আবারও অশান্ত হয়ে উঠেছে পাহাড়। সহিংসতার আগুনে পুড়ে ছাই ঘর-বাড়ি, দোকান-পাট, যানবাহন। মারা গেছে মানুষ। বাধ্য হয়েছে ঘরবাড়ি ছাড়তে। চরম উৎকণ্ঠা পাহাড়ি জনপদে।
কয়েকদিন আগে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে খাগড়াছড়িতে সংঘর্ষ ও মৃত্যুর পর সহিংসতা ছড়ায় পাশের জেলা রাঙামাটিতেও। দুই সম্প্রদায়ের সহিংসতায় মারা যান ৪ জন। খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটিতে সংঘাত-হামলার প্রতিবাদে তিন পার্বত্য জেলায় বিক্ষুব্ধ জুম্ম ছাত্র-জনতার ডাকা ৭২ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি শেষ হয়েছে।
এই অবস্থায় পার্বত্য চট্টগ্রামে অস্থিতিশীল অবস্থা সমাধানে নতুন শান্তি চুক্তি প্রয়োজন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ও বিশ্লেষকেরা। তারা বলছেন, ২৫ বছর আগের শান্তি চুক্তি অসম্পূর্ণ। তাই সংকট তীব্র হচ্ছে। আদিবাসী নেতা ও গবেষকরা বলছেন, ওই চুক্তি সময়োপযোগী নয়। খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি, বান্দরবানে স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠায় সংবিধান পরিবর্তনের দাবিও তাদের।
সংবিধানে বাঙালি ছাড়া অন্য সব জাতিকে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী হিসেবে বলা হয়েছে। আবার পার্বত্যাঞ্চলে ছোটখাটো বিষয়কেও জাতিগত সংঘাতে রূপ দিতে তৎপর একটি পক্ষ।
এ ব্যাপারে গবেষক ড. আনু মোহাম্মদ বলেন, সংবিধান তো সংস্কার হবে, পরিবর্তন হবে। সংবিধানে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে আনতে হবে। বাংলাদেশে বাঙালি ছাড়া অন্যান্য জাতি রয়েছে। তাদের একটা সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে। তাদের আলাদা সংস্কৃতি আছে, তাদের আলাদা ভূমি ব্যবস্থা আছে, তাদের আলাদা ইতিহাস আছে। এ ছাড়া তাদের ক্ষোভের বাস্তব কিছু কারণ রয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল ইউপিডিএফ বলছে, ১৯৯৭ সালে ঐতিহাসিক শান্তি চুক্তিতে ভূমি ব্যবস্থাপনার রূপরেখা দেওয়া ছিলো। তবে ২৭ বছরেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। তাই নতুন শান্তিচুক্তি করা জরুরি।
এ ব্যাপারে ইউপিডিএফের সংগঠক মাইকেল চাকমা বলেন, স্বায়ত্তশাসন থাকবে সেখানে, এটা সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। সংবিধানে সেটা স্বীকার করা হয়নি। এখন নতুন চুক্তির মাধ্যমে সেখানে আলাদা শাসন ব্যবস্থা সংবিধানে স্বীকৃত হতে হবে। সেটলার সমস্যা মানে ভূমি সমস্যা, ভূমি সমস্যা মানে সেটলার সমস্যা। সেটলার বাঙালিদের সাথে আমাদের কোনো দ্বন্দ্ব ছিল না, এখনো নাই।
আঞ্চলিক নেতারা বলছেন, পাহাড় অস্থিরতার প্রভাব পড়তে পারে সমতলেও। তাই ঘৃণা ও নৈরাজ্য করা ব্যক্তি ও গোষ্ঠীকে কঠোরভাবে দমনের দাবি তাদের।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
বিষয় : পাহাড় তিন পার্বত্য জেলা শান্তি চুক্তি
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh