সার্ভার জটিলতায় বাধাগ্রস্থ শিক্ষক প্রশিক্ষণ

জানুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের নতুন শিক্ষাক্রম। শিক্ষকদের এক ঘণ্টার অনলাইন প্রশিক্ষণ দিয়ে নতুন শিক্ষাক্রমের যাত্রা শুরু। তবে সার্ভার জটিলতায় শুরুর দিনেই হাজার হাজার শিক্ষক প্রশিক্ষণ সার্ভারে প্রবেশ করতে পারেননি। এ পরিস্থিতিতে প্রশিক্ষণের জন্য নতুন করে তারিখ নির্ধারণ করা হবে বলে জানিয়েছে এনসিটিবি।

প্রশিক্ষণ নেওয়া শিক্ষকরা জানিয়েছেন, সশরীরে উপস্থিতি ছাড়া এসব প্রশিক্ষণ খুব বেশি কাজে লাগবে না। 

রাজধানীর একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষক আশেকুল ইসলাম রানা বলেন, প্রথম দিনে সার্ভার সমস্যার কারণে অনেকে ঢুকতেই পারেননি। আবার দেখা যাচ্ছে, যখন বাংলা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, তখন অন্য বিষয়ের শিক্ষকরাও সার্ভারে বসে আছেন। এতে মূলত সমস্যা তৈরি হয়েছে।

প্রশিক্ষণের বিষয়ে তিনি বলেন, নতুন শিক্ষাক্রমের বিষয়ে ধারণা মাত্র পেয়েছি। বুঝতে পারছি আগে যেমন শিক্ষকদের লেকচার দিতে হতো, এতে তা থাকছে না। ক্লাসে শিক্ষকদের মূলত মেন্টর হিসেবে কাজ করতে হবে।

সার্ভার জটিলতার বিষয়ে এটুআইর শিক্ষাবিষয়ক এক কর্মকর্তা বলেন, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ বিষয়ভিত্তিকভাবে সারা দিনই দেওয়া হচ্ছে। সার্ভারে যখন এক লাখের বেশি মানুষ প্রবেশ করে, তখন সমস্যা তৈরি হয়। তবে সকালের পর থেকে সমস্যার সমাধান করা গেছে। ন্যাশনাল ডেটাবেজ সেন্টারের অধীনের সার্ভারে এ কার্যক্রম চলছে। প্রয়োজন অনুযায়ী সার্ভারের সক্ষমতাও বাড়াতে হবে।

গতকাল শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় ১ ঘণ্টার বাংলা বিষয় দিয়ে প্রশিক্ষণ শুরু হয়। এর পর ধর্ম, ইংরেজি, স্বাস্থ্যশিক্ষা, গণিত, শিল্প-সংস্কৃতি, জীবন জীবিকার এক অংশ, ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞানের একটি অংশ নিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। বাকি বিষয়ে আজ রোববার প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা।

মাউশির পরিচালক (প্রশিক্ষণ) ড. প্রবীর কুমার ভট্টাচার্য্য বলেন, প্রশিক্ষণের শুরুতে সার্ভারে সমস্যা হয়েছিল। এর পর সারা দিনই শিক্ষকরা প্রশিক্ষণ নিয়েছেন অনলাইনে। বেশি সমস্যা হলে প্রশিক্ষণের দিন বাড়ানো হতে পারে।

প্রাথমিক শিক্ষকদের প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, মাধ্যমিক শিক্ষকদের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষকদের তাদের সংশ্নিষ্ট দুই অধিদপ্তর এ প্রশিক্ষণ দিচ্ছে।

নামমাত্র পাঁচ দিনের প্রশিক্ষণ দিয়েই আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রমে পড়াশোনা শুরু করতে যাচ্ছে শিক্ষা প্রশাসন। ‘শিক্ষাক্রম বিস্তরণ প্রশিক্ষণ’ নামের ওই কর্মসূচিতে সারাদেশের সাড়ে ৪ লাখ শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রশিক্ষণের জন্য স্কুলগুলোতে শিক্ষকদের শীতকালীন ছুটি বাতিল করা হয়েছে।

এই প্রশিক্ষণ এনসিটিবি, মাউশি ও ইন্সপায়ার টু ইনোভেশনের (এটুআই) সমন্বয়ে হচ্ছে। কারিগরি বিষয়টি দেখভাল করছে এটুআই। কন্টেন্ট সরবরাহ করেছে এনসিটিবি এবং প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে মাউশি।

এনসিটিবি সদস্য (শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক মশিউজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, প্রশিক্ষণের জন্য অনেক শিক্ষক তালিকাভুক্ত হননি। তাই আগামী ২৮ ডিসেম্বর থেকে প্রশিক্ষণের সার্ভারটি সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া যেসব শিক্ষক যুক্ত হননি, তাদের শনাক্ত করে জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে। সার্ভার জটিলতার বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। আজ থেকে এ সমস্যা থাকবে না।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //