পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে বিয়ের দাবিতে অনশনে থাকা এক অন্তঃসত্ত্বা তরুণীকে হারপিক খাইয়ে প্রাণনাশের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরসহ দুই জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গতকাল সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার টেপ্রীগঞ্জ ইউনিয়নের কামাত পাড়া এলাকা থেকে ভুক্তভোগী ওই তরুণীকে উদ্ধার করে সেনাবাহিনী। এ
ভুক্তভোগী ওই তরুণীর নাম আয়েশা সিদ্দিকা। অভিযুক্ত প্রেমিকের নাম আলামিন। তিনি উপজেলার টেপ্রীগঞ্জ ইউনিয়নের কামাতপাড়া এলাকার রইসুল ইসলামের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কয়েক সপ্তাহ থেকে আয়েশা বিয়ের দাবি নিয়ে আলামিনের বাড়িতে অনশন শুরু করেন। দীর্ঘদিন থেকে আলামিনের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এরপর তিনি অন্তঃসত্ত্বা হলে আলামিন যোগাযোগ কমিয়ে দেন। পরে পিরোজপুর থেকে দেবীগঞ্জে আসেন আয়েশা। সোমবার আলামিনের ছোট ভাই জিল্লুর রহমান জোর করে আয়েশাকে হারপিক খাওয়ায়। এই সময় তরুণী চিৎকার করলে প্রতিবেশীরা জোরো হন। কিন্তু কাউকে বাসায় প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। পরে স্থানীয়রা সেনা ক্যাম্পে খবর দেন। সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হান্নানের নেতৃত্বে একটি টিম আয়েশাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন।
ভুক্তভোগী আয়েশা বলেন, আলামিন ঢাকায় চাকরি করেন। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি আমাকে এখানে আনেন। আমি এখানে আসার পর থেকেই তারা আমার সন্তানকে নষ্ট করার চেষ্টা করে আসছিল।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে আটক জিল্লুর বলেন, আমি মির্জাগঞ্জ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ি। আমি হারপিক খাওয়াইনি। উনি (আয়েশা) টয়লেট পরিষ্কার করতে গিয়ে নিজে হারপিক খেয়েছে আমাদের বিপদে ফেলার জন্য।
এদিকে সোমবার রাতেই ভুক্তভোগী আয়েশা আক্তার প্রেমিক আলমিনকে প্রধান আসামি করে চার জনের নামে হত্যাচেষ্টা ও ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। হত্যাচেষ্টা মামলায় জিল্লুর রহমান ও পারুল আক্তার নামে দুইজনকে আটক করা হয়েছে।
এ বিষয়ে দেবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোয়েল রানা বলেন, আয়েশা নামে এক তরুণীকে হারপিক খাইয়ে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে। বর্তমানে সেই তরুণী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে। হত্যাচেষ্টা মামলায় দুজনকে গ্রেপ্তার করে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
এইদিকে বিয়ের দাবিতে আসা তরুণীর ২০১৩ সালে একই এলাকার নাছির উদ্দিন নামে এক ব্যক্তির সাথে বিয়ে হয়। সেই পরিবারে তাদের ৬ বছরের একটি ছেলে রয়েছে। নাছির মুঠোফোনে জানান, তাদের এখনো বিবাহবিচ্ছেদ হয়নি। যদিও আয়েশা তালাকের নোটিশ পাঠিয়েছেন বলে দাবি করলেও এখনো তা হাতে পাননি নাছির।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh