বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, সিলেটে পানিবন্দি ১০ লাখ মানুষ

সিলেট অঞ্চলে টানা বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন ১০ লাখ মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে নানা সংকটে তাদের দিন কাটছে।। সুনামগঞ্জে বন্যার্তদের আশ্রয় দিতে ৫১৬টি আশ্রয় কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। 

বৃষ্টিপাতের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পানি বণ্টনের অসমতা ও অপরিকল্পিত উন্নয়নকে বন্যার কারণ বলছেন বিশেষজ্ঞরা। যার প্রভাবে প্রতি বছর সুনামগঞ্জ-সিলেট এলাকায় পানিতে ডুবছে গ্রামের পর গ্রাম। এজন্য কার্যকরী ড্রেজিং ব্যবস্থা ও পানি ব্যবহারের মহাপরিকল্পনা করা জরুরি বলছেন তারা। তাগিদ দেন, হাওর বা নদীকেন্দ্রিক উন্নয়নে অন্তত ৩০ বছরের আবহাওয়া পর্যালোচনার।

আবহাওয়াবিদ মো. শাহিনুল ইসলাম বলেন, মেঘালয়, আসাম ও ত্রিপুরার বৃষ্টির পানি বের হওয়ার রাস্তা আমাদের বাংলাদেশ। এজন্য বাংলাদেশে বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হয়। অনেক সময় নিয়ে পানিটা থাকে। আমাদের দেশে যে বৃষ্টি হয়, তা যতটুকু না বন্যার জন্য দায়ী, এরচেয়ে বেশি দায়ী ভারতের অঙ্গরাজ্যের পানি।

এদিকে, সিলেট ও সুনামগঞ্জের বন্যা দুর্গতদের জন্য সরকারী ভাবে ৮০ লাখ টাকা ও এক হাজার মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। মৌলভীবাজারে ধলই নদীর তিনটি স্থানে বাঁধ ভেঙ্গে লোকালয়ে প্রবেশ করছে পানি। নেত্রকোনায় পাহাড়ী ঢলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। 

সিলেট অঞ্চলে বৃষ্টিপাত কিছুটা কমে এলেও উজানের ঢল অব্যাহত রয়েছে। জকিগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, গোলাপগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ, বালাগঞ্জ ও ওসমানীনগরে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। পানিবন্দি প্রায় ১০ লাখ মানুষ। সাড়ে ৬শ’ আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করছেন ২০ হাজার মানুষ। এছাড়া বন্যায় সিলেট নগরীতে দুর্ভোগ চরমে। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি, খাবার সঙ্কট। 

বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও ত্রাণ বিতরণ শেষে ত্রাণ ও দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী জানান, সিলেট ও সুনামগঞ্জের বানবাসী মানুষের জন্য প্রাথমিকভাবে ৮০ লাখ টাকা ও এক হাজার মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। 

সুনামগঞ্জে নতুন করে প্লাবিত হয়েছে ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট। ভোগান্তিতে পড়েছেন কয়েক লাখ মানুষ। নিজেদের জানমাল রক্ষায় আশ্রয়কেন্দ্র উঠছে দুর্গতরা। বন্যা কবলিতদের উদ্ধার ও নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসতে কাজ করছে প্রশাসন। জেলায় ৫১৬টি আশ্রয় কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে খাবার ও ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। 

মৌলভীবাজারে পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। ধলই নদীর তিনটি স্থানে বাঁধ ভেঙ্গে লোকালয়ে প্রবেশ করছে পানি। ৭ উপজেলার ৩০টি ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ এখন পানিবন্দী। 

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //