শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বুলিং-র‌্যাগিং বন্ধে আসছে নির্দেশিকা

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বুলিং ও র‌্যাগিং বন্ধে ‘শিক্ষা আইন-২০২১’ এর চূড়ান্ত খসড়ায় বিধান যুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এরফলে আইনের আওতায় প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষার সব প্রতিষ্ঠান বুলিং ও র‌্যাগিং বন্ধ করতে পারবে। 

উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এ বিষয়ে নিজেরাই নীতিমালা বা নির্দেশিকা জারি করবে। আর মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে কলেজ পর্যন্ত ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা অধিদফতর নীতিমালা বা নির্দেশিকা জারি করবে।

এছাড়া প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের নিরাপদ ও শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করার বিধান যুক্ত করা হয়েছে শিক্ষা আইনের চূড়ান্ত খসড়ায়। 

গত মঙ্গলবার (১৬ ফ্রেব্রুয়ারি) শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল বৈঠকে আইনের খসড়া চূড়ান্ত করা হয়।

চূড়ান্ত খসড়ায় নিগ্রহের (বুলিং ও র‌্যাগিং) সংজ্ঞায় বলা হয়, কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষার্থীকে উন্মুক্ত শিক্ষাঙ্গনে, ছাত্রবাবাস/ছাত্রীনিবাসের আবাসিক কোনো শিক্ষার্থীকে একই ছাত্রবাবাস/ছাত্রীনিবাসের শিক্ষার্থী শক্তি প্রয়োগ বা ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে আঘাত করা, মানসিক বা শারীরিক নির্যাতন করা বা যন্ত্রণা দেয়া, লাঞ্ছিত করা, অথবা এমন অশোভন বা অশালীন আচরণ করতে বাধ্য করা বা চেষ্টা করা, যা ওই শিক্ষার্থী অপর শিক্ষার্থী কর্তৃক শক্তি প্রয়োগ বা ভয়-ভীতি প্রদর্শন করা না হলে স্বেচ্ছায় করতেন না।

বুলিং ও র‌্যাগিং বন্ধে ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে আইনের খসড়ায় বলা হয়, শিক্ষার্থীর মাধ্যমে যেকোনো ধরনের নিগ্রহ (বুলিং/র‌্যাগিং) প্রতিরোধে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিগ্রহ (বুলিং/র‌্যাগিং) প্রতিরোধে সরকার সময় সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃক অনুসরণের জন্য নীতিমালা বা নির্দেশিকা করতে পারবে।

আগের খসড়া নীতিমালায়  বলা হয়েছিল- মাধ্যমিক, স্নাতক ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আবাসিক ছাত্রাবাস/ছাত্রীনিবাসে অবস্থানকারী কোনো শিক্ষার্থী যাতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষার্থীরার মাধ্যমে শারীরিক ও মানসিকভাবে নিগ্রহের (বুলিং ও র‌্যাগিং) শিকার না হয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান, শিক্ষক ও কর্তৃপক্ষ তা নিশ্চিত করবে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান, আবাসিক ছাত্রাবাসের দায়িত্বে নিয়োজিত শিক্ষক, প্রাধ্যক্ষ বিষয়টি নিয়মিত পরীবিক্ষণ করবেন। নিগ্রহের কোনো ঘটনা ঘটলে নিগ্রহের শিকার শিক্ষার্থী অচিরেই ঘটনা সংশ্লিষ্ট শিক্ষক ও প্রাধ্যক্ষকে অবহিত করবেন, এর অববহিত পরই সংশ্লিষ্ট শিক্ষক বা প্রাধ্যক্ষ বিহিত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। প্রাধ্যক্ষ সমীচিন মনে করলে নিগ্রহ প্রদানকারী শিক্ষার্থীর অভিভাবককে অবহিত করে সহায়তা চাইবেন।

নিগ্রহের কোনো ঘটনা ঘটলে নিগ্রহের শিকার শিক্ষার্থী ছাড়াও ঘটনা সম্পর্কে অবহিত যে কেউ সংশ্লিষ্ট শিক্ষক বা কর্তৃপক্ষকে প্রকাশ্যে বা গোপনে অবহিত করতে পারবেন। 

মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, শিক্ষা আইনের অধীনে নীতিমালা বা নির্দেশিকায় বুলিং ও র‌্যাগিং প্রতিরোধে বিস্তারিত ব্যবস্থা ও শাস্তির বিষয় নির্ধারিত থাকবে। উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান আইনের আলোকে নীতিমালা বা নির্দেশিকা প্রস্তুত করে প্রতিরোধ ও প্রতিকারের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারবে। 

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //