নির্বাচনি সংলাপ
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আবারও সংলাপের উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামীকাল শনিবার (৪ নভেম্বর) সকালে নির্বাচন ভবনে এ সংলাপ হওয়ার কথা রয়েছে।
ইসি সূত্র জানিয়েছে, দেশে মোট ৪৪টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল রয়েছে। সংলাপে সেসব দলের শীর্ষ নেতা বা তাদের মনোনীত প্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। দলগুলোর মধ্যে বিএনপি ইতিমধ্যে সংলাপে বর্জনের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে।
সংলাপ আয়োজনের পরিকল্পনা করা হয়েছে দুটি স্লটে। সকালের অধিবেশন সকাল সাড়ে ১০টায় এবং বিকেলের অধিবেশন ৩টায় হবে। প্রতি অধিবেশনে ২২টি দল অংশ নেবে। প্রত্যেক দল থেকে দুটি করে প্রতিনিধি দলকে সংলাপে অংশ নিতে অনুরোধ করেছে ইসি। এর আগে গত বছরের জুলাইয়ে ইসি ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপ হয়। তবে ওই সংলাপে বিএনপিসহ ৯টি দল অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
বিএনপি ছাড়াও তাদের জোটের আরও কয়েকটি দল সংলাপে যাওয়ার আগ্রহ নেই বলে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে। এদের মধ্যে লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এলডিপি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, কল্যাণ পার্টি, জেএসডি রয়েছে।
এদিকে কোনো জোটে না থাকলেও সংলাপে অংশ নিচ্ছে না বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। ইসলামিক দলগুলোর মধ্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস সংলাপে যাবে না। জাতীয় পার্টি (জাপা) সংলাপে যাবে কিনা তা এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
অপরদিকে আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া সাংবাদিকদের জানান, দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লেফট্যানেন্ট কর্নেল (অব.) ফারুক খান এবং তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদ ইসির সংলাপে অংশগ্রহণ করবেন।
সংলাপে যাবে জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টিসহ ১৪ দলের শরিকরা। একই সিদ্ধান্ত নিয়েছে গণফোরাম ও বিকল্পধারা।
অংশগ্রহণের তালিকায় রয়েছে তৃণমূল বিএনপি, এনপিপি, বাংলাদেশ ন্যাপ ও নতুন নিবন্ধিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম), ইসলামী ঐক্যজোট, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, জাকের পার্টি ও বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট।
সংলাপ আয়োজনের প্রস্তুতির সময় নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর বলেছিলেন, জাতীয় নির্বাচন নিয়ে প্রস্তুতির বিষয়ে জানাতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের আয়োজন করা হয়েছে। নিবন্ধিত দলগুলোকে দুভাগে সংলাপের জন্য ডাকা হয়েছে।
সংবিধান অনুযায়ী সংসদের পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে ৯০ দিনের মধ্যে সংসদ নির্বাচন হতে হবে। বর্তমান সংসদের মেয়াদ শেষ হবে আগামী ২৯ জানুয়ারি। হিসাব অনুযায়ী, আজ ১ নভেম্বর থেকেই জাতীয় নির্বাচনের ক্ষণ গণনা শুরু হচ্ছে। সে অনুযায়ী, এ মাসের মাঝামাঝি সময়ে তপশিল ঘোষণা এবং জানুয়ারির প্রথম দিকে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে কমিশন।
দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই গত বছরের জুলাইয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের উদ্যোগ নেয় কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন বর্তমান কমিশন। সরকার সমর্থিত দলগুলো অংশ নিলেও বিএনপি নেতৃত্বাধীন সরকারবিরোধী দলগুলো সে সংলাপ বর্জন করে। সম্প্রতি বিএনপিকে আবারও সংলাপের আমন্ত্রণ জানানো হলে দলটি পুনরায় ইসির আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করে।
নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা কেমন হবে তা নিয়ে দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। বিএনপি চায় নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই নির্বাচন হতে হবে। দাবি আদায়ে সমাবেশ, মহাসমাবেশ এমনকি হরতাল ও অবরোধের মতো কর্মসূচি দিয়ে মাঠে রয়েছে দলটি। অন্যদিকে বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যাপারে অনড় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
বিষয় : নির্বাচন ইসি সংলাপ নির্বাচন কমিশন
© 2023 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh