বাঘাইছড়ির নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, সাজেকে আটকা পড়েছে শতাধিক পর্যটক

ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে ভারি বর্ষণে রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলায় উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সাতটি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে করে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন উপজেলার প্রায় ১৫-২০ হাজার মানুষ। এদিকে সকাল থেকে মারিশ্যা-বাঘাইহাট সড়কের বিভিন্নস্থানে ছোট-বড় পাহাড়ধস ও সড়কের পাশে গাছ পড়ে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ থাকলেও বিকাল থেকে যানচলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, টানা ও অতিভারি বর্ষণে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কাচালং নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় উপজেলা পৌরসভার ৩টি ওয়ার্ড মাস্টার পাড়া, মধ্যমপাড়া ও লাইল্ল্যাঘোনা এবং চারটি ইউনিয়নের মধ্যে সাজেক ইউনিয়নের বাঘাইহাট ও মাচালং, মারিশ্যা ইউনিয়নের বারোবিন্দুঘাট ও বঙ্গলতলী ইউনিয়নের করোঙ্গতলী গ্রামসহ মোট সাতটি গ্রামে প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। এছাড়া মারিশ্যা-বাঘাইহাট সড়কে মঙ্গলবার সকালে বেশ কিছু জায়গায় সড়কে ছোট বড় পাহাড় ধস ও গাছ পড়ে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ থাকলেও বিকালে সড়ক যোগাযোগ স্বাভাবিক করা হয়েছে।

বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিরীণ আক্তার জানান, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে আসা পাহাড়ি ঢলে বাঘাইছড়ি উপজেলায় ৩টি পৌর ওর্য়াড ও তিনটি ইউনিয়নের চারটি গ্রামসহ মোট ৭ গ্রামে প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বার বার মাইকিং করা হচ্ছে আশ্রয়কেন্দ্রে আসার জন্য। কিন্তু লোকজন নিজেদের ঘরবাড়ি ছাড়তে রাজি হচ্ছে না। সকালে মারিশ্যার সঙ্গে বাঘাইহাট সড়কের কয়েকটি স্থানে গাছ পড়ে এবং ছোট বড় পাহাড় ধসে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ থাকলেও বিকালে সড়ক যোগাযোগ স্বাভাবিক করা হয়েছে।

অন্যদিকে উপজেলার বাঘাইহাট এলাকায় ঢলের পানিতে সড়ক ডুবে সাজেকে সঙ্গে খাগড়াছড়ির সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। যে কারণে সাজেকে অবস্থান করা পর্যটকরাও গন্তব্যে ফিরে যেতে পারেননি। সাজেক কটেজ মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক রাহুল চাকমা জন জানিয়েছেন, বাঘাইহাট এলাকায় সড়কে পানি উঠে দুপাশের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। অনেকেই নৌকা দিয়ে রাস্তা পার হচ্ছেন। আগামীকাল (বুধবার) পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সাজেক ভ্যালিতে আটকা পড়া আনুমানিক ১২০ জন পর্যটক নিরাপদে ফিরতে পারবেন।

রবিবার থেকে টানা তিনদিন ধরে থেমে থেমে বৃষ্টিপাতের কারণে রাঙ্গামাটি জেলার বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় ও ভূমি ধসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সড়ক ও জনপথ (সওজ) রাঙ্গামাটি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ চাকমা জানান, ভারী বর্ষণে রাঙ্গামাটি-মহালছড়ি সড়কের বেতছড়ি এলাকায় সড়কের কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেটা মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া আর বড় ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। 

এদিকে টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পানির ঢলে বাঘাইছড়ির কাচালং নদী, বরকলের কর্ণফুলী নদী, জুরাছড়ির শিজক নদ ও বিলাইছড়ির রীংক্ষ্যং নদের পানি বাড়ছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //