জাতীয়করণের দাবিতে ধর্মঘটে যাচ্ছেন শিক্ষকরা

মাধ্যমিক পর্যায়ের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো জাতীয়করণের দাবিতে টানা তিনদিনের ধর্মঘটসহ লাগাতার কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বিটিএ)। 

আগামী ১১ জুন থেকে ১৩ জুন পর্যন্ত পর্যন্ত বেসরকারি মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মঘট পালন করা হবে। এছাড়া আগামী ১৩ জুন প্রত্যেক জেলা সদরে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ, ১৪ জুন থেকে ২০ জুনের মধ্যে জেলায় জেলায় মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।  

আজ মঙ্গলবার (৬ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিটিএ’র সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদ। 

২০২৩-২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট পাসের আগেই জাতীয়করণের সুনির্দিষ্ট ঘোষণা চান মাধ্যমিক পর্যায়ের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মরত শিক্ষকরা। অন্যথায় আগামী ১১ জুলাই থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।

লিখিত বক্তব্যে বিটিএ’র সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদ বলেন, দেশের সিংহভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালিত হচ্ছে এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীর দ্বারা। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, আমরা এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা মাত্র এক হাজার টাকা বাড়িভাড়া, ২৫ শতাংশ উৎসব ভাতা এবং ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পাই। অথচ একই কারিকুলামের অধীনে একই সিলেবাস, একই অ্যাকাডেমিক সময়সূচি, একইভাবে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও উত্তরপত্র মূল্যায়নের কাজে নিয়োজিত থেকেও আর্থিক সুবিধার ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে রয়েছে পাহাড়সম বৈষম্য। 

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠান প্রধানদের বেতন স্কেল সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠান প্রধানদের বেতন স্কেলের একধাপ নিচে দেওয়া করা হয়। তাছাড়া সহকারী প্রধান শিক্ষকদের উচ্চতর স্কেল না দেওয়ায় উচ্চতর স্কেলপ্রাপ্ত সিনিয়র শিক্ষকদের বেতন স্কেল ও সহকারী প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেল সমান হওয়ায় সহকারী প্রধান শিক্ষকদের মধ্যে দীর্ঘদিনের অসন্তোষ রয়েছে। 

বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসরে যাবার পর অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা পেতে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনেক শিক্ষক/কর্মচারী টাকা পাওয়ার আগেই অর্থের অভাবে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করছেন। কয়েক বছর যাবৎ কোনো প্রকার সুবিধা না দিয়েই অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্ট খাতে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন থেকে অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কর্তন করা হচ্ছে যা অত্যন্ত অমানবিক। তাই অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কর্তনের প্রতিবাদে আমরা মানববন্ধন ও কল্যাণ ট্রাস্ট অফিস ঘেরাও করতে বাধ্য হয়েছিলাম। পরিতাপের বিষয় আমরা কোনো প্রতিকার পাইনি। 

তিনি বলেন, এক ধাপে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে জাতীয়করণ করতে হবে সেটা আমরা চাই না। আমরা চাই জাতীয়করণের ঘোষণা। এরপর ধাপে ধাপে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে জাতীয়করণ করলেও চলবে। 

সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সভাপতি অধ্যক্ষ মো. বজলুর রহমান মিয়া, সিনিয়র সহ-সভাপতি আবুল কাশেম, সিনিয়র সদস্য রঞ্জিত কুমার সাহা প্রমুখ।

এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি আলী আসগর হাওলাদার, বেগম নুরুন্নাহার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবু জামিল মো. সেলিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ইকবাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন প্রমুখ। 

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //