জামালপুর-৪

ভোট পুনঃগণনার দাবি নৌকা প্রার্থীর

জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী) আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটের হিসাবে গরমিলের অভিযোগ করে ভোট পুনঃগণনার দাবিও জানিয়েছেন নৌকার প্রার্থী মাহবুবুর রহমান হেলাল।

জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, ৭ জানুয়ারি রাতে প্রকাশিত মোট ৮৯টি কেন্দ্রের চূড়ান্ত ফলাফলে দেখানো হয়েছে, ট্রাক প্রতীকের স্বতত্র প্রার্থী মো. আবদুর রশীদ ৫০ হাজার ৬৭৮ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্ধী আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান হেলাল ৪৭ হাজার ৬৩৮ ভোট পেয়েছেন। তৃতীয় অবস্থানে স্বতন্ত্র প্রার্থী ডা. মুরাদ হাসান ঈগল প্রতীকে পেয়েছেন ৩৭ হাজার ৪৩৩ ভোট। এছাড়া বিএনএফ’র তারিখ মাহাদী টেলিভিশন প্রতীকে ৫১৩ ভোট ও জাতীয় পার্টির মো. আবুল কালাম আজাদ লাঙ্গল প্রতীকে ৪০০ ভোট। কিন্তু গড়মিল দেখা যায়, তৃণমূল বিএনপির মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম সোনালী আঁশ ও জাসদের মো. গোলাম মোস্তফা জিন্নাহর ‘মশাল’ প্রতীকের ফলাফলে।

রিটার্নিং কর্মকর্তার ফলাফল সংগ্রহ ও পরিবেশন কেন্দ্র থেকে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. শফিউর রহমান স্বাক্ষরিত বার্তা প্রেরণ সিটে দেখা যায়, তৃণমুল বিএনপির মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম সোনালী আঁশ প্রতীকে ১২৯ ভোট এবং জাসদের মো. গোলাম মোস্তফা জিন্নাহ মশাল প্রতীকে ৩১৬ ভোট পেয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু ৪৮ নং কেন্দ্রে ভাটারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা মো. মাহমুদুল হক স্বাক্ষরিত সহকারী রিটানিং কর্মকর্তা বরাবর পাঠানো ভোট গণনার বিবরণী সিটে তৃণমুল বিএনপির মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম সোনালী আঁশ প্রতীকে ৭১৬ ভোট যা রিটার্নিং কর্মকর্তার মোট ফলাফল থেকে মাত্র একটি কেন্দ্রেই ৫৮৭ ভোট বেশি এবং জাসদের মো. গোলাম মোস্তফা জিন্নাহ মশাল প্রতীকে ৬৫৪ ভোট, যা রিটার্নিং কর্মকর্তার মোট ফলাফল থেকে মাত্র একটি কেন্দ্রেই ৩৩৮ ভোট বেশি উল্লেখ করা হয়। এছাড়াও এই কেন্দ্রে মোট ভোট কাস্টিং দেখানো হয়েছে ১ হাজার ৫৬৮ ভোট। বাতিলকৃত ভোটসহ মোট ভোট হওয়ার কথা ছিল ৩ হাজার ১৫১ ভোট। এই কেন্দ্রে মোট ভোট ৩ হাজার ২২২।

এই আসনের আওয়ামী লীগ মনোনিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান ভোট জালিয়াতির মাধ্যমে ফলাফল ঘোষণার অভিযোগ করে বলেন, ভোটের দিন নৌকার এজেন্টদের কেন্দ্রেই মারধরা করা হয়েছে। প্রশাসনিকভাবে বিভিন্ন কেন্দ্রের ভোট গণনার ফলাফল সিটে কাট-ছাট ও নয়-ছয় করে নৌকাকে পরাজিত করা হয়। ইউএনওসহ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা তাকে কয়েকটি ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেয়নি, ফোন করে হুমকি দেন। আমি এ আসনে পুনঃভোট গ্রহণ বা পুনঃভোট গণনার দাবি জানায়। 

এ ব্যাপারে ভাটারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা পোগলদিঘা ডিগ্রি কলেজের সহকারি অধ্যাপক মো. মাহমুদুল হক বলেন, এমন ভুল হওয়ার কথা নয়। রেজাল্ট সিট না দেখে কিছু বলতে পারছি না। তবে বাহির থেকে সংগ্রহকৃত ফলাফল সিটে কাটছাঁট হতে পারে। 

সহকারী রিটানিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তার বলেন, প্রিজাইডিং কর্মকর্তা যে ফলাফলের সিট আমাদের কাছে দিয়েছে সেই ফলাফলই ঘোষণা করা হয়েছে। সেখানে হয়তো প্রিন্টিং মিসটেক হতে পারে, তবে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এটা ভাল বলতে পারবেন।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শানিয়াজ্জামান তালুকদার বলেন, আমাদের এখানে যে রেজাল্ট সিট আছে সেটাই সঠিক। তার নিকট রক্ষিত ফলাফলে সোনালী আঁশ প্রতীকের শূন্য ভোট এবং মশাল প্রতীকের দুই ভোট পেয়েছেন বলেও তিনি জানান। বাকি সব ফলাফল ভুয়া বলেও উল্লেখ করেন।  

জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. শফিউর রহমান বলেন, এ হিসাবটা সঠিক নয়, তবে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে ফাইনাল রেজাল্ট সিট আছে সেখান থেকে এ বিষয় জানা যাবে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //