গ্রীষ্মকালীন বাঁধাকপি

ভেঙে যাচ্ছে শীতকালীন সবজির মেয়াদের সীমারেখা। গ্রীষ্মের তীব্র দাবদাহের মধ্যেও শীতকালীন বাঁধাকপি চাষ হচ্ছে উত্তরাঞ্চলের জেলা গাইবান্ধায়।

এবারই প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে গ্রীষ্মকালীন বাঁধাকপির চাষ করেছেন কৃষক। এতে একদিকে কৃষক যেমন লাভবান হচ্ছেন, অন্যদিকে অর্থকরী ফসল হিসেবে এরই মধ্যে পরিচিত হয়ে উঠছে সবজিটি।

শীতের সময় অন্যতম সবজি বাঁধাকপি। কিন্তু শীত মৌসুম শেষ হয়ে গেলেও, বাজারে চাহিদা রয়েছে এর। ফলে ভরা গ্রীষ্মেও বাঁধাকপি চাষ করে চলেছেন গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের ভাসারপাড়া গ্রামের কৃষক বেলাল মিয়া। আর তাতে মুনাফা হচ্ছে বেশ ভালো। এ সময় বাজারে বাঁধাকপি পাওয়া যায় না বললেই চলে। কিন্তু চাহিদা থাকায় সেই বাজার ধরার লক্ষ্যেই বাঁধাকপি চাষ করছেন তিনি।

উন্নত ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে খরা সহিষ্ণু হাইব্রিড কপি চাষ করে ইতোমধ্যেই এলাকায় সাড়া ফেলে দিয়েছেন এই চাষি। স্থানীয় বাজার থেকে শুরু করে পৌঁছে যাচ্ছে দেশের অন্যান্য বড় বড় বাজারে। দিন দিন চাহিদা বাড়ছে অসময়ের এ বাঁধাকপির।

কৃষিবিদরা বলছেন, শীতকালে কপির ব্যাপক ফলন হওয়ার ফলে ভালো দাম মেলে না। তাই গ্রীষ্মকালে শীতকালীন ফসল বাঁধাকপির পরীক্ষামূলক চাষ শুরু করেছেন চাষিরা। অসময়ে কপি চাষ কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ হলেও উপযুক্ত পরিচর্যার মাধ্যমে অনেক বেশি লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আধুনিক কৃষি পদ্ধতি ব্যবহার করায় এখন সব ফসলেরই উৎপাদন বেড়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় গ্রীষ্মকালেও এখন বাঁধাকপির বাম্পার ফলন হচ্ছে। এ বিষয়ে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করছেন জেলা কৃষি বিভাগ।

মূলত ফসলের সময়ের পরিবর্তন করে চাষে আগ্রহ বাড়ানো হচ্ছে। এতে নতুনত্বের পাশাপাশি চাষিরা অধিক মুনাফা করতে পারবেন। অল্প খরচ ও স্বল্প সময়ে ভালো ফলন হওয়ার পাশাপাশি অধিক মুনাফা পাওয়ায় গাইবান্ধার অনেক চাষিই এখন গ্রীষ্মকালীন বাঁধাকপি চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। শীতকালীন সবজি গ্রীষ্মকালে চাষ করতে এবং তা বাণিজ্যিকীকরণ করতে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকেও কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতা ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। 

গাইবান্ধা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে , গত শীত মৌসুমে গাইবান্ধার সাতটি উপজেলায় প্রায় ৯০৯ হেক্টর জমিতে বাঁধাকপি চাষ হয়েছে। কিন্তু এ বছরই গ্রীষ্মকালীন পরীক্ষামূলক চাষ শুরু হয়েছে এ জেলায়। এরই মধ্যে কৃষক এ সবজি চাষ করে লাভবান হতে শিখে গেছেন।

বাঁধাকপি চাষি কৃষক বেলাল মিয়া জানান, তিনি গত আট-দশ বছর ধরে বিভিন্ন সবজি চাষ করেন। পাশাপাশি এবারই প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে প্রায় ২ বিঘা জমিতে কুইকার জাতের খরা সহিষ্ণু বাধাকপি চাষ করেন। তিন মাস পর ফলন পেতে শুরু করেন তিনি। আবাদের এসব বাধাকপি ইতোমধ্যে দুই দফায় বিক্রি করে ভালো মুনাফা অর্জন করেছেন।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //