নাটোরের লালপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের গোঁসাইজীর আশ্রমে অনুষ্ঠিত নবান্ন উৎসবে উপস্থিত ছিলেন বহু নিঃসন্তান নারী। তারা সদ্য স্নান শেষে ভেজা কাপড়ে বটগাছের নিচে আঁচল পেতে সন্তান লাভের আশায় প্রার্থনা করছিলেন। তাদের বিশ্বাস, গাছের ফল বা পাতা যদি তাদের আঁচলে পড়ে, তবে তারা সন্তান লাভ করবেন।
গতকাল মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) সকাল থেকে শুরু হওয়া দুই দিনব্যাপী নবান্ন উৎসবের সময় এমন দৃশ্য দেখা গেছে। গোঁসাইজীর আশ্রমের বটগাছের নিচে নারী ভক্তরা রঙিন শাড়ির আঁচল বিছিয়ে গাছ থেকে ফল বা পাতা পড়ার অপেক্ষায় ছিলেন। আশ্রমের এক নারী বৈষ্ণব তাদের দেখভাল করছিলেন, আর আশেপাশে ভিড় জমিয়েছিলেন অসংখ্য নারী-পুরুষ। প্রতিবছরই দেশের নানা প্রান্ত থেকে নিঃসন্তান নারীরা এই আশ্রমে এসে সন্তানের জন্য প্রার্থনা করেন।
এ বিষয়ে এক নারী জানান, অনেকের মুখে শুনেছি আঁচল বিছিয়ে মানত করলে সন্তান হয়। তাই আমি এখানে এসেছি, যাতে আমারও সন্তান লাভ হয়।
কুমিল্লা থেকে আসা এক নারী জানান, দীর্ঘ ১০ বছর ধরে আমার সন্তান হয়নি। বহু চিকিৎসা করেও কিছু হয়নি। এরপর আমি এখানে আসি, কারণ আমার ননদ এখানে এসে সন্তান লাভ করেছেন।
আশ্রম কমিটির সভাপতি শ্রী সঞ্জয় কুমার জানান, নবান্ন উৎসবে নিঃসন্তান নারীরা মানত করেন, পরে ভক্তদের কলাপাতা দিয়ে খিচুড়ি প্রসাদ হিসেবে খাওয়ানো হয়।
তবে লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কে এম শাহাবুদ্দিন এ ব্যাপারে বলেন, এভাবে সন্তান লাভের প্রার্থনা কুসংস্কার। বৈজ্ঞানিক বা চিকিৎসা বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে এর কোনো ভিত্তি নেই। নারী-পুরুষের মিলন ছাড়া কেউ সন্তান ধারণ করতে পারেন না। গাছের পাতা বা ফলের প্রভাবে সন্তান উৎপাদন সম্ভব নয়। এজন্য মানুষের উচিত ফকির বা সাধুদের পিছে না ঘুরে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2025 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh