সব দোষ দর্শকের ওপর চাপিয়ে লাভ নেই: ফেরদৌস

ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেতা ফেরদৌস আহমেদ। ১৯৯৮ সালে বাসু চ্যাটার্জি পরিচালিত ‘হঠাৎ বৃষ্টি’ ছবিতে অভিনয় করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন তিনি। এ সিনেমার মধ্য দিয়ে ওপার বাংলার দর্শকের কাছেও তিনি জনপ্রিয়তা পান। পরবর্তী সময় একই সঙ্গে দুই বাংলাতে কাজ শুরু করেন এ অভিনেতা। গত দুই দশক ধরে পর্দায় নানান চরিত্রে উপস্থিত হয়েছেন তিনি। তার মুক্তিপ্রাপ্ত সর্বশেষ সিনেমা ‘বিউটি সার্কাস’। বর্তমান ব্যস্ততা ও সমসাময়িক নানা বিষয়ে তার সঙ্গে কথা বলেছেন এন ইসলাম।

সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকটি সিনেমা নিয়ে দর্শকের বেশ আগ্রহ দেখা গেছে। এ সময়ের সিনেমা নিয়ে আপনার মন্তব্য কী?

আমি শুরু থেকেই দেখছি দর্শক ভালো সিনেমা দেখে আসছে। যে কয়টি সিনেমা নিয়ে দর্শকের আগ্রহ দেখা গেছে সেটি তারই প্রমাণ। এখন আমরা যদি ভালো সিনেমা দর্শকদের দিতে না পারি তাহলে দর্শক সিনেমা হলে কেন আসবে? সব দোষ দর্শকের ওপর চাপিয়ে লাভ নেই। আমি মনে করি ভালো সিনেমার ধারাবাহিকতা থাকলে আমাদের সিনেমার প্রতি দর্শকের ইতিবাচক মনোভাব আরও বাড়বে।

আপনার ব্যস্ততা সম্পর্কে জানতে চাই?

দেলোয়ার জাহান ঝন্টুর ‘সুজন মাঝি’, নূরে আলমের ‘রাসেলের জন্য অপেক্ষা’, ‘ছটকু আহমেদের ‘আহারে জীবন’ ও শাহিনের ‘মাইক’ সিনেমার শুটিং করছি। চারটা সিনেমার শুটিং নিয়ে আপাতত ব্যস্ততা যাচ্ছে। বিভিন্ন শিডিউলে এ সিনেমাগুলোর শুটিং করছি। একেকটি সিনেমা একেক রকম গল্পে নির্মিত হচ্ছে। আমাদের কমার্শিয়াল সিনেমা বলতে যা বোঝায় ‘আহারে জীবন’ সিনেমাটি তেমন। এছাড়া অন্য সিনেমাগুলোতেও দারুণ দারুণ গল্প দর্শক দেখতে পাবে।

মুক্তির অপেক্ষায় কোনো সিনেমা কি আছে?

কয়েকটি সিনেমার কাজ শেষ করেছি। এগুলো মুক্তির অপেক্ষায় আছে। কাজ শেষ করেছি হৃদি হকের ‘১৯৭১ সেই সব দিন’, আফজাল হোসেনের ‘মানিকের লাল কাঁকড়া’, জেড এইচ মিন্টুর ‘ক্ষমা নেই’, শুদ্ধমান চৈতন্যের ‘দামপাড়া’ ও এখলাচ আবেদিনের ‘হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী’ সিনেমাটির।

সিনেমার গল্পে কেমন পরিবর্তন প্রয়োজন মনে করেন?

এখন আর আগের মতো বউ-শাশুড়ি একসঙ্গে থাকে না। তাই সেই বউ-শাশুড়ির গল্প দিয়ে দর্শকদের ধরে রাখা যাবে না। এখন পরিবারে বউ-শাশুড়ির বাইরেও আরও অনেক কিছু আছে। মানুষের জীবনে নানা ধরনের ঘটনা দেখা যায়। একই রকম সিনেমার গল্পেও সেই সব নতুন নতুন চিত্র তুলে নিয়ে আসতে হবে। তাহলেই দর্শক বৈচিত্র্য পাবে। 

শুধু গল্পের পরিবর্তনেই সিনেমায় দর্শক ধরে রাখা যাবে?

প্রযুক্তি এখন অনেক আধুনিক হয়েছে। গল্পের বাইরে সিনেমায় প্রযুক্তিকে কাজে লাগাতে হবে। সত্যি বলতে, সিনেমার আবেদন কখনো ফুরাবে না। তবে সিনেমায় নতুনত্ব নিয়ে আসতে হবে। তাহলেই দর্শক হলমুখী হবে। আমাদের সিনেমার দর্শক সব সময় ছিল, এখনো আছে। শুধু তারা ভালো কন্টেন্ট পাচ্ছে না বলেই হল থেকে দূরে থাকে। 

আপনার সমসাময়িক অনেকেই অভিনয়ে নিয়মিত নন। কিন্তু আপনি সমানভাবে কাজ করছেন। এর রহস্য কী?

নির্মাতারা হয়তো এখনো আমার ওপর আস্থা রেখেছেন। এই আস্থা রাখার কারণেই তারা আমাকে নিয়ে কাজ করার সাহস পান। এছাড়া আমি সবসময় চেষ্টা করি নিজেকে ভেঙে গড়ার। ক্যারিয়ারে নানা সময় ডোমের চরিত্র করেছি, কৃষক, চোর, জুয়াড়ি- নানান ধরনের কাজে নিজেকে প্রমাণের চেষ্টা করেছি। এটাই নিজের সঙ্গে আমার নিজের এক ধরনের লড়াই। 

২০১৯ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের লোকসভা নির্বাচনে প্রচারে অংশ নেওয়ায় ভারত ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েন। সেখানে কাজের কোনো খবর আছে?

নতুন বছরের শুরুতেই সেখানের সিনেমায় দেখা যাবে। ২০১৯ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের লোকসভা নির্বাচনে প্রচারে অংশ নেওয়ায় ভারত ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েছি। এটা আমার জন্য অপ্রত্যাশিত ছিল। সেই জটিলতা কাটিয়ে ভারতের ভিসা পেয়েছি। এখন কাজ করতে কোনো সমস্যা হবে না।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //