১২ থেকে ১৮ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকার আওতায় আনতে জন্মনিবন্ধন করার শর্ত শিথিল করেছে সরকার। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, ২০০১ সালের পর জন্ম নেয়া শিশুর জন্মনিবন্ধনের ক্ষেত্রে পিতা-মাতার জন্মনিবন্ধন নম্বর দিতে হবে না।
বৃহস্পতিবার রাতে রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. ওসমান ভূঁইয়ার সই করা অফিস আদেশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
জানতে চাইলে ডেপুটি রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. ওসমান ভূঁইয়া বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা যাতে দ্রুত জন্মনিবন্ধন করতে পারে এ জন্যই সরকার পিতা-মাতার জন্মনিবন্ধন ছাড়া নতুন জন্মনিবন্ধন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আশা করছি এখন শিক্ষার্থীরা সহজেই জন্মনিবন্ধন করে করোনার টিকার জন্য নিবন্ধন করতে পারবে।’
অফিস আদেশে বলা হয়, সুরক্ষা অ্যাপের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের কোভিড-১৯-এর ভ্যাকসিন প্রদানের জন্য জন্মনিবন্ধন আবশ্যক। ২০০১ সালের পর জন্ম নেয়া শিশুর জন্মনিবন্ধনের ক্ষেত্রে বিডিআরআইএস সফটওয়্যারে পিতা-মাতার জন্মনিবন্ধন নম্বর দেয়ার নিয়ম আছে।
ছাত্র-ছাত্রীদের কোভিড-১৯-এর ভ্যাকসিন প্রদান ও সুরক্ষা অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধনের জন্য পিতা-মাতার জন্মনিবন্ধন ছাড়া শিক্ষার্থীদের জন্মনিবন্ধন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
আরো বলা হয়, ১২-১৮ বছর বয়সী ছাত্র-ছাত্রীদের কোভিড-১৯ টিকার জন্য সুরক্ষা অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন করার জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানের দেয়া সনদের ভিত্তিতে প্রয়োজনে পিতা-মাতার জন্মনিবন্ধন ছাড়া ন্যূনতম সময়ে নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ করা হলো।
দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে টিকা ছাড়া ১২ বছর বয়সী কোনো শিক্ষার্থী স্কুলে যেতে পারবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয় এরই মধ্যে ইনস্ট্রাকশন দিয়ে দিয়েছে যে ভ্যাকসিন ছাড়া ১২ বছরের ওপরে কেউ স্কুলে আসতে পারবে না।
‘ভ্যাকসিন তো এখন গ্রামগঞ্জ পর্যন্ত আমাদের এভেইলেবল আছে। সে জন্যই এটা ইমপোজ করে দেয়া হয়েছে। ভ্যাকসিনে গিয়ে যদি স্কুলে যাওয়া ইজি হয় তাহলে সেটাই সবাই কামনা করে।’
তিনি বলেন, ‘টিকা না নিয়ে কেউ স্কুলে যেতে পারবে না। অন্তত পক্ষে ফার্স্ট ডোজ নিতে হবে। ১২ বছরের নিচে এখনো কাউন্টে আসেনি আমাদের দেশে। বাচ্চাদের নিবন্ধনেরও প্রয়োজন নেই। তারা বার্থ সার্টিফিকেট বা যেকোনো একটি সার্টিফিকেট নিয়ে গেলেই টিকা পেয়ে যাবে।’
গত ১ নভেম্বর পাঠদান কার্যক্রম স্বাভাবিক করতে ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা দেয়া শুরু হয়। শিক্ষার্থীদের দেয়া হচ্ছে ফাইজারের টিকা।
রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে স্কুলশিক্ষার্থীদের টিকা দেয়ার কার্যক্রম উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
কত শিক্ষার্থী টিকা পেয়েছে?
সারা দেশে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত করোনাভাইরাসের টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছে ৪৫ লাখ ৭৮ হাজার ৯৫৮ জন। আর দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছে ৬ লাখ ৭৭ হাজার ৪১৭ জন।
শিক্ষার্থীর সংখ্যা কত
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) থেকে জানা যায়, ঢাকা মহানগরীর ৭৮৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৬ লাখ ১৫ হাজার। আর সারা দেশে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থী আছে ১ কোটি ২৫ লাখ ২ হাজার ১২৬ জন।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর ২০২০ সালের ১৭ মার্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়। এর প্রায় দেড় বছর পর গত ১২ সেপ্টেম্বর স্কুল-কলেজে ক্লাস শুরু হয়। তবে প্রতিদিন সব শ্রেণিতে ক্লাস হয়নি।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
বিষয় : ভ্যাকসিন শিক্ষার্থী টিকা
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh