লালমনিরহাটে টানা ৬ দিনের শৈত্যপ্রবাহে স্থবির জনজীবন

গত ৬ দিনের টানা শৈত্যপ্রবাহে লালমনিরহাটের জনজীবনে স্থবিরতা নেমে এসেছে। দিনে রাতে প্রায় সমপরিমাণে শীত অনুভূত হচ্ছে। গত ৮ জানুয়ারি থেকে মিলছে না সূর্যের দেখা।

আজ শনিবার (১৩জানয়ারি) জেলার তাপমাত্রা সর্বনিম্ন ১১.০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

হিমেল হাওয়া ও ঘন কুয়াশায় লালমনিরহাটসহ উত্তরাঞ্চলে শীতের প্রকোপ বেড়েছে। দিনভর থাকে হিমেল হওয়া। সন্ধ্যা না নামতেই হিমেল হাওয়ার সাথে শুরু হয় কুয়াশা। রাত যত গভীর হয় কুয়াশার মাত্রা বেড়ে যায়। রাতভর বৃষ্টির মতো পড়ে কুয়াশা। চলে সকাল ৯টা পর্যন্ত। পরে কুয়াশা কমলেও অব্যাহত হিমেল হাওয়ায় কমে না শীতের প্রকোপ।

গ্রামাঞ্চলে শীতের প্রকোপ আরও বেশি থাকায় কৃষকরা ক্ষেত খামারে কাজ করতে পরছে না, গবাদি পশু নিয়ে পড়ছেন বিপাকে। বেশি দুর্ভোগে আছেন তিস্তা ও ধরলা চরাঞ্চলের খেটে খাওয়া মানুষজন। শ্রমজীবীরা তীব্র হিমেল হাওয়ায় কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। কাজ করতে না পারায় অর্থ কষ্টে পড়েছে চরাঞ্চলের মানুষ।

শীতে শিশু ও বয়োবৃদ্ধ মানুষজনের ঠান্ডাজনিত সর্দি, কাশি ও হাঁপানি রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়ে গেছে। জেলার ৫ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ জেলা সদর হাসপাতালে বেড়েছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। 

জেলার বিভিন্নস্থান ঘুরে দেখা যায়, চরাঞ্চলসহ নদী তীরবর্তী এলাকা জুড়ে নেমে এসেছে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ। কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে জনপদ। 

লালমনিরহাটের খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের তিস্তা চরের রহিম মিয়া জানান, আমরা খেটে খাওয়া মানুষ, প্রতিদিন কাজ না করলে আমাদের সংসার চলে না। গত কয়েকদিন যাবত ঘন কুয়াশা ও প্রচণ্ড ঠান্ডা বাতাসে আমরা কাজে যোগ দিতে পারছি না।

সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নের তিস্তা চরের বাসিন্দা আব্দুর রশিদ জানান, রাতে বৃষ্টির মতো পরে কুয়াশা। দিনের বেলাতেও কুয়াশায় দুই চোখে কিছু দেখা যায় না। কুয়াশার সাথে শির শির হিমেল হাওয়ায় প্রচণ্ড শীত পড়ছে। শীতে নষ্ট হচ্ছে আলু ক্ষেত ও বোরো বীজতলা।

রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, শনিবার সকাল থেকে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১.০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শৈত্য প্রবাহ আরো কয়েকদিন থাকতে পারে বলেও তিনি জানান।

লালমনিরহাট সিভিল সার্জন ডা. নির্মলেন্দু রায় জানান, ঘন কুয়াশা তীব্র শীতের কারণে কয়েকদিন ধরে হাসপাতালগুলোতে সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্ট জনিত রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে। আমরা সেবা দিচ্ছি।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ জানান, জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন বিভিন্ন স্থানে শীতার্ত মানুষের মাঝে বরাদ্দকৃত ২৪হাজার পিচ কম্বল বিতরণ অব্যাহত রেখেছেন। সম্প্রতি আরো ২হাজার পিচ কম্বল এসেছে বলেও তিনি জানান।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //