সেই কিশোরের ঠাঁই হলো হাসপাতালে, মিলল পরিচয়

রাস্তার পাশে ঘাসের মধ্যে পড়ে থাকা অজ্ঞাত পরিচয় কিশোরকে উদ্ধার করে মাদারীপুর হাসপাতালে নিয়ে আসেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। পরে তার হাতের ছাপ নিয়ে পরিচয় শনাক্ত করে পরিবারকে খবর দেওয়া হয়। অবশেষে অজ্ঞাত কিশোরের পরিবার হাসপাতালে এসে সন্তানকে ফিরে পেয়েছে। কিন্তু অভাবের সংসারে উন্নত চিকিৎসার দাবি এই পরিবারের।

শনিবার সকালে তার পরিবার হাসপাতালে আসে।

বৃহস্পতিবার বিকালে মাদারীপুর-শরীয়তপুর সড়কের আড়িয়াল খাঁ সেতুর নিচে একটি ঘাসক্ষেত থেকে মুমূর্ষু অবস্থায় এক কিশোরকে উদ্ধার করেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতারা।

ওই কিশোরের নাম মো. আসাদুল জামান, বয়স ১৮ বছর। তিনি পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার টিয়াখালী ইউনিয়নের নাচনাপাড়া গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক ও রাশিদা বেগমের সন্তান। এরা রাজৈর উপজেলার শাফিয়া শরিফে ২৬ এপ্রিল ওরস মাহফিলে আসেন। সেখান থেকে আসাদুল হারিয়ে যায়।

পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে আড়িয়াল খাঁ সেতুর নিচে এক কিশোরকে মুমূর্ষু অবস্থায় দেখতে পায় স্থানীয়রা। পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলার আহ্বায়ক নেয়ামত উল্লাহ ও কর্মী আসাদুজ্জামান সাইফ পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ ওই কিশোরকে মাদারীপুর হাসপাতালে ভর্তি করে। কিন্তু কোনো পরিচয় পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে তার হাতের ছাপ নিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র শনাক্ত করে তার ঠিকানা নিশ্চিত হওয়া যায়। ঠিকানা মতো পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় তার পরিবারকে আসতে বলা হয়। তারা শনিবার সকালে এসে সন্তানকে ফিরে পায়। ওই কিশোর ছোট থেকেই অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত। কিন্তু সঠিক চিকিৎসা না পাওয়ায় মাঝে মাঝে হারিয়ে যায়।

পরিবারটি তার সুচিকিৎসার জন্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

কিশোরটির মা রাশিদা বেগম জানান, “আমি ও আমার স্বামী কলাপাড়া পৌরসভায় ঝাড়ুদারের কাজ করি। ছয় ছেলে-মেয়ের মধ্যে আসাদুল সবার ছোট। তিন মেয়ের বিয়ে দিয়েছি। তিন ছেলের মধ্যে বড় ছেলে অসুস্থ, মেঝ ছেলে পড়ালেখা করে। আর ছোট ছেলে ছোট থেকেই মৃগ রোগে আক্রান্ত। ভালো চিকিৎসা দিতে পারিনি। আমাদের খেয়েপড়ে বাঁচাই দায়, সেখানে কীভাবে চিকিৎসা করাব। এখন যদি কেউ আমার ছোট ছেলেটাকে চিকিৎসা করায়, তাহলে আমরা বাঁচতে পারব।”

এ ব্যাপারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা আহ্বায়ক নেয়ামত উল্লাহ বলেন, “ছেলেটার খোঁজ পেয়ে আমিসহ আরো কয়েকজন মিলে উদ্ধার করে হাসপাতালে এনেছি। এখন আমরা ওর দেখভাল করছি। আগামীতে কীভাবে ও সুচিকিৎসা পেতে পারে, তার চেষ্টা করছি। কোনোভাবেই যেন এমন একটি কিশোরের জীবন শেষ হয়ে না যায়, তার চেষ্টা করব। আমরা মানুষের পাশে আছি, মানুষের পাশেই থাকব।”




সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2025 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh