ঘরবন্দি তারকাদের বৈশাখ

মাছে-ভাতে বাঙালির বৃহৎ উৎসব পহেলা বৈশাখ। করোনাভাইরাসের কারণে সরকারি নির্দেশনা মেনে স্থগিত করা হয়েছে রমনার বটমূলসহ সব আয়োজন।

তবুও যেন মন বড় অবুঝ। ঘরবন্দি তারকাদের বৈশাখ ভাবনা জানার চেষ্টা করেছেন আশরাফুল ইসলাম আকাশ। 

কমলগঞ্জের বৈশাখী মেলা আজও চোখে ভাসে: মাসুম আজিজ


কী এক অদ্ভুত টুন টুন টুন বাজছে, পো পো পো.... টুং টুং টুং শব্দগুলো আজও কানে বাজে। সেদিনের সময়গুলো অনেক মিস করি। বাবার চাকরিসূত্রে কমলগঞ্জে থেকেছি। সেই এলাকাতে মনিপুরীদের বসবাস ছিল। বুদ্ধি হবার পর থেকেই কমলগঞ্জের মেলা উপভোগ করেছি অনেকবার। আমাদের মধ্যে অনেক পরিবর্তন এসেছে। আমরা বলি ‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার’। এই স্লোগান কেন দিতে হবে? এটি মূলত এসেছেই বিরোধ সৃষ্টি করতে।

আমাদের সময়ে ভ্রাতৃত্ববোধ, মেলবন্ধন আর কি চমৎকার একটা সম্পর্ক ছিল। এখন তো সেটা আর দেখা যায় না। এখন আমাদের মন নেই, হৃদয় নেই। এখন যেটা হচ্ছে সেটা মেকানিক্যাল। এখনকার উৎসবের প্রকৃত রূপ নেই। তারপরও প্রতি বছর যে আয়োজন করা হচ্ছে শুধু সেটি সবাইকে মনে করিয়ে দেবার জন্য। বৈশাখের আয়োজনে ধর্ম-বর্ণ ভুলে গিয়ে যখন আমরা একত্রে আনন্দ উৎসবে মেতে উঠি তখনই আমি প্রকৃত সুখ খুঁজে পাই। আর এটিই আমার ধর্ম।

নববর্ষের আয়োজন স্থগিতাদেশকে স্বাগত জানাই: সম্পা দাস


বাংলা নববর্ষের গুরুত্ব অনেক। আমার পূর্বপুরুষরা এই দিনটিতে নানা আয়োজনের ব্যবস্থা করতো। আগের দিনে হালখাতার প্রচলন ছিল এখন সেটি একেবারেই কম। বাঙালির ইতিহাসে পহেলা বৈশাখ একটা বিরাট উৎসব। পহেলা বৈশাখ নির্দিষ্ট কোনো ধর্মের নয় এটি সবারই উৎসব।

সরকারের একনিষ্ঠ ভক্ত হিসেবে বা সাপোর্টার হিসেবে কিংবা বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসেবে নববর্ষের আয়োজন স্থগিতাদেশকে স্বাগত জানাই। করোনা সংকটের জন্য বৈশ্বিকভাবেই আমরা আটকে আছি, তাই ব্যক্তিগতভাবে স্বল্প পরিসরে ঘরের ভেতরে আয়োজন করব। বাবা-মার সঙ্গে এবার থাকা সম্ভব হচ্ছে না। সিংগেল পরিবারে যতটুকু আয়োজন, আনন্দ উৎসব করার সেটুকু করব।

ঘরে বসেই বৈশাখ পালন করুন: তিতান চৌধুরী


কিছু কিছু উৎসব পরিবারের সঙ্গেই কাটাতে হয়। যার মধ্যে আছে বাংলা নববর্ষ। পহেলা বৈশাখের প্রহর গুনতে গুনতে নানান পরিকল্পনা করে ফেলি। ঐতিহ্যবাহী এ উৎসবকে ঘিরে নতুন বাঙ্গালিয়ানা পোশাক কিনি। সেই পোশাক পরে রমনাতে যাই, এটার আনন্দই আলাদা। এটা একটা আনন্দ উৎসব।

ছোটবেলা থেকেই বাবা-মার সঙ্গে বাংলা নববর্ষ কাটিয়েছি; কিন্তু এবারই প্রথম করোনার পাল্লায় পরে তাদেরকে অনেক মিস করব। এটা আমার জন্য স্মৃতিকাতর একটা বিষয়। করোনা মোকাবেলায় সবাই ঘরে থাকুন এমন যেন না হয়, এক বছর পালন করতে গিয়ে, সারাজীবন পালন করতে না পারি। সে জন্য বলব সবাই ঘরে থাকুন, ঘরে বসেই বৈশাখ পালন করুন।

পরিকল্পনা আছে অনলাইনে লাইভ প্রোগ্রাম করার: বাদশা বুলবুল


আমাদের শহরের লাইব্রেরি রোডেই মেলা বসত। যেখানে বায়স্কোপ দেখানো হতো, মাটির জিনিসপত্র ও নানানরকমের খাবার কিনতাম। সেসময় ছোটখাটো অনুষ্ঠান হলে অংশগ্রহণ করতাম, যেহেতু গান করতাম। পৃথিবীজুড়ে করোনার মহামারি ছড়িয়ে পড়েছে। এটি রোধ করতে হলে শুধু বৈশাখ কেন এর থেকে বড় কোনো উৎসব স্থগিত করার প্রয়োজন হলেও সেটা করতে হবে।

তারপরও ১৪ তারিখের বিশেষ এ দিনটিতে প্রবাসে বসবাস করা কয়েকজন বন্ধুরা মিলে অনলাইনে এসে লাইভ প্রোগ্রাম করার পরিকল্পনা আছে। যদিও সিদ্ধান্তটি এখনো পুরোপুরি ফাইনাল হয়নি। যখন আমরা লাইভ করব তখন হয়তো সেখানে লিমিটেড গেস্ট থাকবে। পরবর্তীতে সেটি ইউটিউবের মাধ্যমে সবাই দেখতে পাবেন।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //