জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলটের বিরুদ্ধে রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে জমি দখলের অভিযোগ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) বিকালে রাজশাহী প্রেসক্লাব মিলনায়তনে খালেদ মাসুদ পাইলট এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি করেন। মূলত তাকে দেশবাসীর কাছে হেয় প্রতিপন্ন ও সম্মানহানি করার উদ্দেশ্যে একটি মহল এমন মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছেন বলেও সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন পাইলট।
সংবাদ সম্মেলনে পাইলট বলেন, ‘আমি বৈধভাবে গত বছরের মে মাসে গোদাগাড়ীর ফাদিলপুর মৌজায় ৬৬ শতাংশ জমি কিনেছি। ওই বছরই আমার নামে নামজারিও হয়েছে। আমি অবাক হয়েছি যে, আমার বিরুদ্ধে জমি দখলের মিথ্যা নাটক সাজিয়ে আমাকে দেশবাসির কাছে হেয় করার চেষ্টা করা হচ্ছে। যেটি সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’
এক প্রশ্নের জবাবে পাইলট বলেন, আমি ওই এলাকায় থাকি না। আমি থাকি রাজশাহী শহরে। বরং অন্যায়ভাবে আমাকেই তারা অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেছে। স্বভাবতই যখন আমাকে গালিগালাজ কেউ করবে তখন আমার মন খারাপ হবে। তিনি (বিপক্ষের জাহাঙ্গীর আলম) আমাকে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখিয়েছেন। তিনি ওই এলাকায় আসলেই একজন ভয়ংকর মানুষ। তিনি যখন আমাকে ভয়ভীতি দেখিয়েছেন তখন আমি আমার পরিচিতদের কথা তাকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছি। আমি জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক, আমার পরিচিত মানুষ থাকতেই পারে।’
পাইলট আরো বলেন, ‘সকালে (বৃহস্পতিবার) সংবাদ সম্মেলনে আমার কলরেকর্ড সম্পর্কে যা বলা হয়েছে তা আংশিক। আমি যা বলেছি তা আগের এবং পরের কথোপকথনগুলো এডিট করে উপস্থাপন করা হয়েছে। মূলত আমাকে হেয় করতেই এমনটি করা হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘বিসিবিতে আমার একটা সম্ভাবনা রয়েছে। যাতে আমি বিসিবিতে যেতে না পারি সেজন্য পরিকল্পিতভাবে এমন জমি দখলের মিথ্যা নাটক করা হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি কখনো কোন দল করিনি। আমি জাতীয় দলের ক্রিকেটার ছিলাম। আমার এলাকার মেয়র কিংবা প্রশাসনের লোকজনের সঙ্গে আমার সম্পর্ক থাকবে এটাই স্বাভাবিক। জনপ্রতিনিধি যখন যে দলের থাকবে তার সঙ্গে আমার সম্পর্ক ভালো থাকবে। কেননা, ব্যক্তি নয় বরং চেয়ারটার সঙ্গে আমার সম্পর্ক।’
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) দুপুরে রাজশাহী প্রেসক্লাবে প্রভাব খাটিয়ে জমি দখলের চেষ্টা ও প্রশাসনকে দিয়ে হয়রানির হুমকি দেওয়ার অভিযোগ তুলে জাহাঙ্গীর আলম নামের এক ব্যক্তি বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলটের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গত ১১ এপ্রিল গোদাগাড়ীর চকনারায়নপুর গ্রামের ১১ জনের সম্প্রতি প্রায় ২ বিঘা ধানী জমি বিক্রয় করি। এরপর ক্রেতা নাসরিন সুলতানা জমি দখল নেন। কিছুদিন পর ওই জমি খালেদ মাসুদ পাইলট জোরপূর্বক ঘিরে রাখে। জমির প্রকৃত মালিক জমিতে গেলে তাদেরকে হুমকি দেয় ও জমির বর্গাচাষীকে মামলা দিয়ে পুলিশ দিয়ে আটক করায়।
পাইলট হুমকি দিয়ে বলেন, ‘রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ভাইকে দিয়ে সবার ব্যবস্থা করবে। এছাড়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ছেলে আমার বন্ধু, তাকে বললে সে পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি দিয়ে সবাইকে সাইজ করে দিবে।’
তিনি আরো বলেন, পরে তারা তাদের কেনা জমি দখলের জন্য স্থানীয় রিশিকুল ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালতে আবেদন করেন। গ্রাম আদালত খালেদ মাসুদ পাইলটকে বসার জন্য নোটিস পাঠালেও সেখানে তিনি হাজির হননি। এরপর খালেদ মাসুদ পাইলট আমাকে ফোন দিয়ে হুমকি দেয়, ‘ওই জমি অন্য মানুষের থেকে ক্রয় করেছি। এ জমিতে যদি কেউ আসে তাকে প্রশাসন দিয়ে ঝামেলায় ফেলবো। আমি জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার আমার কথা সবাই শুনবে। এছাড়া পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি দিয়ে সব হুঙলাই দিবো।’ এই ফোন রেকর্ডের একটি কপিও আমাদের কাছে আছে। তাই অন্যায় অত্যাচার থেকে আমরা মুক্তি চাই। জমির প্রকৃত মালিক যেন জমি ফিরে পায় সেটার জন্য প্রশাসনের সহযোগিতা চাই। পাইলটের বিরুদ্ধে করা সংবাদ সম্মেলনে জমির ক্রেতা নাসরিন সুলতানার ভাই শাহিনুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh