তরুণ উদ্যোক্তার কুলবাগান পরিদর্শনে জেলা প্রশাসক

কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার বারুইপাড়া ইউনিয়নে কেউপুর গ্রামে তরুণ উদ্যোক্তা আবু সাইদের কুল বাগান পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক মো. এহেতেশাম রেজা।

গতকাল সোমবার (১৫ জানুয়ারি) বিকালে এই কৃষি উদ্যোক্তার ফলের বাগান পরিদর্শন করেন তিনি।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, মিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জহুরুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) হারুন অর রশিদ, উপজেলা কৃষি অফিসার আবদুল্লাহ আল মামুন, দিশা কুষ্টিয়ার টেকনিক্যাল অফিসার কৃষিবিদ মো. জিল্লুর রহমান, দিশা সংস্থার কৃষি অফিসার এনামুল হক, সাংবাদিক সুমন মাহমুদ ও এসএম জামালসহ উপ-সহকারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

জানা গেছে, আবু সাইদ একজন সফল কৃষি উদ্যোক্তা। উপজেলার শিমুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা তিনি।

অন্যের সাথে অংশীদারত্বের সাথে পেয়ারা বাগান গড়ে তোলেন। তারপর থেকে ইউটিউবে কুল চাষে অনেকের সফলতা দেখে কৃষি অফিস থেকে পরামর্শ নিয়ে তিনি চুয়াডাঙ্গা থেকে ভারত সুন্দরী কুলের চারা এনে পাশের গ্রামে ৭ বিঘা জমি লিজ নিয়ে শুরু করেন এই কুলের বাগান।

আবু সাইদ বলেন, বাগানে প্রায় সাতশত গাছ রয়েছে। বাগান করতে ব্যয় হয়েছে প্রায় তিন লাখ টাকা। বাগান তৈরির শুরু থেকে আমি নিজে শ্রমিকদের নিয়ে বাগান পরিচর্যার কাজ করে যাচ্ছি। গাছের যত্ন নেওয়া এবং সঠিক সময় জৈব ও গোবর সারসহ কিছু রাসায়নিক সারও গাছের গোরায় দূরত্ব বজায় রেখে দেওয়া হয়েছে। গাছে যাতে কোনো ধরনের প্রাকৃতিক বালাই আক্রান্ত করতে না পারে এ জন্য কৃষি বিভাগের পরামর্শে জীবাণুমুক্ত ট্যাবলেট প্রত্যেক গাছ থেকে ১ ফুট ৬ ইঞ্চি দিয়ে পুতে দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, প্রথমবারের মতো বাগান থেকে বরই সংগ্রহ শুরু করেছি। ইতিমধ্যে প্রায় দেড়লাখ টাকার বিক্রি হয়েছে। এখনো প্রায় চার লাখ টাকার বিক্রি হবে বলে আশা করছি। এতে করে আমার সব খরচ বাদ দিয়ে নিট আড়াই লাখ টাকা লাভ থাকবে। উপজেলা কৃষি অফিসসহ দিশা সমন্বিত কৃষি বিভাগের কারিগরি সহায়তায় বাগান করতে নানা ধরনের সহযোগিতা করেছে।

মিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও জহুরুল ইসলাম বলেন, উপযুক্ত যত্ন ও পরিচর্যার দ্বারাই একটি কুল গাছ বা কুল বাগান থেকে আশানুরূপ ভালো গুণগত মানসম্পন্ন ও অধিক ফলন আশা করা যায়। কুল বাগানের মধ্যে অন্য ফসল আবাদ করেও আলাদা মুনাফা অর্জন করা সম্ভব।

বাগান ঘুরে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করে জেলা প্রশাসক মো. এহেতেশাম রেজা জানান, দিন দিন আধুনিক কৃষি বিস্তার লাভ করায় এ অঞ্চলে ফলদ বাগানের সংখ্যা বাড়ছেই। কুষ্টিয়া জেলার আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এসব উদ্যোক্তাদের কার্যক্রম ও প্রচেষ্টা আমরা সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে চাই, যাতে করে অন্যরাও তা দেখে উৎসাহিত হয় এবং এ ধরনের উদ্যোগে এগিয়ে আসে।

তিনি আরো বলেন, অনেক উন্নত জাতের সুস্বাদু কুল চাষ হচ্ছে এ জেলায়। কুল বাগান করে লাভবান হওয়ায় এ জেলার মানুষের পুষ্টিও বাড়ছে।

মিরপুর উপজেলা কৃষি অফিসার আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, জমিতে এবারে বিভিন্ন জাতের কুলের বাগান রয়েছে। বাগানগুলো সঠিক পরিচর্যার জন্য কৃষি বিভাগের মাঠকর্মীরা পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে। ৩০টি বরই বাগান আছে। আবু সাইদ আমাদের পরামর্শ নিয়ে উন্নত জাতের ভারত সুন্দরী বরই বাগান করেছেন। বাগানে প্রচুর পরিমাণে কুল ধরেছে। বাগানটি দেখে অনেকেই বাগান তৈরির জন্য আমাদের কাছে পরামর্শ নিচ্ছেন। আশাকরি বাগান মালিক কাঙ্ক্ষিত ফল পাবেন।

দিশা কুষ্টিয়ার টেকনিক্যাল অফিসার কৃষিবিদ মো. জিল্লুর রহমান বলেন, আমরা পিকেএসএফের সহযোগিতায় তামাক চাষ কমাতে ফলদ বাগান গড়ে তুলতে উদ্বুদ্ধকরণের মাধ্যমে দিশা সংস্থা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। যার ফলশ্রুতিতে ফল বাগান গড়ে তোলার মধ্য দিয়ে অনেক তরুণ উদ্যোক্তারা এগিয়ে আসছে। তাদের সার্বিক সহযোগিতার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //