এখনো জমে ওঠেনি কোরবানির পশুর হাট

পরম যত্নে লালন-পালন করা ছাগলটি এবারের কোরবানির পশুর হাটে বিক্রির জন্য নিয়ে এসেছেন। দীর্ঘ ২ বছরেও বেশি সময় ধরে সন্তানের মত বড় করেছেন তিনি। আশা ছিল ৬০ হাজার টাকা বিক্রির করে মাঠে জমি রাখবেন। প্রত্যাশার চেয়ে দাম অনেক কম হওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি। বলছিলাম ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বৈডাঙ্গা পশু হাটে ছাগল বিক্রি করতে আসা মো. বুলবুল আহমেদের কথা। তিনি পার্শ্ববর্তী চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার মোহাম্মদ-জুম্মা গ্রাম থেকে ৬০ হাজার টাকা মূল্যের একটি ছাগল বিক্রি করতে এসেছেন।

গতকাল মঙ্গলবার (১১ জুন) ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বৈডাঙ্গা পশু হাটে কথা হয় বুলবুলসহ আগত ক্রেতা-বিক্রেতার সাথে।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে বা কোরবানির জন্য প্রস্তুতকৃত ছাগল আনা হয়েছে এই হাটে। যেখানে ছোট বড় সব ধরনের ছাগল দেখা গেছে। ক্রেতাদের সাধ্যের মধ্যেই রয়েছে কোরবানির ছাগল। বাজারে ছাগলের দাম কিছুটা কম হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করছে বিক্রেতারা। ঢাকা, সিলেট, ফরিদপুরসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এসেছেন ছাগলের ব্যাপারীরা। তারাও যাচাই-বাছাই করে ছাগল ক্রয় করছেন। বাজারে ১৫ থেকে ৬০ হাজার টাকা মূল্যের ছাগল দেখা গেছে। তবে হাটে আমদানিকৃত ছাগলের মধ্যে ২০ হাজার থেকে ৩০ ও ৪৫ হাজার টাকা মূল্যের ছাগলের ক্রয়বিক্রয় বেশি হচ্ছে। বড় ছাগলের ক্রয়বিক্রয় খুবই কম।

ছাগল বিক্রয় করতে আসা বুলবুল আহমেদ বলেন, দুই বছর আগে হাট থেকে একটি মা ছাগল ক্রয় করি। তার থেকেই এই ছাগল। এখন ৬০ কেজির বেশি ওজন হবে। বাড়িতে সন্তানের মতো করে লালন-পালন করেছি। আমাদের সাথে এক বিছানায় ঘুমাত। সম্পূর্ণ দেশিয় খাবার খাওয়ানো হয়েছে। আশা ছিল ৬০ হাজার টাকা বিক্রয় করাবো। কিন্তু সবাই ৫০ হাজার টাকার নিচে দাম বলছে। অনেক আদরের ছাগল, আমার দামে না পোশালে বাড়িতে ফেরত নিয়ে যাব।

সিলেট থেকে ছাগল ব্যবসায়ী সাদ্দাম হোসেন বলেন, গত ঈদের থেকে এবারের কোরবানির ঈদে ছাগল ক্রয়বিক্রয় একটু কম। যারা পশু কোরবানি দিবেন তাদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রয়েছে। তবে ছাগলের বাজার বেশিও না আবার কমও না মোটামুটি ক্রেতা-বিক্রেতা সবাই কেনাবেচা করতে পারছে।

ছাগল বিক্রয় করতে আসা রবিউল ইসলাম বলেন, ছাগল যেমন তেমন দাম হচ্ছে না, বেচাকেনা নেই। ৫০ হাজার টাকার ছাগল ৩৫, ৩৬ হাজার দাম হচ্ছে। ছাগল টা ৪৫-৪২ হাজার টাকা হলে বিক্রয় করতাম, কিন্তু তেমন কোন দাম হচ্ছে না।

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বৈডাঙ্গা পশু হাটের মালিক পক্ষ থেকে মো. সোহাগ আহমেদ বলেন, ঐতিহ্যবাহী বৈডাঙ্গার পশু হাটে দূরদূরান্ত থেকে কোরবানির পশু এসেছে। জেলা প্রশাসন থেকে বিভিন্ন প্রকার দিকনির্দেশনা দিয়েছে। আমরা ইতিমধ্যে সেগুলো ফলো করছি। জাল টাকা শনাক্ত করার ব্যবস্থা, ক্রেতা বিক্রেতাদের নিরাপত্তা দেওয়ার ব্যবস্থাসহ সকল ধরনের সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা রয়েছে এই হাটে। ক্রেতা-বিক্রেতারা যেন কোন ধরনের প্রতারণার শিকার না হয় এ কারণে স্থানীয় পুলিশ ক্যাম্পের সদস্যরা সব সময় হাটে টহল দিচ্ছে।

তিনি বলেন, এবারের কোরবানির পশুর হাঁটে প্রতিদিন ৬-৭ লাখ টাকার ট্যাক্স আদায় হবে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //