ঢাকা-১৯: আচরণবিধি লঙ্ঘন, পাঁচজনকে শোকজ

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৯ (সাভার-আশুলিয়া) আসনের আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে নৌকা, স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইউপি চেয়ারম্যানসহ পাঁচজনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটি।

গতকাল রবিবার (৩১ ডিসেম্বর) ঢাকা-১৯ আসনের নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান ও সিনিয়র সহকারী জজ জাকির হোসেন স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে তাদেরকে নোটিশে স্বাক্ষরকারীর কার্যালয়ে হাজির হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।

আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এনামুর রহমানকে দেয়া কারণ দর্শানোর নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে সাভারের ব্যাংক টাউন জামে মসজিদে জুম্মার নামাজের সময় মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে নৌকায় ভোট চেয়ে বক্তব্য দেন ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান। নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক আইডি থেকেও সেদিন লাইভে এসেছিলেন তিনি। এর আগে গত ১৯ ডিসেম্বর সাভারের বনগাঁও ইউনিয়নের নগরকোন্ডা এলাকার কোটাপাড়া বায়তুল আমান কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে প্রচারণা চালানোর সময়ও লাইভে এসেছিলেন তিনি। মসজিদে প্রচারণা চালানোর কারণে, রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা, ২০০৮ এর ১১(খ) বিধির স্পষ্ট লঙ্ঘন হয়েছে বলে সেই কারণ দর্শানোর নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে। কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হবে না এ মর্মে আগামীকাল ২ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) এ নোটিশের প্রেক্ষিতে ত্রাণ প্রতিমন্ত্রীর কাছ থেকে লিখিত জবাব চাওয়া হয়েছে। 

স্বতন্ত্র প্রার্থী তালুকদার মো. তৌহিদ জং মুরাদকে দেওয়া নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, নির্বাচনী এলাকা-১৯২, ঢাকা-১৯ আপনি আপনার নির্বাচনী এলাকায় কতিপয় ব্যক্তির হাতে নগদ অর্থ প্রদান করছেন যার একটি ভিডিও লিংক গত ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি হাতে এসেছে। যার দ্বারা আপনি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০০৮ এর ৩ বিধির স্পষ্ট লঙ্ঘন করেছেন মর্মে অত্র কমিটির গোচরীভূত হয়েছে। এবিষয়ে, আগামী ২ জানুয়ারি সকাল ১০ টায় এ নোটিশের প্রেক্ষিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী তালুকদার মো. তৌহিদ জং মুরাদের কাছ থেকে লিখিত জবাব চাওয়া হয়েছে।

এদিকে, বনগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান ও বনগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আরিফ আহমেদকে দেয়া নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঢাকা বিভাগের অধীনে ঢাকা জেলার সাভার উপজেলার নির্বাচনী এলাকা ১৯২ ঢাকা ১৯ এর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা করছেন। নির্বাচনী আচরণবিধিতে ধর্মীয় উপাসনালয়ে প্রচারণা চালানোর ব্যাপারে স্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা থাকার পরেও তা মানছেন না আপনি। গত শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে সাভারের ব্যাংক টাউন জামে মসজিদে জুম্মার নামাজের সময় মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে নৌকায় ভোট চেয়ে বক্তব্য দেন। ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক আইডি থেকেও সেদিন লাইভে এসেছিলেন তিনি। এর আগে গত ১৯ ডিসেম্বর সাভারের বনগাঁও ইউনিয়নের নগরকোন্ডা এলাকার কোটাপাড়া বায়তুল আমান কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে প্রচারণা চালানোর সময়ও লাইভে এসেছিলেন তিনি। মসজিদে প্রচারণা চালানোর কারণে, রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা, ২০০৮ এর ১১(খ) বিধির স্পষ্ট লঙ্ঘন হয়েছে বলে সেই কারণ দর্শানোর নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে। কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হবে না এবিষয়ে আগামী ২ জানুয়ারি দুপুর ১২ টায় নোটিশে স্বাক্ষরকারীর কার্যালয়ে হাজির হয়ে এবিষয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।

অপরদিকে, নৌকা প্রতীকের সমর্থক ও আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক। মো.আরিফ মাদবরকে  দেয়া নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাভার উপজেলার নির্বাচনী এলাকা ১৯২ ঢাকা ১৯ এর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা করছেন। গত ২৫ ডিসেম্বর একটি অনলাইন পত্রিকায় ‘স্বতন্ত্র প্রার্থীর পোস্টার লাগাতে দেখে নৌকার সমর্থকের হামলা’ হেডলাইনে প্রকাশিত সংবাদে আরিফ মাদবরের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ জানান ভুক্তভোগী। সংবাদে উল্লেখ্য ভুক্তভোগী সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী ট্রাক প্রতীকের সাইফুল ইসলামের সমর্থক। বিভিন্ন জায়গায় পোস্টার ও ব্যানার লাগানোর কাজ করি। সোমবার সকালে আশুলিয়ার গোরাট এলাকায় মো. সাইদ রানা, শ্রী সঞ্জয়, শ্রী সঞ্চিতসহ আমরা পোস্টার লাগানোর সময় নৌকা প্রতীকের সমর্থক আরিফ মাদবর ও তাহার ৭/৮ জন সহযোগী মারধর করে এবং পোস্টার ছিড়ে ফেলে। এ সময় ওই এলাকায় পুনরায় পোস্টার লাগাতে দেখলে প্রাণ নাশের হুমকি দেয় আরিফ মাদবর। মর্মে অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে এবং উক্ত পত্রিকার লিংক অত্র কমিটির হাতে এসেছে। 

এ ধরনের কর্মকাণ্ডে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা, ২০০৮ এর ৬ (ক) ও ৭ (২) বিধির স্পষ্ট লঙ্ঘন হয়েছে উল্লেখ করে আরিফ মাদবরকে আগামী ২ জানুয়ারি দুপুর ১২ টার সময় কার্যালয়ে হাজির হয়ে এবিষয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //