নাটোরের লালপুর উপজেলায় সরকারি অনুমতি ও পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়াই গড়ে উঠেছে প্রায় ৩০-৩২টি অবৈধ ইটভাটা। এসব ইটভাটার কারণে আবাদি জমির পরিমাণ কমে যাচ্ছে এবং জমির উর্বরতা হ্রাস পাচ্ছে। এতে স্থানীয় কৃষকরা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
ইট প্রস্তুত ও ভাটা নিয়ন্ত্রণ সংশোধন আইন-২০১৯ অনুযায়ী লাইসেন্স ছাড়া ইটভাটা চালানো শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কিন্তু আইন অমান্য করে ফসলি জমি, রাস্তার পাশ ও জনবসতিপূর্ণ এলাকায় ইটভাটা গড়ে উঠেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ভাটা মালিকরা উৎকোচের মাধ্যমে প্রশাসনের অনুমোদন ছাড়াই কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।
ইটভাটায় কাঠ পোড়ানোর ফলে সৃষ্ট কালো ধোঁয়ার কারণে রবি শস্যসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। কৃষক মোস্তাফিজুর রহমান, মোবারক আলী, মুকুল হোসেন এবং লিটন জানান, ধোঁয়ার কারণে ফসলের উৎপাদন কমে যাচ্ছে। আখচাষী ইসমাইল হোসেন জানান, ধোঁয়ার কারণে আমের মুকুল নষ্ট হয়ে যায় এবং আমের গুটিতে কালো দাগ পড়ে।
এছাড়া কালো ধোঁয়ার কারণে স্থানীয় জনগণ শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এ. কে. এম. শাহাব উদ্দীন বলেন, এই দূষিত বাতাস শ্বাসের সঙ্গে ফুসফুসে প্রবেশ করে রক্তের মাধ্যমে দেহে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে বমি, মাথাব্যথা, বুক ব্যথা, অ্যাজমা, এলার্জি, স্নায়ুবিক দুর্বলতা, এমনকি ক্যান্সারের মতো জটিল রোগের সৃষ্টি হচ্ছে।
এ বিষয়ে লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহেদী হাসান বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। অবৈধ ইটভাটার তালিকা সংগ্রহের কাজ চলছে। তালিকা হাতে পেলে এসব ভাটার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সচেতন মহলের অভিযোগ, এসব ভাটার বিরুদ্ধে প্রশাসন কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। নিয়মিত অভিযানের অভাবে ভাটাগুলো চালু রয়েছে। ফলে পরিবেশ, জনস্বাস্থ্য এবং কৃষি মারাত্মক হুমকির মুখে পড়ছে।
ফসলি জমি রক্ষায়, পরিবেশ সুরক্ষায় এবং জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি কমাতে অবৈধ ইটভাটাগুলো বন্ধে দ্রুত প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2025 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh