সব শ্রেণিতে এবার লটারির মাধ্যমেই ভর্তি: শিক্ষামন্ত্রী

করোনাভাইরাস মহামারির কারণে এবার সব শ্রেণিতে- প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত- লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

পাশপাশি আগামী ৭ ডিসেম্বরের মধ্যে ভর্তির বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়ে দেয়া হবে। 

মাধ্যমিক পর্যায়ে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তি নিয়ে আজ বুধবার (২৫ নভেম্বর) এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এবার ক্যাচমেন্টে এরিয়া ১০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। অর্থাৎ স্কুলের আশপাশের এলাকার শিক্ষার্থীদের এখন ৫০ শতাংশ ভর্তি করা হবে। এতদিন আশপাশের এলাকার ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থীকে ভর্তি করা হতো। এছাড়া এবার ঢাকা মহানগরের সরকারি মাধ্যমিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয় পছন্দের সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। এতদিন একেকটি গুচ্ছের মধ্যে একটিতে পছন্দ করতে পারত শিক্ষার্থীরা। এখন একটি গুচ্ছের পাঁচটি পছন্দক্রম দিতে পারবে।

তিনি বলেন, স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়ানোর জন্য প্রতি শ্রেণিতে লটারির মাধ্যমে ভর্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যোগ্যতার চাইতে ভাগ্যকে প্রাধ্যান্য দেয়া হচ্ছে।… বাধ্য হয়েই এই পদ্ধতি বেছে নিয়েছি।

তিনি আরো বলেন, তিনটি বিকল্প খতিয়ে দেখেছি। একটি হচ্ছে স্কুলে ভর্তি পরীক্ষা নেয়া। কিন্তু শিক্ষার্থীদের স্কুলে এনে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার ঝুঁকি নিতে চাচ্ছি না। এমসিকিউ পদ্ধতির কথা চিন্তা করেছি, কিন্তু তাতেও শিক্ষার্থীদের স্কুলে আসতে হতো। অনলাইনে ভর্তি পরীক্ষা নেয়া সবার জন্য নিরাপদ হলেও সব শিক্ষার্থীর অনলাইনে ভর্তি পরীক্ষা নিশ্চিত করা কঠিন হবে- তাই এটি যুক্তিযুক্ত মনে হয়নি। সবার ইন্টারনেট অ্যাকসেস নেই, আবার সংযোগেও সমস্যা আছে। তাই লটারির সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

অন্যবার প্রথম শ্রেণিতে লটারির মাধ্যমে এবং দ্বিতীয় থেকে অষ্টম শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হত। আর জেএসসি-জেডিসির ফলের ভিত্তিতে নবম শ্রেণিতে শিক্ষার্থীরা ভর্তি হলেও এবার অষ্টমের সমাপনী পরীক্ষা না হওয়ায় সে সুযোগ নেই।

শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, আগামী ৭ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রথম থেকে নবম শ্রেণিতে ভর্তির পুরো প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানিয়ে দেয়া হবে।

বেসরকারি স্কুলে ভর্তি ফি বাড়ালে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি কথাও জানান তিনি।

এসময় উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মাহাবুব হোসেন, কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের সচিব আমিনুল ইসলাম, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক গোলাম ফারুক, বিভিন্ন শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন।

নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ার কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি চলছে। সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। 

করোনার সংক্রমণের কারণে চলতি বছরের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা, অষ্টম শ্রেণির জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষাও বাতিল করা হয়েছে। সবশেষ এ বছরের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষাও বাতিল করা হয়েছে।