গোপালগঞ্জে ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ

গোপালগঞ্জ শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসকদের অবহেলা ও ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বিচার দাবিতে হাসপাতালে গেটে অবস্থান নিয়েছে বিক্ষোভ করে হরিজন সম্প্রদায়ের দুই শতাধিক সদস্য। তাদের অভিযোগ এ হাসপাতালে রোগী নিয়ে আসলে ঠিক মত চিকিৎসা পাওয়া যায় না। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, ঈদের কারণে ছুটি থাকলেও অন্য চিকিৎসকরা চিকিৎসা দিয়েছেন।

মারা যাওয়া খোকন জমাদ্দারের শ্বশুর রবিলাল জমাদ্দার বলেন, বুধবার রাত ১২ টার দিকে হরিজন সম্প্রদায়ের সাধারণ সম্পাদক খোকন জমাদ্দার পড়ে গিয়ে অজ্ঞান হয়ে যান। এরপর তাকে চিকিৎসার জন্য প্রথমে গোপালগঞ্জ ২৫০-শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু সেখানে চিকিৎসা না দিয়ে রাতেই শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে সেখানে ভর্তি করা হয়। কিন্তু রোগীর অবস্থা খারাপের দিকে গেলে চিকিৎসার জন্য ডাক্তারদের ডেকেও পাননি তারা। এমনকি অজ্ঞান থাকার পরও তাকে ঘুমের ইনজেকশন দেওয়া হয়। এরপর তার অবস্থার আরো অবনতি হলে তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাবার জন্য ছাড়পত্র চাইলে দেওয়া হয়নি। পরে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

এদিকে দুপর ১টার দিকে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করলে স্বজন ও সম্প্রদায়ের লোকজন বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। এ ঘটনায় দোষীদের শাস্তি ও বিচারের দাবিতে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গেট অবরুদ্ধ করে সেখানে অবস্থান নিয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা আন্দোলন করে। এসময় হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা বন্ধ হয়ে যায়। পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বেলা ৩টার দিকে তারা অবস্থান কর্মসূচি উঠিয়ে নেন।

মারা যাওয়া খোকন জমাদ্দারের ভাতিজী বলেন, আমার কাকা খোকন জমাদ্দার বাথরুম থেকে বের হওয়ার সময় পড়ে যান। পরে তাকে গোপালগঞ্জ ২৫০-শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে সেখান থেকে শেখ সায়রা খাতুন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু রাত থেকে আজ দুপুর ১২টা পর্যন্ত আমার কাকা কোন চিকিৎসা পায়নি। যে কারণে আমার কাকার মৃত্যু হয়েছে।

গোপালগঞ্জ পৌরসভার কাউন্সিলর মো. আল আমিন মিয়া বলেন, সদর হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সাধারণ রোগীরা সেবাতো পান না উল্টো রোগীদের সঙ্গে খারাপ ব্যাপার করা হয়। 

এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক নিয়াজ মোহাম্মদ বলেন, রোগীর চিকিৎসায় কোন ত্রুটি হয়নি। ঈদের সময় চিকিৎসক সংকট ছিল এটা ঠিক। রাতে সিনিয়র চিকিৎসক ডিউটিতে ছিল। তিনি তার সাধ্যমত চিকিৎসা দিয়েছেন।

এ ঘটনায় তিনি দুঃখ প্রকাশ করে আরো বলেন, আমি একদিনের জন্য ছুটিতে আছি। আগামীকাল ফিরে এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //