বিদ্যুৎহীন বরিশালে ৮ লাখ গ্রাহক

ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে বরিশালে বিদ্যুৎ সরবরাহ ও টেলিযোগাযোগ–সেবা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গত রবিবার (২৭ মে) রাতে রেমালের তাণ্ডব শুরুর পর বরিশাল জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থায় বিঘ্ন ঘটে। সিটি এলাকার কোন কোন জায়গায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও আজ মঙ্গলবার (২৮ মে) দুপুর পর্যন্ত জেলায় তা পুনঃস্থাপন করা সম্ভব হয়নি। ফলে বরিশাল বিভাগের অন্তত আট লাখ গ্রাহক এখনো বিদ্যুৎহীন রয়েছেন।

প্রায় ৪৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকায় বিপর্যয়ে পড়েছে টেলিযোগাযোগ পরিষেবাও। মুঠোফোন ও ইন্টারনেট যোগাযোগ বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন কয়েক লাখ গ্রাহক। এতে ঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা যাচ্ছে না। সেই সঙ্গে স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না স্থানীয় বাসিন্দারা।

ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে বিদ্যুৎ–বিভ্রাটে বরিশালে ১০ হাজারের বেশি মোবাইল টাওয়ার বা বেজ ট্রান্সমিটার স্টেশন (বিটিএস) সেবা দিতে পারছে না। বিটিএস রেডিও সংকেতের মাধ্যমে মোবাইল ডিভাইসের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কল ও ইন্টারনেট সংযোগ দিয়ে থাকে।

টেলিকম প্রতিষ্ঠানগুলোর সূত্রে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে বিদ্যুৎ–বিভ্রাটে বরিশালে ১০ হাজারের বেশি মোবাইল টাওয়ার বা বেজ ট্রান্সমিটার স্টেশন (বিটিএস) সেবা দিতে পারছে না। বিটিএস রেডিও সংকেতের মাধ্যমে মোবাইল ডিভাইসের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কল ও ইন্টারনেট সংযোগ দিয়ে থাকে।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়েছে দক্ষিণের জেলাগুলোর লাখ লাখ মানুষের মোবাইল ও ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপর। বরগুনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, ভোলা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, খুলনাসহ আরও কয়েকটি জেলার মানুষ টেলিযোগাযোগ সেবার বাইরে আছেন।

টেলিকম কোম্পানির কর্মকর্তাদের মতে, একটি বিটিএসের জন্য স্ট্যান্ডার্ড ব্যাটারি ব্যাকআপের সময়কাল সাধারণত চার থেকে আট ঘণ্টা পর্যন্ত, যা বিদ্যুৎ প্রাপ্তির ওপর নির্ভর করে। স্বল্প থেকে মাঝারি সময়ের বিদ্যুৎ–বিভ্রাট হলেও এই ব্যাকআপের মাধ্যমে টাওয়ার চালু থাকে। কিন্তু দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ–বিচ্ছিন্ন থাকায় টেলিযোগাযোগ একরকম বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

এদিকে বরিশালে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ওজোপাডিকো) ও দুটি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতায় প্রায় ৯ লাখ ১৯ হাজার ৮৬ গ্রাহক রয়েছেন। এর মধ্যে ওজোপাডিকোর আওতায় ৩ লাখ ৪০, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১–এর আওতায় ৩ লাখ ২০ হাজার ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২–এর আওতায় ২ লাখ ৫৯ হাজার ৮৬ গ্রাহক রয়েছেন। এর মধ্যে বরিশাল নগরে ১ লাখ ২০ হাজার গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ আজ সকালে চালু করা গেলেও বাকি আট লাখ গ্রাহক এখনো বিদ্যুৎবিহীন রয়েছেন।

ওজোপাডিকোর বরিশাল অঞ্চলের পরিচালন ও সংরক্ষণ সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আবদুল মজিদ বলেন, বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনে অসংখ্য গাছ ভেঙে পড়ে আছে। খুঁটি ও সঞ্চালন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব মেরামত ও গাছ অপসারণে সময় লাগবে।

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১–এর মহাব্যবস্থাপক মো. হুমায়ুন কবির বলেন, আমাদের সমিতির আওতায় ৩ লাখ ২০ হাজার গ্রাহক আছেন। এর মধ্যে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার ৩০০ থেকে ৪০০ গ্রাহক বিদ্যুৎ পেয়েছেন। বাকিরা পাননি। বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনে অসংখ্য গাছ উপড়ে পড়ে আছে। সরবরাহ ঠিক করতে দু-তিন দিন লেগে যেতে পারে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //