ঢাকার সাভার ও আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে সকাল থেকে বেশিরভাগ তৈরি পোশাক কারখানায় কাজে যোগ দিয়েছিলেন শ্রমিকরা। তবে বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ ও সেসব সুরাহা না হওয়ায় পরবর্তীতে অন্তত ৩০টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করেন কর্তৃপক্ষ।
আজ রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকালে যথাসময়ে কারখানায় কাজে যোগ দেন শ্রমিকরা। তবে বেলা ১১টার দিকে নিউএইজ, আল মুসলিমসহ কয়েকটি পোশাক কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়। এরপর অন্য কারখানায়ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এরই জেরে কারখানাগুলোতে ছুটি ঘোষণা করা হয়।
শিল্প পুলিশ জানায়, সকালের দিকে ইয়াগি বাংলাদেশ, নিউ এইজ, আল মুসলিম, জেনারেশন নেক্সটসহ অন্তত ২০টি কারখানার শ্রমিকরা বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ করে। এছাড়া লুসাকা, মাসকাট, বেক্সিমকো (২১ ইউনিট) নিট কম্পোজিটসহ ৭টি গ্রুপ/কারখানার শ্রমিকরা কারখানার ভেতরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। তবে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শ্রমিকদের আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়ায় বেশ কিছু কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়।
এছাড়া বিক্ষোভের কারণে আগে থেকেই অন্তত ৫-৬টি কারখানা বন্ধ ছিল।
শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মো. সারোয়ার আলম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। দুপুর দেড়টা পর্যন্ত শিল্পাঞ্চলে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার কোনো খবর পাওয়া যায়নি। এছাড়া বেশিরভাগ কারখানা সচল রয়েছে বলে জানা যায়।
গত কয়েকদিনে যেসকল এলাকায় শ্রমিক বিক্ষোভের ঘটনা ঘটছে সেসকল এলাকায় আজও নিরাপত্তা জোরদার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আশুলিয়ার পলাশবাড়ি এলাকার পার্ল গার্মেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের সামনের মোতায়েন রয়েছে সেনাবাহিনী, শিল্প পুলিশ ও এপিবিএন সদস্যরা।
এছাড়া আশুলিয়ার বাইপাইল-আব্দুল্লাহপুর সড়কের নরসিংহপুর এলাকায় বিভিন্ন কারখানার সামনে সেনাবাহিনী, এপিবিএন ও পুলিশ সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন। সড়কে টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী, র্যাব, বিজিবি ও পুলিশ সদস্যরা।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলেন, সকালে নির্ধারিত সময়ে শ্রমিকরা কারখানায় উপস্থিত হয়েছেন। আল মুসলিম, মন্ডল ও নিউএইজ গ্রপের কারখানার শ্রমিকরা তাঁদের দাবি আদায় না হওয়ায় কাজ বন্ধ করে বসে থাকায় কারখানাগুলো ছুটি দেওয়া হয়। এছাড়া আশপাশের কারখানা ছুটির বিষয়টি জানার পর নিরাপত্তার স্বার্থে সব মিলিয়ে অন্তত ৩০টি কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হয়।
তিনি বলেন, কয়েকটি কারখানায় শ্রমিকরা কাজ বন্ধ রেখে বসে আছেন বলে জানতে পেরেছি।
এদিকে মালিক, শ্রমিক ও এখাত সংশ্লিষ্ট সকলের সম্মিলিত উদ্যোগের মধ্য দিয়ে গার্মেন্টস শিল্পের বর্তমান পরিস্থিতি নিরসন করা সম্ভব বলে মনে করছেন অনেকে।
বাংলাদেশ গামের্ন্টস ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইন বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন মিন্টু বলেন, আশুলিয়ার মোট কারখানার শতকরা ২ শতাংশের কম কারখানায় সমস্যা হচ্ছে। গিল্ডান, নাসা গ্রুপসহ যেসকল কারখানার মালিক আন্তরিক ছিলো সেগুলোর সমাধান হয়ে গেছে। মালিকপক্ষ একটু আন্তরিক হলেই সমস্যার সমাধান সম্ভব।
তিনি বলেন, বিভিন্ন কারখানার আন্দোলনরত শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে দেখেছি, তাদের অধিকাংশ দাবিগুলোর বিষয়ে শ্রম আইনেই বলা আছে। সেক্ষেত্রে মালিকপক্ষ শুধু শ্রমিকদের শ্রম আইন অনুসারে কারখানা পরিচালিত হবে এবং এর বাইরে হাজিরা বোনাসের বিষয়টি উভয়পক্ষ আলোচনা করে ঠিক করে নিলেই সমস্যার সম্ভব।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
বিষয় : সাভার আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল পোশাক কারখানা
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh