শরীয়তপুরে চিকিৎসকের অবহেলায় শিশু মৃত্যুর অভিযোগ

শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় মুসাফির নামের ৪ মাস বয়সী এক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।

গতকাল বুধবার (১৩ মার্চ) রাত ৮ টার দিকে সদর হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। মুসাফির শরীয়তপুর পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের রাজিব শেখ ও রুবিনা দম্পতির ছেলে।

স্বজন ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত দুই দিন ধরে পেটে গ্যাস ও ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা নিয়ে ভুগছিল শিশু মুসাফির। বুধবার দুপুরে শিশুটিকে নিয়ে সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন মা রুবিনা বেগম। এসময় হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকের দায়িত্ব পালন করছিলেন চিকিৎসক শরীফ-উর রহমান। শিশুটিকে ভর্তি করা হলে তরল জাতীয় একটি ঔষধ লিখে দেন তিনি। এরপর ঔষধটি খাওয়ানোর পর আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে শিশুটি। অবস্থা খারাপ দেখে মা রুবিনা বেগম ও স্বজনরা বেশ কয়েকবার চিকিৎসককে ডেকে আনতে যান। তবে চিকিৎসক শরীফ-উর রহমান বিষয়টি আমলে না নিয়ে চিকিৎসা সেবা দিতে আসেননি। এক পর্যায়ে কর্তব্যরত স্টাফ নার্স সীমা বৈদ্য বাধ্য হয়ে চিকিৎসকে ডাকতে গেলেও তিনি শিশুটির কোনো চিকিৎসা দিতে আসেননি। উপরন্তু শিশুটির অক্সিজেন মাস্ক খুলে তার কাছে নিয়ে যেতে বলেন। এরপর রাত ৮ টার দিকে মারা যান শিশুটি।

শিশুটির মা রুবিনা বেগম বলেন, আমার বাবু যখন অনেক অসুস্থ হয়ে পড়ে আমি নিচে অনেকবার দৌড়ে ডাক্তারকে ডাকতে যাই। তিনি আমাকে ধমক দিয়ে উপরে পাঠিয়ে দিয়ে বলে জান আমি আসছি। কিন্তু ডাক্তার আর আসেনি। আজ যদি আমার মুসাফির চিকিৎসা দেওয়া হতো তাহলে বাবুটা বেঁচে থাকতো।

বাবা রাজিব শেখ বলেন, ডাক্তারের অবহেলায় আমার বাচ্চা মারা গেছে। তাকে অনেকবার অনুরোধ করেছি বাবুকে দেখে যেতে। ওনি আসেননি। আজ আমি ডাক্তারের জন্য সন্তানহারা হয়ে গেলাম। আমার বাচ্চার মতো আর কারো বাচ্চা যেন এভাবে চিকিৎসকের অবহেলায় মারা না যায় আমাদের এটাই দাবি।

চিকিৎসকের অবহেলার বিষয়টি হাসপাতালে কর্তব্যরত সিনিয়র স্টাফ নার্স সীমা বৈদ্য বলেন, বাচ্চাকে প্রথমে আমি অক্সিজেন লাগিয়ে দেই। এরপর আমাকে বেশ কয়েকবার রোগীর লোক ডাকলে আমি বাচ্চাটাকে দেখে আসি। কিছুক্ষণ পর বাচ্চাটার শ্বাসকষ্ট শুরু হলে ডাক্তারকে ডাকতে আমার ওয়ার্ড বয়কে দুইবার নিচে পাঠিয়েছি। যখন বাচ্চাটির খারাপ অবস্থা ছিল তখন ডাক্তার আসলে হয়তো বাচ্চাটা বেঁচে থাকতো।

এ বিষয়ে সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. শরীফ-উর রহমানকে মুঠোফোনে কল দিলে ঘটনার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, এমন অভিযোগ সত্য নয়। কেউ বাচ্চা নিয়ে জরুরি বিভাগে আসেনি।

এ বিষয়ে সদর হাসপাতালে আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মিতু আক্তার বলেন, আমি ইতোমধ্যে এক শিশুর মৃত্যুর খবর পেয়েছি। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখবো। যদি ওই চিকিৎসকের অবহেলায় শিশুর মৃত্যু হয়, তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //