শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বুলিং ও র‌্যাগিং প্রতিরোধে নীতিমালা জারি

দেশের যে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক, অশিক্ষক, কর্মচারী ও শিক্ষার্থী প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে বুলিং ও র‌্যাগিংয়ে জড়িত থাকলে প্রচলিত আইন অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

গত মঙ্গলবার (২ মে) এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে নীতিমালা জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। যা দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য প্রযোজ্য হবে। এ ক্ষেত্রে র‌্যাগিংয়ে জড়িত ব্যক্তিদের ফৌজদারি আইনে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, এই নীতিমালা ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বুলিং ও র‌্যাগিং  প্রতিরোধসংক্রান্ত নীতিমালা-২০২৩’ নামে অভিহিত হবে। 

এতে আরও বলা হয়, এই নীতিমালা দেশের অভ্যন্তরে অবস্থিত সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রযোজ্য হবে। জনস্বার্থে এই নীতমালা জারি করা হয়েছে এবং অবিলম্বে তা কার্যকরা হবে।

প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডির সভাপতি বা সদস্যরা র‌্যাগিংয়ে জড়ালে তাদের বিরুদ্ধেও আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে এ নীতিমালা প্রকাশ করা হয়েছে। নীতিমালাটি বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন অধিদপ্তর, শিক্ষাবোর্ডসমূহ, মঞ্জুরি কমিশন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে পাঠানো হয়েছে।

বুলিং ও র‌্যাগিং প্রতিরোধে কর্তৃপক্ষ ও কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানের করণীয় সম্পর্কে নীতিমালায় বলা হয়েছে, বুলিং ও র‌্যাগিংকে উৎসাহিত করা হয়, এরূপ কোনো কার্যকলাপ, সমাবেশ বা অনুষ্ঠান করা যাবে না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের যেসব জায়গায় বুলিং ও র‌্যাগিং হওয়ার আশঙ্কা থাকে, সেসব জায়গায় কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের মাধ্যমে নজরদারির ব্যবস্থা করবে।

প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তিন থেকে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট বুলিং ও র‌্যাগিং প্রতিরোধ কমিটি করতে হবে। কোনো শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষার্থী, এমনকি পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের বিরুদ্ধে এসংক্রান্ত অভিযোগ পাওয়া গেলে, প্রচলিত বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে।  প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ফৌজদারি আইনে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

বুলিং ও র‌্যাগিংয়ের উদাহরণ এবং পরিণতি সম্পর্কে কর্তৃপক্ষ তাদের ওয়েবসাইটে এবং প্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গণে পোস্টারের মাধ্যমে প্রচারণা চালাবে। 

শিক্ষাবর্ষের শুরুতে একদিন ‘বুলিং ও র‌্যাগিং  প্রতিরোধ দিবস’ পালন করে বুলিং ও র‌্যাগিংয়ের কুফল সম্পর্কে কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সচেতন করবে।

বুলিং ও র‌্যাগিংয়ের কুফলসম্পর্কিত সিনেমা, কার্টুন, টিভি সিরিজ  প্রদর্শন, অনলাইনে দায়িত্বশীল আচরণের ব্যাপারে অনলাইন বিহেভিয়ার সম্পর্কিত কর্মশালা ইত্যাদিসহ সহপাঠ্যক্রমিক কর্মশালা আয়োজনের নিমিত্তে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে। কর্তৃপক্ষ বুলিং ও র‌্যাগিং  প্রতিরোধে শিক্ষার্থীদের ‘এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাকটিভিটিজ’-এ অংশগ্রহণের ব্যবস্থা করবে।

বুলিং ও র‌্যাগিং নীতিমালা বাস্তবায়নে প্রতিষ্ঠান প্রধানগণ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ এবং শিক্ষা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ নিয়মিত বুলিং ও র‌্যাগিং বিষয়ে পরীক্ষণ করবেন এবং নীতিমালা  বাস্তবায়নে সহযোগিতা করবেন।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //