আনোয়ারুলের সম্পদ বেড়েছে ২২২ গুণ

ঝিনাইদহ-৪ (কালীগঞ্জ ও সদরের আংশিক) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারের গত ১০ বছর আগে নিজ নামে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কোনো টাকা না থাকলেও বর্তমানে ১ কোটি ৮ লাখ টাকা জমা রয়েছে। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী। গত ১০ বছরে জাতীয় সংসদ হিসেবে নগদ টাকা বেড়েছে ২২২ গুণ। বেড়েছে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ। এছাড়া তার নামে ঝিনাইদহ আদালতে দশম জাতীয় নির্বাচনে তার নামে ২০টি মামলা, একাদশ জাতীয় নির্বাচনে ২১টি মামলা ও দ্বাদশ  জাতীয় নির্বাচনে হলফনামাতে তিনি ২টি মামলার তথ্য দিয়েছেন। যার কোনোটা ডিজবার্স ও কোনো মামলাতে খালাস দেখানো হয়েছে। 

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামা বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য জানা গেছে।

ঝিনাইদহ জেলা নির্বাচন অফিস থেকে পাওয়া হলফনামা ও নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে প্রাপ্ত হলফনামা থেকে জানা যায়, বর্তমানে আনোয়ারুল আজীম আনারের বার্ষিক আয় ৩৮ লাখ ৯২ হাজার ৭১৮ টাকা ও প্রার্থীর উপর নির্ভরশীলদের আয় ২৪ লাখ ৫৪ হাজার ৫৩ টাকা। ১০ বছর আগে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামা অনুযায়ী এ সংসদ সদস্যের বার্ষিক আয় ছিলো ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা। এছাড়াও প্রার্থীর উপর নির্ভরশীল স্ত্রীর ব্যবসা থেকে আয় ছিলো ২ লাখ ৭০ হাজার। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে হলফনামাতে কৃষি থেকে বছরে আয় ১ লাখ ৯৫ হাজার টাকা দেখানো হয়েছে। যা ১০ বছর আগে দশম জাতীয় নির্বাচনে এ খাত থেকে তার আয় ছিলো ২৪ হাজার টাকা। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে ব্যবসা থেকে আয় ১৩ লাখ ১৯ হাজার ৬৪৮ টাকা। ১০ বছর আগে দশম জাতীয় নির্বাচনে এ খাত থেকে আয় ছিলো ১ লাখ টাকা। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের হলফনামাতে অন্যান্য ও সংসদ সদস্য হিসেবে ভাতা বাবদ আয় ২৩ লাখ ৭৮ হাজার ৭০ টাকা। ১০ বছর আগে দশম জাতীয় নির্বাচনে উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে পেয়েছেন ২ লাখ ৪৬ হাজার।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনে দেওয়া হলফনামাতে দেখা যায়, বর্তমানে আনোয়ারুল আজীম আনারের নগদ ১ কোটি ৩৯ লাখ ৩২ হাজার ৮১৮ টাকা রয়েছে এবং তার স্ত্রীর রয়েছে ২০ লাখ ১০ হাজার টাকা। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামা অনুযায়ী সেসময় তার হাতে নগদ টাকা ছিলো ৬২ হাজার ৫৮০ টাকা ও স্ত্রীর নামে ছিলো ৯৭ হাজার ৫০০ টাকা। গত ১০ বছরে নগদ টাকা বেড়েছে ২২২ গুণ। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আনোয়ারুল আজীম আনারের রয়েছে ১ কোটি ৮ লাখ টাকা ও স্ত্রীর রয়েছে ১৯ লাখ ৯২ হাজার ১১৯ টাকা। ১০ বছর আগে এই সংসদ সদস্যের ব্যাংকে কোনো টাকা না থাকলেও স্ত্রীর ছিলো ১৬ লাখ টাকা। ১০ বছর আগে স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ ও ট্রাক না থাকলেও বর্তমানে ৪টি ট্রাক ও ১ লাখ ১৪ হাজার ৩৫০ টাকা জীবন বীমার কিস্তি প্রদান করেছেন তিনি।

বর্তমানে এমপি আনোয়ারুল আজীম আনারের নিজ নামে কৃষি জমির পরিমাণ ৩৩ বিঘা ও স্ত্রীর নামে ২৪.৫০ শতক জমি রয়েছে। ১০ বছর আগে তার নিজ নামে কৃষি জমির পরিমাণ ছিলো ১০ বিঘা ও স্ত্রীর নামে কোন জমি ছিলো না। অকৃষি জমি (পৈত্রিকসূত্রসহ) রয়েছে ১২৯.৩৪ শতক ও স্ত্রীর নামে রয়েছে ১৭৯.০২ শতক। ১০ বছর আগে নিজ নামে ছিলো ৫৯.৫ শতক। এছাড়া ভূষণ স্কুল সড়কে একটি ৪ তলা বিশিষ্ট বাড়ি রয়েছে। দশম জাতীয় নির্বাচনে হলফনামাতে জনতা ব্যাংক কালীগঞ্জ শাকাতে ৩৪ লাখ ৮৮ হাজার ৪৪৭ টাকা ঋণের কথা উল্লেখ রয়েছে। যা ১০ পর একই ব্যাংকে ঋণ দেখানো হয়েছে ১৭ লাখ২৩ হাজার ১১১টাকা।

ঝিনাইদহ জেলা নির্বাচন অফিস থেকে প্রাপ্ত হলফনামা ও নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে প্রাপ্ত হলফনামা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, একাদশ নির্বাচনে কৃষিখাত, ব্যবসা ও এমপি সম্মানী হিসবে তার বার্ষিক আয় ছিলো ৩৬ লাখ ৭২ হাজার ৮২১ টাকা, স্ত্রীর আয় ছিল ৩ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। এছাড়া স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ, নগদ ও ব্যাংকে গচ্ছিত সম্পদের পরিমান ছিলো ২ কোটি ৬৯ লাখ ৯৩ হাজার ২৯৯ টাকা। একাদশ নির্বাচনে হলফনামাতে তিনি জনতা ব্যাংক কালীগঞ্জ শাখাই ৬২ লাখ ৪৯ হাজার ৯৬৮ টাকা ঋণ দেখিয়েছিলেন।