বিটিএসের নতুন গান, বিরতি না ভাঙন?

‘যায় দিন ভালো, আসে দিন খারাপ’ প্রবাদটির বিপরীত ধারণা নিয়ে একটি গান তৈরি করেছিল দক্ষিণ কোরিয়ার জনপ্রিয় ব্যান্ড ‘বিটিএস’। ‘ইয়েট টু কাম দ্য মোস্ট বিউটিফুল মোমেন্ট’ শিরোনামের এ গানটি তাদের ১৯তম অ্যালবাম ‘প্রুফ’-এর টাইটেল ট্র্যাক।

১০ জুন গানটির একটি মিউজিক ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। এ দিন মুক্তি পাওয়া মাত্রই সে গানের স্বাদ আস্বাদন করতে হুমড়ি খেয়ে পড়েন ব্যান্ডটির অনুরাগীরা। ফলে ঝড় ওঠে ইউটিউবে। গানটির ভিউ বাড়তে থাকে মিলিয়নের পর মিলিয়ন। এর ফলে প্রথম দুই দিনে ৬৫ মিলিয়নের ঘরে পা রাখে ‘ইয়েট টু কাম’ গানের দর্শক সংখ্যা। এই ধারা অব্যাহত রয়েছে এখনো। প্রকাশের চার দিনে গানটির ভিউ ৯০ মিলিয়ন অতিক্রম করেছে। 

বিটিএসের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান বিগ হিট এন্টারটেইনমেন্টের অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেল বিগ হিট মিউজিকে গানটি প্রকাশ পেয়েছে। এর মাধ্যমে গত নয় মাসে নতুন কোনো গান প্রকাশ করল ব্যান্ডটি। এ প্রসঙ্গে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান বিগ হিট এন্টারটেইনমেন্টের এক বিবৃতিতে বলা হয়, বিটিএসের অ্যান্থলজি অ্যালবাম প্রুফ ব্যান্ডটির ৯ বছরের যাত্রাকে তুলে ধরেছে।

‘ইয়েট টু কাম’-এর মিউজিক ভিডিওতে বিটিএসের আগের গানগুলো থেকে নেওয়া বিভিন্ন দৃশ্যের অনুকরণও দেখানো হয়েছে। তিনটি সিডি নিয়ে প্রকাশ পাচ্ছে ‘প্রুফ’ নামের এই অ্যালবামটি। এর প্রথম দুটি ডিস্ক স্ট্রিমিং এবং ডিজিটাল বিক্রেতাদের কাছে পাওয়া যাবে। আর তৃতীয় ডিস্কের অধিকাংশই পাওয়া যাবে শুধু সিডি আকারে।

বিটিএস ব্যান্ডটি ২০১৩ সালে আত্মপ্রকাশ করে। এই ব্যান্ডের সদস্য সংখ্যা সাতজন। তারা হলেনÑ আর এম, জিন, সুগা, জে-হোপ, ভি, জাংকুক ও জিমিন। বিশ^জুড়ে সংগীত পিপাসুদের কাছে কেন ‘বিটিএস’ এত জনপ্রিয়? এ প্রশ্নের উত্তর পাওয়া গেছে বাংলাদেশের ব্যান্ড শিল্পীদের সঙ্গে কথা বলে। 

সদ্য প্রকাশিত গানের জনপ্রিয়তার রেশ কাটতে না কাটতেই গুঞ্জন চলছে বিটিএস ভেঙে গেছে।  বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমেও এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। মূলত বিটিএস সদস্যদের একটি ভিডিও বার্তার মাধ্যমে এ গুঞ্জন ছড়িয়েছে। সম্প্রতি ভিডিও বার্তায় বিটিএস সদস্যরা ঘোষণা দেন, তারা ব্যক্তিগত ক্যারিয়ারে মনোযোগী হতে বিরতি নিচ্ছেন। তারপর থেকেই বিটিএস ভাঙার গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে।

ভিনটিনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি বার্ষিক ফেস্টা ডিনারে ব্যান্ডের সদস্যরা তাদের আগামী দিনের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেন। ডিনারের একটি ভিডিও পোস্ট করা হয় তাদের ইউটিউব চ্যানেলে। প্রায় ১ ঘণ্টা দীর্ঘ ভিডিওর ইংরেজি সাবটাইটেলে ‘বিরতি’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়। ফলে তখনই এ নিয়ে ভক্তদের মাঝে নানা জল্পনা শুরু হয়। অবশ্য এর কয়েক ঘণ্টা পর ভিডিওর সাবটাইটেল সম্পাদনা করে ‘বিরতি’ শব্দটি পরিবর্তন করে ‘আমরা অস্থায়ী বিরতি নিচ্ছি’ ব্যবহার করা হয়।

কিন্তু এই গ্রুপের প্রতিনিধিত্বকারী দক্ষিণ কোরিয়ার বিনোদন সংস্থা ‘বিরতি’ শব্দ নিয়ে আপত্তি তুলে একটি বিৃবতি প্রকাশ করেছে। হাইব বলছে, বিষয়টি স্পষ্ট করতে জানানো হচ্ছে- তারা বিরতিতে নেই। কিন্তু তারা কিছু দিন নিজেদের ব্যক্তিগত ক্যারিয়ার নিয়ে কাজ করবেন এবং ভিন্ন ভিন্ন ফরম্যাটে সক্রিয় থাকবেন। এ জন্য তাদের সময় প্রয়োজন।

বিটিএসের এজেন্ট যা-ই বলুক না কেন বিষয়টি নিয়ে বিশ্বব্যাপী আলোচনা হচ্ছে। বিটিএস ভেঙে গেছে এমন গুঞ্জন জোরালো হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে বিটিএস আর্মিরাও বেশ চিন্তিত। তবে বিটিএস আবার একসঙ্গে পারফর্ম করবে কিনা সেটা এই মুহূর্তে নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। 

 কোরিয়ান মিউজিকের দুনিয়ায় বিটিএস অনন্য। শুধু কোরিয়া নয়, বিশ্ব মিউজিকে তারা ভিন্ন নজির গড়েতে সক্ষম হয়েছে। তাদের গ্লোবাল ফ্যান ফলোয়িং কিংবা মিউজিকের সঙ্গে তুলনা হয় না কারোরই। তারা গণমাধ্যম আরও জানান, একেবারে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছেন না বরং নিজেদের সোলো মিউজিকের প্রতি আরও বেশি করে মনোযোগ দেবেন। কিছুদিন মঞ্চে একসঙ্গে পারফর্ম করবেন না। 

বিটিএস আর্মিদের উদ্দেশে তারা বলেন, ‘কখনোই ভাববেন না যে বিটিএস নেই! আমরা সবসময় বিটিএসে আছি আর থাকব। আমরা মনে-প্রাণে এক থাকতে চাই। প্রতিবার যখন গান লিখতাম বা সুর করতাম তখন মনে হতো ভালো একটা মেসেজ দিতে হবে। সেটাই চেষ্টা করতাম, তবে ‘পারমিশন টু ড্যান্স’ রিলিজের পরেই যেন সবকিছু বদলে গেল। গানের মাধ্যমে একটা স্পেশাল মেসেজের বিষয়টা এখন হারিয়ে গেছে। আমরা আমাদের দিক হারিয়েছি, ফিরতে একটু সময় লাগবে! তবে কথা দিচ্ছি ফিরব।’

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

বিষয় : বিটিএস গান

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //