন যে পেঁয়াজ তারা বৃহস্পতিবার ৯০ টাকা দরে কিনেছেন তা এখন ১৭০-১৮০ টাকা। এছাড়া চায়না পেঁয়াজ যেখানে ৬০-৭০ টাকা দরে কিনেছেন তা এখন পাইকারি ১১০-১২০ টাকা। যা খুচরা বাজারে বিক্রি হয় ১৫০ টাকা কেজি দরে।

আড়ৎদাররা বলছেন, তারা প্রতিদিন ১৫০-২০০ বস্তা পেঁয়াজ বিক্রি করতেন সেখানে পেঁয়াজ সরবরাহ না থাকায় বিক্রি বন্ধ করতে হচ্ছে তাদের।

এদিকে শুধু পেঁয়াজের দামই নয়, বেড়েছে আরো বেশ কিছু নিত্য পণ্যের। এর মধ্যে রসুন গত সপ্তাহে ১৮০ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে তা ২৪০টায় বিক্রি করা হচ্ছে। আলু পূর্বে ৪৮ টাকা বিক্রি হলেও বর্তমানে তা ৫৫-৫৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া গত সপ্তাহের থেকে ১০টা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে আটা এবং ময়দা। গত সপ্তাহে প্রতি কেজি খোলা আটা ৩৮ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে তা ৪৮ টাকায় পৌঁছেছে। এছাড়া ময়দা ৬০ টাকা থেকে ১০ টাকা বেড়ে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বরিশাল বিভাগের উপ-পরিচালক অপূর্ব অধিকারী জানান, পণ্য মজুদ রাখা ও দাম বৃদ্ধি করে বিক্রির অপরাধে ৬টি আড়তকে জরিমানা করা হয়েছে। ৬ প্রতিষ্ঠানকে ৯৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া অন্যান্য পণ্যের বিষয়েও আমাদের নজরদারি রয়েছে।

তাছাড়া চলমান এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি। অভিযানকালে ভোক্তা অধিকারের সহকারী পরিচালক ইন্দ্রানি দাস ও সুমি রানী মিত্রসহ পুলিশের একটি টিম উপস্থিত ছিলেন।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //