রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৫২ পিএম
আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৪ পিএম
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল এবং বৃষ্টিপাতের কারণে রাঙ্গামাটির কাপ্তাই বাঁধ দিয়ে পানি নিষ্কাশন অব্যাহত আছে। তবে কাপ্তাই হ্রদের পানিপ্রবাহ বাড়ায় সোমবার সকাল থেকে কাপ্তাই বাঁধের স্প্রীলওয়ে বা জলকপাটগুলো সাড়ে তিন ফুট করে খুলে দেওয়া হয়েছে। এতে করে প্রতি সেকেন্ডে বাঁধ দিয়ে ৬৮ হাজার কিউসেক পানি নিষ্কাশন হচ্ছে কর্ণফুলী নদীতে।
এছাড়া পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিটে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ফলে টারবাইন দিয়ে আরও ৩২ হাজার কিউসেকসহ মোট ১০০ কিউসেক পানি নিষ্কাশন হচ্ছে। এদিকে, সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কাপ্তাই বাঁধের জলকপাটগুলো সাড়ে ৩ ফুট করে খুলে দেওয়ার পর কর্ণফুলী নদীতে স্রোত বেড়েছে। এতে করে ব্যাহত হচ্ছে চন্দ্রঘোনা-রাইখালী রুটে ফেরি চলাচল। বন্ধ রয়েছে বান্দরবানের সঙ্গে রাঙ্গামাটির সড়ক যোগাযোগ।
কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ (কন্ট্রোল রুম) সূত্র জানিয়েছে, সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা ১০৮ দশমিক ৬৯ মিনস সি লেভেল (এমএসএল)। হ্রদে সর্বোচ্চ পানির ধারণ সক্ষমতা রয়েছে ১০৯ এমএসএল। সে হিসাবে এখনো বিপৎসীমার রয়েছে হ্রদের পানি। কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক (তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী) এটিএম আবদুজ্জাহের বলেন, হ্রদে পানি বাড়ায় সাড়ে তিন ফুট করে স্প্রীলওয়েগুলো খুলে দেয়া হয়েছে। এতে প্রতি সেকেন্ডে নিষ্কাশিত হচ্ছে ৬৮ হাজার কিউসেক পানি। এছাড়া বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৫টি ইউনিট চালু রেখে ২২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে, এতে করে প্রতি সেকেন্ডে পানি নিষ্কাশন হচ্ছে আরও ৩২ হাজার কিউসেক।
গত দুই সপ্তাহ ধরে কাপ্তাই হ্রদের পানি বৃদ্ধি কারণে রাঙ্গামাটি জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে আছে। হ্রদের পানি না কমায় প্লাবিত এলাকাগুলোর বেশিরভাগ থেকে এখনো পানি নামেনি। সোমবার কাপ্তাই হ্রদের পানি ছাড়ার পরিমাণ বাড়ায় কর্ণফুলী নদীতে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার রাইখালী ও চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার চন্দ্রঘোনার সঙ্গে চলাচলকারী সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের ফেরি সোমবার দুপুর থেকে বন্ধ রয়েছে। এতে করে রাঙ্গামাটি-রাজস্থলী ও বান্দরবানের সঙ্গে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে আছে। বিপাকে পড়েছেন এ সড়কে চলাচলকারী যাত্রীরা। তবে বিকল্প সড়ক হিসাবে রাঙ্গুনিয়ার গোডাউন এলাকার সেতু ব্যবহার করছেন অনেকেই।
এ সড়কে চলাচলকারী সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক মো. ইমরান আমরা সিএনজি নিয়ে বসে আছি। বেলা ১২টা থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফেরির শ্রমিক মো. শাহাজাহান বলেন, সোমবার সকালে কয়েকবার ফেরি চলাচল করতে পারলেও বেলা ১২টার দিকে নদীতে জোয়ার এসে ফেরির গ্যাংওয়েতে প্রচুর পানি এসেছে। ফলে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। কাপ্তাই বাঁধ দিয়ে পানি ছাড়া হচ্ছে, যে কারণে নদীতে তীব্র স্রোত থাকায় ফেরি চলাচল করতে পারছি না।
সড়ক ও জনপথ (সওজ) রাঙ্গামাটি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ চাকমা বলেন, কর্ণফুলী নদীতে তীব্র স্রোতের কারণে চন্দ্রঘোনা-রাইখালী ফেরি চলাচল দুপুর থেকে বন্ধ আছে। নদীতে তীব্র ¯্রােত থাকলেও মঙ্গলবারও ফেরি বন্ধ থাকতে পারে। স্রোত কমলে ফেরি সচল করা হবে।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh