গাইবান্ধা-৫ উপনির্বাচন

অনিয়মে জড়িত নির্বাচনী কর্মকর্তাদের শাস্তি হবে: ইসি

গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে যেসব কর্মকর্তা অনিয়মের সাথে জড়িত ছিলেন, তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর। এক্ষেত্রে অপরাধের ধরন অনুযায়ী চাকরিচ্যুতিও হতে পারে বলে তিনি জানান।

আজ মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। 

ইসি সূত্রে জানা যায়, গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনের অনিয়ম তদন্তে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটি তদন্তের জন্য বর্তমানে গাইবান্ধায় অবস্থান করছেন। তারা ভোটের দায়িত্বরত কর্মকর্তাসহ ৬৮৫ জনের শুনানি করবে।

‘গাইবান্ধায় ভোট বন্ধ করে দেওয়া আইওয়াশ’—এমন সমালোচনা প্রসঙ্গে মো. আলমগীর বলেন, ইসি কারও পক্ষে বা বিপক্ষে নয়। নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করাই ইসির দায়িত্ব। নির্বাচন যতক্ষণ না সুষ্ঠু হবে, ততক্ষণ নির্বাচন বাতিল করে নতুন নির্বাচন করা হবে।

গাইবান্ধার উপনির্বাচনের পুরো চিত্র তুলে ধরে নির্বাচন কমিশনার বলেন, ভোট শুরুর পরপরই তিনটা কক্ষে দেখি যে, এজেন্টরা গোপন কক্ষে গিয়ে চাপ দিয়ে দেন। আমরা ক্যামেরায় দেখে প্রিসাইডিং অফিসারকে ফোন করি। আমরা পেছনে দেখতে বলি, উনি কেন জানি সামনের দিকে যান। যখন ডানে যেতে বলি, উনি তখন  বামে যাচ্ছেন। এটা আমাদের কাছে আশ্চর্য লেগেছে।

গোপন কক্ষের অবৈধ ব্যক্তিকে আইনে সোপর্দ করতে বলি, প্রিসাইডিং কর্মকর্তা তা করেননি বলে উল্লেখ করেন এই কমিশনার। তিনি বলেন, পরপর তিনটা কেন্দ্রে এমন হলো। তারা কোনো ব্যবস্থাও নিলেন না এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তাও নিলেন না। এরপর কেন্দ্র তিনটি বন্ধ করলাম। অন্যান্য কেন্দ্রের পরিস্থিতিও সিসি ক্যামেরায় দেখা শুরু করলাম। তখন যেটাই দেখি, দেখি একই অবস্থা, একই দৃশ্য।

ওই সব অনিয়মের ঘটনার তদন্ত চলছে জানিয়ে মো. আলমগীর বলেন, প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা কি স্বেচ্ছায় এসব অনিয়ম করেছেন, নাকি কোনো চাপে পড়ে করেছেন, নাকি সহযোগিতা চেয়েও পাননি—এসব বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তে যদি প্রমাণ হয় স্বেচ্ছায় এমনটি করেছেন, শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার সুযোগ থাকলেও কেউ সে সুযোগ নেননি, তাহলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, ইসি তাদের দুই মাস পর্যন্ত সাময়িক অব্যাহতি দিতে পারে। এ ছাড়া অপরাধী কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সুপারিশ করতে পারে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এটি বাস্তবায়ন করে ইসিকে জানাতে হবে।

অনেক নির্বাচনি কর্মকর্তা সুষ্ঠু ভোট হয়েছে বলে লিখিত দিয়েছেন, তাদের বিষয়ে এই কমিশনার বলেন, প্রিসাইডিং কর্মকর্তার বক্তব্য দেওয়ার একটা ফরম আছে। আমাদের কাছে কিছু পাঠাননি। কার কাছে কী দিয়েছেন, সেটা আমরা জানি না। আইনগতভাবে এটা না দেওয়ার কোনও সুযোগ নেই। তদন্ত হলেই বেরিয়ে আসবে কে দিলো, কাকে দিলো। এরপর আমরা দেখবো। ন্যায় করলে তো সমস্যা নেই, অন্যায় করলে তো সমস্যা হতে পারে।

জাতীয় নির্বাচনে সিসিটিভি ক্যামেরার ব্যবহার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রায় ৪২ হাজার কেন্দ্র হবে, সেখানে প্রায় আড়াই লাখ বুথ হবে। ফলে আড়াই লাখ ক্যামেরা ব্যবহার হতে পারে।

নতুন ইভিএম কেনার প্রকল্পের বিষয়ে জানতে চাইলে এই কমিশনার বলেন, প্রজেক্ট পাস করার দায়িত্ব প্ল্যানিং কমিশনের। তারা যদি যথাসময়ে এটি পাস করে, তাহলে ব্যবহার করা যাবে। কারণ এর সঙ্গে ট্রেনিং জড়িত। যথাসময়ে না আসলে এই মেশিন কোনও কাজে আসবে না।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ব্যালট ও ইভিএম দুই ক্ষেত্রেই ডাকাতি আছে। তবে ইভিএমে ভোটার উপস্থিত হতে হবে। তাই উপস্থিত ভোটারের থেকে বাড়তি ভোট দেওয়ার কোনো সুযোগ থাকে না। এটাই ইভিএমের বিশেষত্ব।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //