শিক্ষার্থী মৃত্যুর দায় কার প্রশ্ন ভিসির

বনভোজনে যাওয়ার পথে দ্বিতল বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে গাজীপুর ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়ের (আইইউটি) তিন শিক্ষার্থীর মৃত্যুর দায় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন উপাচার্য অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম খান। 

আজ শনিবার দুপুরে (২৩ নভেম্বর) ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আহত এবং নিহতদের দেখতে এসে তিনি বলেন, এটি অত্যান্ত মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। রাস্তায় বের হলে যদি এরকম হয়, তাহলে এ দায়িত্বটা কার? আমি আসলে কাউকে সরাসরি দায়ী করতে চাই না। ছাত্ররা বাহিরে যাবে এটাই স্বাভাবিক, পিকনিকে যাবে তাও স্বাভাবিক। একটা ছেলে গাড়িতে বসে বা দাঁড়িয়ে থেকেও যদি তার জীবনের নিরাপত্তা না থাকে তাহলে কি করবে? এটা তো এমন দুর্ঘটনা না যে মুখোমুখি সংঘর্ষ কিংবা বাসটা উল্টে পড়ে গিয়েছে। তিনি গাড়িতেই আছেন কিন্তু বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা গেছেন তাহলে বুঝতেই পারছেন দায়-দায়িত্ব কার। আর যেন এভাবে প্রাণ না যায় ভবিষ্যতে রাস্তা-ঘাট যেন ক্লিয়ার থাকে, তার যেন যথেষ্ট উচ্চতায় থাকে এবং সেগুলো যেন লিকেজ না থাকে কর্তৃপক্ষকে নজর রাখতে হবে। 

সরু সড়কে দ্বিতল বাস চলার অনুমতি ছিল কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ভিসি আরও বলেন, যারা পিকনিকের আয়োজন করেছে তারা কেন দ্বিতল বাস নিল এবং সে রাস্তায় তা চলাচলে অনুমতি ছিল কি না তা আমার জানা নেই। এটা তো ভালো জানার কথা বিআরটিসির, কারণ তারা বাস ভাড়া দেয়। বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হবে। 

শনিবার সকাল ৮টার দিকে গাজীপুরের ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির মেকানিক্যাল এন্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ৬টি দ্বিতল বাসে করে রওনা দেয় শ্রীপুরের মাটির মায়া রিসোর্টের উদ্দেশ্যে। পরে জৈনা বাজার এলাকায় রিসোর্টে যাওয়ার সরু সড়কে প্রবেশের সময় বিদ্যুৎ লাইনে লেগে বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই মীর মোজাম্মেল নাঈম (২৩), জোবায়ের আলম সাকিব (২২) ও মুবতাছিন রহমান মাহীন (২২) গুরুতর আহত হয়। তাদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনার পথেই মারা যায় বলে জানিয়েছেন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. গোলাম ফেরদৌস। 

এর মধ্যে মীর মোজাম্মেল নাঈম ফেনীর মাস্টারপাড়া এলাকার মোতাহার হোসেনের ছেলে, জোবায়ের আলম রাজশাহীর রাজপাড়া ডিঙ্গাবো এলাকার জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে ও মুবতাছিন রহমান মাহীন রংপুর সদরের ইমতিয়াজুর রহমানের ছেলে। 

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. গোলাম ফেরদৌস বলেন, আহত মিরপুর কাজীপাড়া এলাকার কাবিদুল ইসলাম আলিফ (২২) ও ঢাকার কামরাঙ্গীরচর এলাকার নাফিজ আলম খানকে (২২) বিকেলে ঢাকার আহসানিয়া মিশন হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। 

ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক মোহতাসিম মাশফি বলেন, পিকনিকের আনন্দময় যাত্রা মুহুর্তেই পরিণত হয় বিষাদে। এমনটি আমাদের কাম্য ছিল না। আমি যেটুকু শুনেছি যখন ছাত্ররা বাসের হ্যান্ডেল ধরে ছিল তখন সেটা বিদ্যুতায়িত হয়ে মাহিন আহত হলে তাকে বাঁচাতে গিয়ে সাকিবও আহত হয়। নাঈমের বিষয়টি আমার জানা নেই। এমন মৃত্যু আমরা কিভাবে মেনে নেব? এটা তো আজকে হওয়া কথা ছিল না। 

সন্ধ্যার পর নিহতদের লাশ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হিমঘর থেকে স্বজনদের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh