আশ্রয়শিবির থেকে এনে রোহিঙ্গা নারীর জয়পুরহাটে বিয়ে

জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার লকইর গ্রামের আয়নাল হোসেন নামে এক যুবকের সাথে কক্সবাজারের উখিয়া আশ্রয় শিবিরের এক রোহিঙ্গা নারীর বিয়ে হয়েছে। 

আইন অনুযায়ী, বাংলাদেশের কোনো স্থায়ী বাসিন্দা রোহিঙ্গা নারীকে বিয়ে করতে পারবে না। অথচ গত বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) রাতে তারা গোপনে উপজেলার বানদীঘি গ্রামে মামুনুর রশিদের বাড়িতে এ বিয়ে করেন। এরপর থেকে রোহিঙ্গা নারী তার স্বামীর বাড়ি লকইর গ্রামে বসবাস করছেন।

পাত্র-পাত্রীদের সংক্ষিপ্ত পরিচয় হলো- পাত্র আয়নাল হোসেন জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার লকইর গ্রামের আব্দুল মোমেনের ছেলে ও পাত্রী  কক্সবাজার উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আয়েশা বেগমের মেয়ে রুমা আক্তার।

সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, প্রায় বছরখানেক আগে একই উপজেলার বানদীঘি গ্রামের বাসিন্দা হারুনুর রশিদ ও সবুজ মিয়া ঘটনাক্রমে চলে যান কক্সবাজারে। সেখানে পরিচয় হয় রুমার মা রোহিঙ্গা নারী আয়েশা বেগমের সাথে। সে সময় আয়েশা বেগম তার মেয়ে রুমার বিয়ে নিয়ে উৎকন্ঠার কথা বলেন হারুনুর রশিদ ও সবুজ মিয়ার কাছে। সবুজ মিয়া তার ছেলের সাথে রুমার বিয়ে দেওয়ার ওয়াদা করে যৌতুক হিসেবে আগাম সাড়ে ৩ লাখ টাকা নেন। এরপর টাকা নিয়ে সবুজ মিয়া সেখান থেকে পালিয়ে যান।

গত ৯ জানুয়ারি আয়েশা বেগম মেয়ে রুমাকে নিয়ে তাদের সঙ্গে বানদীঘি গ্রামে আসেন ও হারুনুর রশিদের বাড়িতে ওঠেন। এরপর টাকা নিয়ে সবুজ মিয়া সেখান থেকে পালিয়ে যান। অনেক খোঁজাখুঁজি করে তাকে না পেয়ে বিপদে পড়েন হারুনুর রশিদ। 

একপর্যায়ে সবুজকে না পেয়ে হারুন আয়েশা বেগম ও তার মেয়ে রুমাকে একই গ্রামে তার ছোট ভাই মামুনুর রশিদের বাড়িতে রাখেন এবং কাবিনের সময় জন্ম সনদের প্রয়োজন তাই পাশ্ববর্তী গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থেকে রোহিঙ্গা নারী রুমার নামে ভুয়া জন্মসনদ তৈরি করেন। এরপর একই উপজেলার পুনট ইউনিয়নের লকইর গ্রামে তার ফুফাত ভাই আব্দুল মোমেনের ছেলে আয়নাল হোসেনের সঙ্গে বিয়ে দেন।  

আয়েশা বেগম বলেন, আমরা বড় অসহায় মানুষ। বিয়ে ভেঙ্গে গেলে মেয়েটিকে নিয়ে কোথায় যাব, একটু দয়া করেন।

রুমা ও আয়নাল হোসেন বলেন, আমাদের কি অপরাধ? আমার মত আরও ৩/৪ জন রোহিঙ্গা মেয়ের বিয়ে হয়েছে এই জয়পুরহাটে। আমরা সংসার করতে চাই।

কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওয়াসিম আল বারী ঘটানার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, জরুরি সেবা ৯৯৯ থেকে ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। সেখানে পুলিশ পৌছার আগে বিয়ের কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। মেয়েটি রোহিঙ্গা কি না তা পুলিশের জানা নেই।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //