চাকরিটা আমি পেয়ে গেছি, বেলা, শুনছ
এখন আর কেউ আটকাতে পারবে না
সম্বন্ধটা এই বার তুমি ভেস্তে দিতে পারো
মাকে বলে দাও বিয়ে তুমি করছ না-
অঞ্জন দত্তের জনপ্রিয় এই গানটিতে চাকরি নামের সোনার হরিণ পাওয়ার আনন্দ ও উত্তেজনার বিষয়টি উঠে এসেছে। এখানে চাকরি হওয়ায় বেলার সাড়া পাওয়াটা ছিল প্রায় নিশ্চিত। তবে যদি বলা হতো, চাকরিটা আমি ছেড়ে দিয়েছি বেলা শুনছো-তাহলে বেলার সাড়া পাওয়া তো দূরের কথা, সে হয়তো কথাটা কানেই তুলত না।
তবে এখন সময় বদলে গেছে। চাকরি ছেড়েও বর্তমানে ভালো কিছু করার উদাহরণ ভূরি ভূরি। দেশের বিপুলসংখ্যক তরুণের অনেকেই চাকরি খোঁজার পরিবর্তে অথবা চাকরি ছেড়ে দিয়ে নিজের দক্ষতা, যোগ্যতা ও উদ্ভাবনী শক্তি কাজে লাগাচ্ছেন। উদ্যোক্তা হয়ে নিজেই নিজের কর্মসংস্থান তৈরি করছেন। চাকরি ছেড়ে উদ্যোক্তা হওয়া নিঃসন্দেহে কঠিন সিদ্ধান্ত, তবে এর মধ্য দিয়ে ব্যক্তিগত উন্নতি, স্বাধীনতা এবং নতুন সুযোগের সন্ধান মেলে। উদ্যোক্তা হওয়ার পেছনে আরও অনেক কারণ রয়েছে।
চলুন জেনে নেওয়া যাক-
১. স্বাধীনতা ও আত্মনির্ভরতা : উদ্যোক্তা হলে আপনি নিজের সিদ্ধান্ত নিজেই নিতে পারেন। নিজস্ব ব্যবসার দিকনির্দেশনা, সময়সূচি এবং কৌশল ঠিক করার স্বাধীনতা পেয়ে থাকেন, যা চাকরিতে সাধারণত সম্ভব নয়।
২. স্বপ্ন ও আবেগের অনুসরণ : অনেক মানুষ নিজের স্বপ্ন পূরণের জন্য উদ্যোক্তা হন। যদি কারও একটি নির্দিষ্ট ধারণা বা প্রকল্প নিয়ে আগ্রহ থাকে, তবে তিনি নিজস্ব উদ্যোগে কাজ করার মাধ্যমে সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারেন।
৩. আর্থিক উন্নতির সম্ভাবনা : উদ্যোক্তা হয়ে সফল হলে চাকরির তুলনায় আয় অনেক বেশি হতে পারে। উদ্যোক্তা হিসেবে আপনি ব্যবসার লাভের পুরোটাই উপভোগ করতে পারেন, যা চাকরিতে সম্ভব নয়।
৪. সৃজনশীলতার প্রকাশ : উদ্যোক্তা হওয়ার মাধ্যমে আপনি নতুন ধারণা বাস্তবায়ন করতে পারেন এবং সৃজনশীলভাবে সমস্যার সমাধান করতে পারেন। চাকরিতে সৃজনশীলতা প্রকাশের খুব একটা সুযোগ থাকে না।
৫. চ্যালেঞ্জ ও ব্যক্তিগত উন্নয়ন : উদ্যোক্তা হওয়ার পথে নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়, যা ব্যক্তিগতভাবে উন্নতি ঘটায় এবং নতুন দক্ষতা অর্জনের সুযোগ দেয়। এটি জীবনের প্রতিটি দিককে আরও উন্মুক্ত করে।
৬. দীর্ঘমেয়াদি সফলতা : চাকরিতে সাধারণত দীর্ঘমেয়াদি সফলতার সীমা থাকে, কিন্তু একজন উদ্যোক্তা হিসেবে আপনি আপনার ব্যবসাকে বড় করে তুলতে পারবেন এবং ভবিষ্যতে স্থায়ী সফলতা অর্জন করতে পারবেন।
৭. কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি : একজন উদ্যোক্তা নতুন ব্যবসা শুরু করলে অন্যদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারেন। এটি সমাজে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে এবং অনেকের জীবনে পরিবর্তন আনতে পারে।
৮. বিনিয়োগের সুযোগ ও লাভ : ব্যবসায় বিনিয়োগ এবং লাভের সম্ভাবনা বেশি থাকে। উদ্যোক্তা হয়ে আপনি নতুন নতুন ব্যবসার সুযোগ তৈরি করতে পারেন এবং ভালো সুযোগের মাধ্যমে লাভের পরিমাণ বাড়াতে পারেন।
৯. নিজস্ব ব্যবসার সংস্কৃতি তৈরি : নিজের উদ্যোগ শুরু করার মাধ্যমে আপনি একটি বিশেষ ধরনের কর্মসংস্কৃতি গড়ে তুলতে পারেন যা আপনার মূল্যবোধ এবং আদর্শের সাথে মেলে।
১০. জীবনের কাজে পূর্ণতা : অনেকেই উদ্যোক্তা হতে চান কারণ এটি তাদের জীবনের কাজ এবং উদ্দেশ্যে পূর্ণতা এনে দেয়। এটি কাজের সঙ্গে মানসিকভাবে সংযুক্ত হতে সাহায্য করে এবং জীবনকে আরও অর্থপূর্ণ করে তোলে।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh