গাইবান্ধার ডিসিকে প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন, সড়ক অবরোধ

অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ এনে গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক (ডিসি) কাজী নাহিদ রসুলকে প্রত্যাহারের দাবিতে আজ সোমবার মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়েছে।

আজ সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টা থেকে ১টা পযর্ন্ত জেলা শহরের ডিবি রোডের নাট্য সংস্থার সামনে গাইবান্ধা সচেতন নাগরিক ও সুশীল সমাজের ব্যানারে ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধন পালিত হয়। 

পরে আন্দোলনকারীরা শহরের ব্যস্ততম ডিবি রোডের গানাসাস মার্কেটের সামনে কিছু সময়ের জন্য সড়ক অবরোধ করে রাখেন। এসময় উভয় পাশে কিছুসময়ের জন্য যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। এতে আইনজীবি, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, সচেতন নাগরিক ও বিভিন্ন সংগঠনের দেড় শতাধিক নেতৃবৃন্দ অংশ নেন।

গাইবান্ধা জেলা প্রশাসকের বদলির দাবি তুলে বক্তারা বলেন, গাইবান্ধায় যোগদানের পর থেকে জেলা প্রশাসক কাজী নাহিদ রসুল স্থানীয় সুশীল সমাজ, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে আসছেন। নানা প্রশাসনিক কাজে তার কক্ষে দেখা করতে গেলে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। দর্শনার্থীদের তার এপিএস (সহকারি কমিশনার) এর কাছে স্লিপের মাধ্যমে সাক্ষাতের কারণ উল্লেখ করতে হয়। স্লিপ পাঠিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করার পরও তার সাথে স্বাক্ষাতের অনুমতি পাওয়া যায় না। সপ্তাহে একদিন গণশুনানি করা বাধ্যতামূলক। তিনি যোগদানের পর থেকে নিয়মিত গণশুনানি হচ্ছে না।

বর্তমানে জেলায় শতাধিক অবৈধ ইটভাটা চললেও অজ্ঞাত কারণে দুই-চারটি ছাড়া বেশিরভাগ ভাটা মালিকদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। জেলা প্রশাসকের আচরণের কারণে তার কার্যালয়ের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারির আচরণও নেতিবাচক পরিলক্ষিত হচ্ছে। জেলা প্রশাসকের আচরণের কারণে সরকার ও জনপ্রশাসনের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। তাই তাকে বদলি করা গাইবান্ধার মানুষের কাছে সময়ের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তারা আরও বলেন, অবিলম্বে জেলা প্রশাসককে বদলি করতে হবে। না হলে নানা কর্মসূচিসহ বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

মানববন্ধনে সাংবাদিক নেতারা বলেন, বিগত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেও জেলা প্রশাসক সাংবাদিকদের নির্বাচনী তথ্য প্রদানে অসহযোগিতা করেন। এ সব ঘটনায় গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসক কাজী নাহিদ রসুলকে বদলির দাবি জানিয়ে দেশের প্রথম সারির জাতীয় পত্রিকা, টেলিভিশন চ্যানেল, স্থানীয় পত্রিকা ও অনলাইন মিডিয়ার ২১ জন সাংবাদিক প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে আবেদন জানান। যা প্রতিবেদন আকারে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এছাড়া একই দাবিতে গত ৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী, ১১ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ সচিব এবং জনপ্রশাসন সচিব বরাবারে মুক্তিযোদ্ধা, আইনজীবি, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, সচেতন নাগরিক ও বিভিন্ন সংগঠনের ৪২ নেতৃবৃন্দ স্বাক্ষরিত অভিযোগপত্র পাঠানো হয়। তাতে কোনো কাজ হয়নি।

মানববন্ধন থেকে সাংবাদিকরা জেলা প্রশাসকের সংবাদ প্রচার না করার ঘোষণা দেন। তারা বলেন, জেলা প্রশাসকের বদলি না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

এতে সভাপতিত্ব করেন সিনিয়র সাংবাদিক সিদ্দিক আলম দয়াল। বক্তব্য দেন, বাংলাদেশ ওয়াকার্স পার্টির পলিট বুরোর সদস্য আমিনুল ইসলাম গোলাপ, জাতীয় শ্রমিক জোটের গাইবান্ধা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক নুর মোহাম্মদ বাবু, বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নিলুফার ইয়াসমিন শিল্পী, সিনিয়র সাংবাদিক সৈয়দ নুরুল আলম জাহাঙ্গীর, শামীম আল সাম্য, কায়ছার প্লাবন, বিপ্লব ইসলাম, জাভেদ হোসেন, মিলন মন্ডল, ফারহান শেখ, মানিক সাহা, রফিক খন্দকার ও ইমরান মাসুদ প্রমুখ।  

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //