চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নামলেও বন্ধ হয়নি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নামলেও বন্ধ রাখা হয়নি কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। জেলা শিক্ষা অফিস থেকে এ ধরনের কোনো পত্র না পাওয়ায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখেননি প্রতিষ্ঠান প্রধানরা। 

আজ বুধবার (১৬ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৯.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। 

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বলেছেন, আমাদের হাতে যে পরিপত্র আছে, সেটাতে স্পষ্ট করে বলা আছে, সবোর্চ্চ তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নামলে প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে।

বুধবার জেলা সদরের হাটকালুগঞ্জে অবস্থিত চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা যায়, চুয়াডাঙ্গায় থেমে থেমে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ প্রবাহিত হচ্ছে। গত শুক্রবার ৯.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, শনিবার ৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, রবিবার ৯.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল। তাপমাত্রা সোমবার ও মঙ্গলবার কিছুটা বেড়ে ১০.৯ ও ১২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলেও বুধবার তা আবার নেমে আসে ৯.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। 

চুয়াডাঙ্গায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের বেড়েছে অস্বসস্তি। ঠান্ডায় জনজীবন বিপর্যস্ত। বিশেষ কাজ ছাড়া ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না সাধারণ মানুষ। তবে বিপাকে পড়েছেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কমলমতি শিক্ষার্থীরা। সরকারি নির্দেশনা দেখে স্বস্তি পেলেও নির্দেশনার অস্পষ্টতা ও প্রতিষ্ঠান প্রধানদের কাছে না পৌঁছানোর কারণে চুয়াডাঙ্গার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা ছিল বুধবারও। শৈত্য প্রবাহ ও তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নামলে স্কুল-কলেজ ও প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ রাখার নির্দেশনা মন্ত্রণালয় দিলেও এ নির্দেশনা মানা হয়নি চুয়াডাঙ্গা জেলায়। শিক্ষার্থীদের কষ্ট বুঝতে পেরেও জেলা শিক্ষা অফিস থেকে কোনো নির্দেশনা না দেওয়ায় প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখেননি বলে জানিয়েছেন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা। 

চুয়াডাঙ্গা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নূর হোসেন বলেন, এ ধরনের নির্দেশনার কথা শুনেছি। তবে জেলা শিক্ষা অফিসার থেকে  এখনো কোনো নির্দেশনা দেয়নি বলে বুধবারও আমার প্রতিষ্ঠান খোলা ছিল। তবে আমাদের একটি হোয়্যাটস অ্যাপ গ্রুপ আছে, সেখানে বন্ধ রাখার জন্য বলা হয়েছে। ভাবছি, কাল থেকে তাপমাত্রা দেখে বন্ধ রাখবো।

চুয়াডাঙ্গা ভিক্টোরিয়া জুবিলি (ভি.জে) সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিক সেখ সফিয়ার রহমান বলেন, আমাদের কাছে এ ধরনের কোনো নির্দেশনা জেলা শিক্ষা অফিস দেয়নি। নির্দেশনা পেলে বাস্তবায়ন করা হবে।

চুয়াডাঙ্গা আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা বিলকিস জাহান বলেন, টেলিভিশনে নির্দেশনার ব্যাপারে দেখেছিলাম। তবে জেলা শিক্ষা অফিস এ ধরনের কোনো নির্দেশনা না দেওয়ায় বিদ্যালয় চালু ছিল। শিক্ষকদের সাথে পরামর্শ করে দুপুর ১টার দিকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে। 

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার তবিবুর রহমান বলেন, আমাদের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে যে নির্দেশনা দিয়েছে তাতে সবোর্চ্চ তাপমাত্রার কথা উল্লেখ আছে। স্পষ্ট করে বলা আছে, সবোর্চ্চ তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামলে সাময়িক বন্ধের সিদ্ধান্ত হতে পারে। তবে আমি খোঁজ নিয়েছি, চুয়াডাঙ্গার সবোর্চ্চ তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নামেনি। সেজন্য এ ধরনের কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি।  চুয়াডাঙ্গা জেলা শিক্ষা অফিসার মো. আতাউর রহমান বলেন, যারা এ আদেশ মানছে না, তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উল্লেখ্য, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিদ্যালয়-২ শাখার উপ-সচিব মোহাম্মদ কবির উদ্দীন জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করে চলমান শৈত্যপ্রবাহে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একাডেমিক কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ রাখা সংক্রান্ত একটি অফিস আদেশ দেন। যা আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //