বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলার বিষয়ে পূর্ব প্রস্তুতি নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো চালুর আগে কী কী করতে হবে, তা একটি তালিকা করে দিয়েছে সরকার। একইসাথে কোন খাত থেকে এসবের খরচ জোগানো হবে, সে বিষয়ে নির্দেশনা দিয়ে গতকাল বুধবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাতে এক পরিপত্র জারি করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
তবে বিদ্যালয়গুলো কবে খুলবে তা এখনো ঠিক হয়নি। প্রস্তুতি সংক্রান্ত এই পরিপত্রে বলা হয়েছে, জনস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে যথা শিগগির বিদ্যালয় পুনরায় চালু করা অতীব জরুরি।
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ৩ অক্টোবর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরুর পর গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছুটি আছে।
পরিপত্রে বলা হয়েছে, কভিড-১৯ মহামারী নিয়ন্ত্রণের জন্য বিশ্বব্যাপী বিদ্যালয়গুলোর ন্যায় বাংলাদেশেও প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে। এর ফলে শ্রেণিশিক্ষা কার্যক্রমে ব্যাঘাতসহ শিশুর শিখন যোগ্যতার উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। বিশেষ করে প্রান্তিক শিক্ষার্থীরা যত বেশি সময় বিদ্যালয়ের বাইরে থাকবে, তাদের বিদ্যালয়ে ফেরার সম্ভাবনা ততই কমে যাবে। তাই জনস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে যথাশিঘ্র বিদ্যালয় পুনরায় চালু করা অতীব জরুরি।
পরিপত্রে যেসব প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে:
১. ক্লাসরুমসহ বিদ্যালয়ের পুরো আঙিনা সর্বদা পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা ও জীবাণুমুক্ত করা।
২. বিদ্যালয়ের সমস্ত আসবাবপত্র সার্বক্ষণিকভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা ও জীবাণুমুক্ত করা।
৩. শরীরের তাপমাত্রা পরিমাপক যন্ত্র ‘ইনফ্রারেড থার্মোমিটার’ স্থানীয়ভাবে কিনে রাখা।
৪. সাবান, ব্লিচিং পাউডার ইত্যাদি কিনে রাখা।
৫. ওয়াশব্লক ও টয়লেট সার্বক্ষণিক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা।
৬. হাত ধোয়ার জন্য মগ, জগ ও বালতি কিনে রাখা।
৭. অস্থায়ীভাবে হাত ধোয়ার স্থান নির্ধারণ করে হাত ধোয়ার পানি ও পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা।
৮. পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য শ্রমিকের যৌক্তিক সেবা ক্রয় (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)।
৯. কভিড-১৯ মেয়াদকালে ইন্টারনেট ডাটা ক্রয় (এ খাতে বরাদ্দ না থাকলে)।
১০. বিদ্যালয়ের বরাদ্দকৃত স্লিপ ফান্ড থেকে অগ্রাধিকারভিত্তিতে স্থানীয়ভাবে সাশ্রয়ীমূল্যে উপরে বর্ণিত সামগ্রী বা সেবা কেনা বা সংগ্রহ করা যাবে।
১১. কভিড-১৯ পরিস্থিতিতে জনস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিদ্যালয় পুনরায় চালুর নির্দেশিকার আলোকে স্ব স্ব বিদ্যালয় স্থানীয়ভাবে প্ল্যান গ্রহণ করে তা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করবে।
১২. বিদ্যালয় পর্যায়ে উন্নয়ন পরিকল্পনা (স্লিপ) প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন গাইডলাইনের অনুবৃত্তিক্রমে এ পরিপত্র জারি করা হল এবং তা উক্ত গাইডলাইনের অংশ হিসেবে গণ্য হবে।
পরিপত্রে বলা হয়েছে, উপযুক্ত ব্যয়ের ক্ষেত্রে সরকারের প্রচলিত আর্থিক বিধি-বিধান অবশ্যই প্রতিপালন করতে হবে। পুনরাদেশ না দেয়া পর্যন্ত এ পরিপত্র বলবৎ থাকবে।
পরিপত্রে আরো বলা হয়, কভিড-১৯ পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিদ্যালয় পুনরায় চালুর নির্দেশিকার আলোকে নিজ নিজ বিদ্যালয় স্থানীয়ভাবে পরিকল্পনা করে তা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করবে। এর আগে গত ৩ সেপ্টেম্বর বিদ্যালয় পুনরায় চালুর প্রস্তুতি বিষয়ক নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh