ঈদের ছুটিতে বেনাপোল দিয়ে ভারতে গেল ২৬ হাজার যাত্রী

ঈদুল ফিতর, বাংলা নববর্ষ ও সাপ্তাহিক ছুটির কারণে গত বুধবার থেকে আজ রবিবার (১৪ এপ্রিল) পর্যন্ত টানা পাঁচ দিনের ছুটিতে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত ভ্রমণে পাসপোর্টধারী যাত্রী যাতায়াত বেড়েছে। চারদিনে ২৬ হাজার ৩৫১ জন পাসপোর্টধারী যাত্রী যাতায়াত করেছেন।

আজ রবিবার (১৪ এপ্রিল) সকালে বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান বিশ্বাস জানান, গত চারদিনে বেনাপোল ইমিগ্রেশন দিয়ে ২৬ হাজার ৩৫১ জন যাত্রী যাতায়াত করেছেন। এর মধ্যে ঈদের আগের দিন ১০ এপ্রিল ৬ হাজার আটজন, ঈদের দিন ১১ এপ্রিল ৪ হাজার ৭১৩ জন, ১২ এপ্রিল ৭ হাজার ৮৫৪ জন, ১৩ এপ্রিল ৪ হাজার ৭৭৬ জন, আজ সকাল ১০টা পর্যন্ত ৩ হাজার যাত্রী যাতায়াত করেছেন।

ভারতে চিকিৎসা, ব্যবসা, দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ ও স্বজনদের বাড়ি বেড়াতে যাচ্ছেন অনেকে। আবার ভারত থেকে অনেকে আসছেন বাংলাদেশে। তবে এই যাতায়াতের ক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত সেবা না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেক যাত্রী।

জানা যায়, এবার ঈদুল ফিতর, বাংলা নববর্ষ ও সাপ্তাহিক ছুটি মিলে গত ১০ এপ্রিল থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত টানা ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানও সরকারি ছুটির সঙ্গে তাল মিলিয়ে বন্ধ রেখেছে। এতে লম্বা ছুটি পেয়ে চিকিৎসা, ব্যবসা, দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ ও স্বজনদের বাড়ি বেড়াতে অনেকে যাচ্ছেন ভারতে। আবার অনেকে আসছেন বাংলাদেশে। এতে করে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে যাত্রী যাতায়াত বেড়েছে। যাত্রীদের নিরাপত্তায় কাজ করছে বিভিন্ন প্রশাসনিক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

যাত্রীরা জানান, ভারত ভ্রমণে বাংলাদেশ সরকারকে এক হাজার ৫৫ টাকা ভ্রমণ ফি এবং ভিসা ফি বাবদ ভারতীয় দূতাবাসে দিতে হচ্ছে ৮৫০ টাকা। ভ্রমণের ক্ষেত্রে প্রতি বছর এ অর্থের পরিমাণ দুই দেশ বাড়ালেও সেবা বাড়ানোর দিকে তাদের কোনো নজর নেই। এতে নানান দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের। সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছাতে না পেরে ক্ষতির মুখে পড়ছেন পাসপোর্টধারীরা। তবে বাংলাদেশ অংশের কার্যক্রম দ্রুত শেষ হলেও ভারতীয় অংশে জনবল সংকটে পোহাতে হচ্ছে সীমাহীন দুর্ভোগ।

সবুজ নাসিম নামে এক পাসপোর্টধারী যাত্রী বলেন, ছুটি পেলেই আমি ভারতে বেড়াতে যাই। এবারো ঈদ উপলক্ষে ছুটি পেয়ে ভারতে যাচ্ছি। তবে কাঙ্ক্ষিত সেবা না পেয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দীর্ঘদিন এ অবস্থা বিরাজ করলেও সেবা বাড়ানোর উদ্যোগ নেই কর্তৃপক্ষের।

অরূপ কুমার নামে আর এক যাত্রী বলেন, আমি রাত ১১ টার দিকে ঢাকা থেকে বাসে উঠে রাত সাড়ে তিনটার সময় বেনাপোল পৌঁছেছি। সে থেকে চেকপোস্টের প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। সকাল সাড়ে ৬ টার সময় অফিস খোলার সাথে সাথে লাইন ভেঙ্গে টাকার বিনিময়ে অন্য যাত্রীদের আগে ঢোকাচ্ছেন এখানকার দায়িত্বে থাকা আনসার ও আর্মস ব্যাটালিয়নের সদস্যরা। কিছু বললে আরো ধমক দিচ্ছেন তারা। এটা কেমন দেশে বাস করছি আমরা। এদিকে কর্তৃপক্ষের নজর দেওয়া উচিত।

বেনাপোল আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি মহসিন মিলন বলেন, দেশের অন্যান্য বর্ডারের তুলনায় বেনাপোল বর্ডার দিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় প্রতিবছর বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে প্রায় ২০ লাখ পাসপোর্টধারী যাতায়াত করে থাকেন। ভ্রমণ কর বাবদ বাংলাদেশ সরকারের প্রায় দেড়শো কোটি টাকা ও ভিসা ফি বাবদ ভারত সরকারের ১৫০ কোটি টাকার বেশি আয় হয়। তবে কাঙ্ক্ষিত সেবা এ বর্ডার দিয়ে বাড়েনি।

বেনাপোল বন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) রেজাউল করিম জানান, যাত্রীসেবা বাড়াতে ইতোমধ্যে কলকাতায় দুদেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে বৈঠক হয়েছে। বেনাপোল-পেট্রোপোল নোম্যান্সল্যান্ডে যাত্রীদের দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার বিষয়ে সেখানে আলোচনা হয়েছে। যাত্রী দুর্ভোগ কমায়ে সেবার মান বাড়ানোর বিষয়ে ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //