রোজায় স্কুল খোলা, সব শ্রেণির ক্লাস প্রতিদিন নয়

আগামী ৩০ মার্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেয়া হলেও আপাতত সব শ্রেণিকে একদিনে ক্লাসে আনা হবে না। আর গতবছর শিক্ষার যে ক্ষতি হয়েছে তা কাটিয়ে উঠতে এবছর রোজার সময়ও ক্লাস চালু রাখা হবে।

গতকাল শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকে এ ঘোষণা দেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

তিনি বলেন, প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আমরা আগামী মার্চ মাসের ৩০ তারিখ থেকে খুলে দেবো। তবে উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের দ্বাদশ, মাধ্যমিক পর্যায়ে দশম ও প্রাথমিক পর্যায়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন (সপ্তাহে ছয়দিন) ক্লাস হবে।  

তিনি আরো বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রথম দিকে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ, ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে একদিন ক্লাস অনুষ্ঠিত হবে। নবম ও একাদশ শ্রেণির সপ্তাহে দুইদিন করে ক্লাস হবে। তারপর পরিস্থিতির আরো উন্নতি হলে একটু একটু করে বাড়িয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় শতভাগ ক্লাস চালু হবে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, যদি দেখা যায় টিকার কারণে দেশে একেবারেই সংক্রমণের ঘটনা ঘটছে না, তাহলে আমরা ২/৩ সপ্তাহ পর থেকেই একেবারে স্বাভাবিক ক্লাসে চলে যেতে পারি। আর যদি দেখা যায় সংক্রমণের ঝুঁকি রয়ে গেছে, তাহলে তখন যতদিন প্রয়োজন মনে করবো আমরা করে যাবো।

তিনি বলেন, যারা একাদশ ও নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের গোড়াতেই দুইদিন ক্লাসে চেষ্টা করবো। তারপর হয়তো আরেকটু বাড়ানোর চেষ্টা করবো। কারণ ওরা এ বছর পরীক্ষা না দিলেও আগামী বছর দেবে। কাজেই ওদের অন্যদের চেয়ে বেশি সময় দিতে হবে। 

প্রাক-প্রাথমিক পর্যায় আপাতত খুলছে না জানিয়ে তিনি আরো বলেন, আমরা প্রাক-প্রাথমিককে এখন আনবো না। সেটি আমরা অবস্থা বিবেচনা করে পরে কখন আনবো, সেটি পরে সিদ্ধান্ত নেব। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি শিক্ষকদের জন্য যে করোনাভাইরাসের টিকা দেয়ার কার্যক্রম, তা এর মধ্যে শেষ হবে। 

এবার পুরো রোজায় ছুটি থাকবে না- উল্লেখ করে দীপু মনি বলেন, কারণ একটা বছর তো বন্ধই ছিল। আমরা ছোটবেলায় দেখেছি, রোজার সময় কিন্তু আমরা ক্লাস করতাম। শুধু ঈদের সময় আমাদের একটা ছুটি থাকত। এবারো আমরা সেই রকমই করবো। ছেলেমেয়েরাও এক বছর বাড়িতে থাকতে থাকতে একটু হাঁপিয়ে উঠেছে। আমার মনে হয় না রোজার সময় ওদের স্কুলে আসতে আপত্তি থাকবে। শুধু ঈদের সময় কয়েক দিন ছুটি থাকবে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো খুলে দেয়ার আগেই সংস্কার ও মেরামতের কাজ করবো জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা জানেন- বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্ষেত্রে আমরা বলেছি- ১৭ মে হলগুলো খুলে দেয়া হবে, এর আগেই সংস্কার-মেরামত কাজ করা হবে। আর প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে যে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর, পিডব্লিউডি- এদের সকলের মাধ্যমে মেরামতের কাজগুলো সম্পন্ন করবো।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললে স্বাস্থ্য বিধি যথাযথ মানা হচ্ছে কিনা তা মনিটরিং আরো জোরদারের বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একেবারে তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্যবিধি সঠিকভাবে মানা হচ্ছে কিনা তা দেখবেন। আর আমাদের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যারা মাঠ পর্যায়ে আছেন তারাও এই বিষয়গুলো মনিটর করবেন।

বিশ্বজুড়ে মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে গত বছর মার্চ থেকে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়। গত বছর ৮ মার্চ বাাংলাদেশে প্রথম করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়।

এরপর সংক্রমণ বাড়তে থাকলে ১৭ মার্চ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। কয়েক ধাপে বাড়ানোর পর ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করা হয়। 

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //