হিন্দু শিক্ষার্থীকে খাসির বদলে গরুর কলিজা, দোকানের বরাদ্দ বাতিল

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) বটতলায় খাবারের দোকানে এক হিন্দু শিক্ষার্থীকে খাসির কলিজার জায়গায় গরুর কলিজা পরিবেশন করায় খাবারের দোকানে ভাঙচুর ও দোকান মালিককে মারধর করেছেন হিন্দু শিক্ষার্থীরা। এক পর্যায়ে তাদের দাবির মুখে ওই দোকানের বরাদ্দ বাতিল করে তালা ঝুলিয়ে দেয় হল কর্তৃপক্ষ।  

গতকাল বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকার ‘রাঁধুনী হোটেল ও রেস্টুরেন্টে’ এ ঘটনা ঘটে। 

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী বিশ্বজিৎ বড়াল (বোটানি ৫১ ব্যাচ) বলেন, ‘আমাকে খাসির কলিজা বলে গরুর কলিজা খাওয়ানো হয়েছে৷ এটা আমার ধর্মে বারণ বা পাপ। এ কাজ করে দোকানদার গুরুতর অন্যায় করেছে। তাকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।’

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দুপুর আড়াইটায় বান্ধবীকে নিয়ে ‘রাঁধুনী হোটেলে’ আসেন বোটানি ৫১ ব্যাচের শিক্ষার্থী বিশ্বজিৎ বড়াল। তিনি দোকানের কর্মচারী ফারুককে খাসির কলিজা দিতে বলেন। কিন্তু কর্মচারী ভুলবশত গরুর কলিজা পরিবেশন করে এবং শিক্ষার্থী বুঝতে পারে- এটা গরুর কলিজা। তাৎক্ষণিক তিনি দোকান মালিক রিপনকে জিজ্ঞেস করলে এ বিষয়ের সত্যতা পান। পরে বিশ্বজিতের ডাকে হিন্দু শিক্ষার্থীরা এসে দোকানের খাবারের গামলা নিচে ফেলে দেয় ও প্লেট ভাঙচুর করে। এসময় প্রক্টরের সামনেই রনি চন্দ্র নামে ৪৯ ব্যাচের এক শিক্ষার্থী দোকান মালিক রিপনকে মারধর করেন৷ 

ঘটনাস্থলে উপস্থিত বোটানি ৪৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী শুভ সরকার বলেন, ‘গত কয়েক দিন আগেও রফিক জব্বার হলের পাশে ‘সাদেকের দোকানে’ এরকম ঘটনা ঘটেছে । তারপরও তাদের শিক্ষা হয় না। ২০ মিনিটের মধ্যে প্রক্টর এখানে না এলে আমরা দোকান গুঁড়িয়ে দেব। দোকান মালিক ও স্টাফকে পুলিশে দিতে হবে ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। ’

দোকান মালিক রিপন বলেন, ‘এটা অনেক বড় একটা ভুল কাজ হয়ে গেছে। আমার স্টাফের আসলে জিজ্ঞেস করা উচিত ছিল- ভাই কি খেতে চায়। এটা নিশ্চিতভাবে একটা বড় ভুল। আমি ভাই আর আপুর হাতে পায়ে ধরে মাফ চেয়েছি। বলেছি, আর কখনো এমন হবে না৷ কিন্তু তারা তবুও আমার কথা শুনছে না। দোকান বন্ধ করে দিলে আমি চলতে পারব না। এই দোকানের ওপর আমার পুরো পরিবার নির্ভরশীল।’

ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে প্রক্টর রাশিদুল আলম বলেন, ‘দোকানটা কামালউদ্দিন হলের অধীনে। আমি একই সাথে কামাল উদ্দিন হলের প্রভোস্ট হিসেবে রিপন মিয়ার দোকানের বরাদ্দ বাতিল করলাম। তার দোকান এখন থেকেই তালাবদ্ধ থাকবে৷ পরবর্তীতে সে এসে মালামাল নিয়ে যাবে।’

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2025 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh