সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের এমপিও নিয়ে যা জানা গেল

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত অথচ নিয়োগের সময় নন-এমপিও পদে চাহিদা পাঠিয়েছেন প্রতিষ্ঠান প্রধানরা। আবার পদ জেনারেল হলেও চাহিদা দিয়েছেন কারিগরির। এর ফলে এমপিওভুক্ত হতে পারছেন না সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকরা। বিষয়টি নিয়ে একাধিকার এনটিআরসিএকে লিখিতভাবে জানালেও মিলছে না সমাধান। উল্টো সমস্যা সমাধানে দাবি করা হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা।

এনটিআরসিএ বলছে, উপজেলা এবং জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের মাধ্যমে তারা শূন্য পদের তথ্য সংগ্রহ করেছেন। তবে অনেক প্রতিষ্ঠান প্রধান পদের চাহিদার তথ্য ভুল দেওয়ায় বিষয়টি নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে। প্রার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান প্রধানদের শোকজ করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী শিক্ষকরা জানান, তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তিতে এনটিআরসিএর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত শূন্য পদের তালিকা দেখেই তারা আবেদন করেছিলেন। নিয়ম অনুযায়ী আবেদন করলেও যোগদানের পর জানতে পারছেন ওই পদটিতে সমস্যা রয়েছে। ফলে এমপিওভুক্ত হতে পারছেন না তারা। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার এনটিআরসিএতে অভিযোগ করেও কোনো সমাধান হচ্ছে না।

তারা বলছেন, নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠান এবং সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের সমন্বয়হীনতার কারণেই তাদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে এনটিআরসিএকে লিখিতভাবে জানালেও কোনো সমাধান আসেনি। প্রতিষ্ঠান প্রধানরা সমস্যার সমাধান করতে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করছেন।

চুয়াডাঙ্গায় সুপারিশপ্রাপ্ত এক শিক্ষক জানান, আমি ইংরেজি বিষয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছি। আবেদনের সময় আমার পদটি জেনারেল ছিল। তবে যোগদানের পর জানতে পারি পদটি ভোকেশনালে সংযুক্ত। কিন্তু এনটিআরসিএর শূন্য পদের তালিকা, আবেদনপত্র এবং যোগদানপত্রের কোথাও ভোকেশনাল লেখা ছিল না।

তিনি আরও বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমি এনটিআরসিএকে লিখিতভাবে জানিয়েছি৷ তারা প্রতিষ্ঠান প্রধানকে শোকজ করেই চুপ। এখন প্রতিষ্ঠান প্রধান আমার এমপিওভুক্তিতে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেছেন। এই টাকা না দিলে তিনি আমার সমস্যার সমাধান করবেন বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। আমি এই টাকা কীভাবে জোগাড় করবো।

বগুড়ায় সুপারিশপ্রাপ্ত আরেক প্রার্থী জানান, এনটিআরসিএ প্রকাশিত শূন্য পদের তালিকায় আমার পদটি এমপিও ছিল। তবে যোগদানের পর জানতে পারি পদটি নন-এমপিও। আমি পূর্বে একটি এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতাম। তবে সেটি বাড়ি থেকে অনেক দূরে হওয়ায় নতুন করে আবেদন করেছি। এখন আগের প্রতিষ্ঠানে ফেরত যেতে পারছি না। এই অবস্থায় পরিবার নিয়ে চরম বিপাকের মধ্যে রয়েছি।

প্রার্থীদের এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে এনটিআরসিএ সদস্য (পরীক্ষা মূল্যায়ন ও প্রত্যয়ন) এ বি এম শওকত ইকবাল শাহীন বলেন, যে সকল প্রতিষ্ঠান প্রধান ভুল চাহিদা দিয়েছে তাদের শোকজ করা হয়েছে। তবে প্রতিষ্ঠানগুলো এনটিআরসিএ’র আওতাধীন না হওয়ায় সেভাবে কোনো ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না।

প্রার্থীদের সমস্যা সমাধানে এনটিআরসিএ কোনো পদক্ষেপ নেবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, নিয়োগপ্রাপ্তদের এমপিওভুক্তকরণ সহজ করতে আমরা সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের সাথে বৈঠক করেছি। জেনারেল ও কারিগরি পদ নিয়ে যে সমস্যা ছিল সেটি চূড়ান্ত সুপারিশপত্র দেয়ার আগে অনেকেরই ঠিক করে দেয়া হয়েছে। তবে এখন সেটি করার সুযোগ নেই বলেও জানান তিনি।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //