পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলায় উৎপাদন শুরু হয়েছে বিষমুক্ত শুঁটকি মাছের। উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রসংলগ্ন কচা নদীর পাশের চরে উৎপাদিত হচ্ছে এই বিষমুক্ত শুঁটকি মাছ।
এ শুঁটকিতে বিষ বা রাসায়নিক পাউডার দেওয়া হয় না বলেই এই শুঁটকির সুনাম ও চাহিদা বেশি। কিছু শুঁটকিপল্লীতে মাছের খাদ্য তৈরির শুঁটকি উৎপাদিত হলেও পাড়েরহাটে শুধু মানুষের খাওয়ার শুঁটকি উৎপাদিত হয়। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কালিয়া, কোরাল, হাইতা, ফাইসা, ফেসসা, ডেলা, মধু ফেসসা, মরমা, বেজি, ছুরি, লইট্যা ও ডুম্বুরা মাছের শুঁটকি প্রক্রিয়ার কাজ চলছে।
এই উপজেলার পাড়েরহাটে গত ৬ নভেম্বর ২০২৪ থেকে শুঁটকি উৎপাদনের কাজ শুরু হয়েছে। পাড়েরহাট, পাথরঘাটা, আমুয়া ও বাগেরহাট মৎস্যবন্দর থেকে সংগৃহীত বাছাই করা মাছ থেকেই এখানে শুঁটকি তৈরি করা হয়। নভেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত চলবে শুঁটকি উৎপাদনের কাজ।
পাড়েরহাটের বাদুরা এলাকার বাসিন্দা আকিজুল বেপারী প্রথমে আট বছর আগে এক একর জমির ওপর এই শুঁটকিপল্লী নির্মাণ করেন। তখন তার শুঁটকিপল্লীতে ১০ জন শ্রমিক কাজ করতেন। আকিজুলের দেখাদেখি এখন পাড়েরহাটে ছয়জন ব্যবসায়ী শুঁটকি ব্যবসায় নেমেছেন। এই শুঁটকিপল্লীতে বর্তমানে ৫০ জন শ্রমিক শুঁটকি উৎপাদনের কাজ করছেন। আকিজুল বেপারী আরো জানান, অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার শুঁটকির দাম অনেক কম। রাজনৈতিক অস্থিরতার পর এখনো ভালো বাজার তৈরি হয়নি। তাই শুঁটকির বাজার মন্দা যাচ্ছে।
ওই শুঁটকিপল্লীর একাংশের মালিক আলী সর্দার বলেন, আড়ত থেকে মাছ কিনে এনে কেটে ভালো করে ধুয়ে লবণপানিতে এক দিন ভিজিয়ে রাখেন। শুঁটকি তৈরিতে তারা বিষ বা রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করেন না। এরপর বাঁশের তৈরি মাচা ও বেড়ায় মাছ শুকাতে দেন। ৮ থেকে ১০ দিনের মধ্যে কাঁচা মাছ শুঁটকিতে পরিণত হয়।
তারা এরই মধ্যে শুঁটকির দুটি চালান কক্সবাজারে বিক্রির জন্য পাঠিয়েছেন। তারা বছরে প্রায় দেড় থেকে দুই হাজার মন শুঁটকি উৎপাদনের আশা করছেন।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2025 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh