অস্ট্রেলিয়ায় উচ্চশিক্ষা নিয়ে যে ভুল ধারণাগুলো রয়েছে

উচ্চশিক্ষার লক্ষ্যে বাংলাদেশের বহু শিক্ষার্থী অস্ট্রেলিয়ায় যেতে আগ্রহী। অনেকেই কিছু ভুল ধারণা নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশ করেন। অস্ট্রেলিয়া সম্পর্কে তেমনই কিছু ভুল ধারণা নিয়ে আজকের আলোচনা। 

ভিসা পাওয়া সহজ

অস্ট্রেলিয়ায় ‘স্টুডেন্ট ভিসা’ পাওয়া অনেক সহজ আর খরচও কম, মনে হতেই পারে। কিন্তু বাস্তবে এমনটি মোটেই নয়। একসময় অনেক সাধারণ কলেজের ডিপ্লোমা কোর্সেও স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়া যেত। এখন কিছু বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া শিক্ষার্থী ভিসা পাওয়ার হার কম। গত বছর আবেদনকারীর প্রায় ৩০ শতাংশ বাংলাদেশি ভিসা পাননি। শিক্ষার্থী ভিসার খরচ অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি অস্ট্রেলিয়ায়। প্রাথমিকভাবে ভিসা নিয়ে একজন শিক্ষার্থীর অস্ট্রেলিয়ায় পৌঁছাতেই প্রায় ১০ লাখ টাকা খরচ হয়ে যায়। 

পড়াশোনার পাশাপাশি অনেক আয় 

অস্ট্রেলিয়ায় শিক্ষার্থী ভিসায় অবস্থানকারীরা নিয়মানুযায়ী সপ্তাহে সর্বোচ্চ ২৪ ঘণ্টা কাজ করতে পারেন। ঘণ্টাপ্রতি আয় ২৪ অস্ট্রেলীয় ডলার। অর্থাৎ বৈধভাবে একজন শিক্ষার্থী মাসে প্রায় এক লাখ ৭০ হাজার টাকা আয় করতে পারেন। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার সরকারি হিসাব অনুযায়ী টিউশন ফি ছাড়াই একজন শিক্ষার্থীর মাসিক খরচ এক লাখ ৮০ হাজার টাকার বেশি। অস্ট্রেলিয়ার সরকার বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য এমনভাবে প্রক্রিয়াটি সাজিয়েছে, বিদেশি শিক্ষার্থীরা যেন নিজ দেশ থেকে টাকা এনে অস্ট্রেলিয়ায় খরচ করে। তাই কেউ যদি মনে করে অস্ট্রেলিয়ায় পড়তে এসে অনেক টাকা রোজগার করে নিজের ব্যয় সামলে দেশেও পাঠাবে তাহলে ভুল করবে।

স্থায়ী বাসিন্দা হওয়া সহজ

দক্ষ পেশাজীবীর চাহিদার তালিকা আছে অস্ট্রেলিয়ায়। অনেকে মনে করেন এই তালিকায় থাকা পেশাসম্পর্কিত বিষয় নিয়ে পড়াশোনা শেষ করলেই অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ী হওয়া যাবে, অন্তত স্থায়ী বাসিন্দার ভিসায় আবেদন করা যাবে। তবে শিক্ষার্থী ভিসার সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার তেমন কোনো সম্পর্ক নেই। অস্ট্রেলিয়ায় সবচেয়ে জনপ্রিয় কাজের ভিসা হলো ‘সাবক্লাস ৪৮২ স্কিল ইন ডিমান্ড ভিসা’। এই ভিসা থেকে ‘সাবক্লাস ১৮৬’ ভিসার মাধ্যমে কেউ অস্ট্রেলিয়ার স্থায়ী বাসিন্দা হতে পারেন। কিন্তু বাস্তবে এটি এত সহজ নয়।

নিশ্চিন্ত জীবনযাত্রা

অস্ট্রেলিয়া উন্নত দেশ, এখানে জীবনযাপনে অনেক সুযোগ-সুবিধা রয়েছে, এটা ঠিক। কিন্তু উচ্চ ব্যয়, সাংস্কৃতিক পার্থক্য এবং কাজ ও পড়াশোনার চাপ অনেক বাংলাদেশি শিক্ষার্থীকে হতাশায় ফেলে। এখানে গরমের দিনে ৪০ ডিগ্রির ওপর তাপমাত্রা থাকে আবার শীতে ১০ ডিগ্রির নিচে ঠান্ডা নামে- ফলে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের আবহাওয়ার  সঙ্গে মানিয়ে নেওয়াও একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। অভ্যস্ত হতে একটু সময় লাগেই। আর অস্ট্রেলিয়ান ডলারে জীবনযাপনের খরচ মিটিয়ে বাংলাদেশের টাকায় আয়-ব্যয়ের হিসাব মেলাতে গেলে দুশ্চিন্তা বাড়তেও পারে!

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2025 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh