সাভার প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬:৫৩ পিএম
আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬:৫৭ পিএম
ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে নিহত চারজনের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। মরদেহের ময়নাতদন্ত ও পরিচয় নিশ্চিতে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য মরদেহগুলো তোলা হয়। মরদেহগুলো ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আজ শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার চারালপাড়া এলাকা থেকে জাহিদুল ইসলাম (২৮), ভাদাইল এলাকার পাবনারটেক থেকে আশরাফুল ইসলাম (৩০) এবং বগাবাড়ির আমবাগান এলাকার কবরস্থান থেকে পরিচয় শনাক্তের জন্য দুটি লাশ তুলা হয়।
আশুলিয়া রাজস্ব সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাদিয়া আক্তারের নেতৃত্বে আশুলিয়া থানা পুলিশ কবর থেকে এ সব লাশ উত্তোলন করেন।
নিহত মো. আশরাফুল ইসলামের ভাই মো. নাসির উদ্দিন টিপু জানান, গত বছরের ৫ আগস্ট দুপুরে আশরাফুল ছাত্র-জনতার মিছিলে যোগ দেন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে আশরাফুল গুলিবিদ্ধ হয়েছে জানার পর খোঁজা খুঁজির একপর্যায়ে বাইপাইল এলাকায় বেসরকারি হাবীব হাসপাতালের সামনে আশরাফুলের মরদেহ পাওয়া যায়। পরদিন সকালে তাকে দাফন করা হয়।
বগাবাড়ি আমবাগান এলাকার কবরস্থানে দাফন হওয়া দুটি লাশ তোলা হয়েছে। একটি লাশ ৫ আগস্ট নিহত আবুল হোসেনের বলে দাবি করেন তার স্ত্রী লাকী আক্তার।
লাকী আক্তার জানান, গত বছরের ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন আবুল হোসেন। পরে আন্দোলনে অংশ নেয়া অন্যরা আবুল হোসেনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ভ্যানে তোলা হয়েছে বলে পরিবারের সদস্যদের জানান। কিছুদিন পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আশুলিয়া থানার সামনে একটি ভ্যানে লাশের স্তুপের একটি ভিডিও দেখতে পান লাকী আক্তার। ওই ভ্যানের একটি লাশে পোশাক দেখে সেটি আবুল হোসেনের বলে জানতে পারেন।
তিনি জানান, বগাবাড়ি এলাকার কবরস্থানে আন্দোলনে নিহত দুজন ব্যক্তিকে কবর দেয়া হয়। যারা কবর দিয়েছিলেন তারা একটি মরদেহের পড়নের জামা-কাপড়ের বর্ণনা দিলে সেটি আবুল হোসেনের পোশাকের সঙ্গে মিলে যায় বলে দাবি করেন তিনি।
লাকী অভিযোগ করে বলেন, আমারে ছাত্ররা নিয়া মামলা করাইছে। আসামি কয়জন জানি না। আমারে কোন কিছু পইড়া শুনায় নাই। আমি লেখাপড়া জানি না। আমারে যেখানে সাইন করতে বলছে আমি সাইন করছি।
আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নূর আলম সিদ্দিক বলেন, গত বছরের ৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আশুলিয়া থানায় বেশকিছু হত্যা মামলা হয়েছে। ওই সময় নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্ত ও সুরতহাল ছারাই দাফন করা হয়েছে। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে, মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ণয়ের জন্য পিএম রিপোর্ট তৈরি করা প্রয়োজন। আদালতের নির্দেশে লাশ তুলার পর লাশের সুরতহাল প্রস্তুত শেষে ময়নাতদন্তের জন্য রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্তের মাধ্যমে নিরপরাধীরা অবশ্যই ন্যায় বিচার পাবেন।
আশুলিয়ায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাদিয়া আক্তার বলেন, আদালতের আদেশে ঢাকা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে কবর থেকে চারটি মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। একজন নারী একটি লাশ তার স্বামীর বলে দাবি করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত হতে ওই কবরস্থান থেকে দুটি লাশ তুলা হয়েছে।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2025 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh