২৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে মুক্তি পাচ্ছে ‘পাঠান’

বাংলাদেশে মুক্তি পাচ্ছে বলিউড সুপারস্টার শাহরুখ খান অভিনীত ‘পাঠান’ সিনেমা । বাংলাদেশে হিন্দি সিনেমা মুক্তির বিষয়ে একমত হয়েছেন চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা। এ নিয়ে চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (বিএফডিসি) এক বৈঠকে বাংলাদেশে শর্তসাপেক্ষে হিন্দি সিনেমা মুক্তির ব্যাপারে আপত্তি তুলে নিয়েছেন চলচ্চিত্র পরিচালক ও শিল্পী সমিতিসহ ১৯ সংগঠনের নেতারা। 

প্রযোজক নেতা খোরশেদ আলম খসরু এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

তিনি বলেন, দুই বছরের জন্য হিন্দি সিনেমা আমদানি করা হবে। চলতি বছর ১০টি এবং ২০২৪ সালে ৮টি হিন্দি ছবি আমদানি করে চালানো যাবে। এসব ছবি মাসের প্রথম সপ্তাহে মুক্তি দেওয়া যাবে না। সিনেমাগুলো বাংলায় ডাবিং করে দেখানো যাবে না। 

তিনি আরও বলেন, আমাদের বড় বড় উৎসবে হিন্দি সিনেমা প্রদর্শিত হবে না। বিশেষ করে সিনেমা হল বাঁচানোর জন্যই আমাদের এই উদ্যোগ। আশা করি, সিনেমা হলগুলো টিকে থাকলে বাংলা সিনেমার জন্যও ভালো হবে।

পাঠান সিনেমার প্রধান দুই ছবিতে শাহরুখ খান ও দিপীকা পাদুকোন। ছবি: সংগহীত

বৈঠকে হিন্দি ছবি মাসের প্রথম সপ্তাহে মুক্তি দেওয়া যাবে না বলে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। আগামী দুই বছরের ফলাফল বিশ্লেষণ করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে সবাই একমত হয়েছেন। এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে চলচ্চিত্রাঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। 

সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) ১৯টি সংগঠনের পক্ষ থেকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়। বাংলাদেশের অ্যাকশন কাট এন্টারটেইনমেন্টের পক্ষ থেকে হিন্দি ছবি ‘পাঠান’ আমদানি করার জন্য আবেদন জানানো হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি ‘পাঠান’ সিনেমা দেশের প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শিত হবে। 

চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন বলেছেন, ১৯ সংগঠন এ বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তার সঙ্গে পুরোপুরি একমত তিনি। একটা নিয়মের মধ্য দিয়ে হিন্দি সিনেমা প্রদর্শন করলে এভাবে অসংখ্য সিনেমা হল বন্ধ হতো না। যেহেতু দেশে সিনেমা নির্মাণের সংখ্যাও কমে গেছে। তাই হল বাঁচানো জরুরি। হল না থাকলে আমাদের দেশি সিনেমাও হুমকির মুখে পড়বে। তাই আমরা শিল্পী সমিতির পক্ষ থেকে শর্তসাপক্ষে হিন্দি সিনেমা আমদানির পক্ষে মত দিয়েছি।

হিন্দি সিনেমা প্রদর্শন প্রসঙ্গে জ্যেষ্ঠ পরিচালক মুশফিকুর রহমান গুলজার বলেন, আমি ঢালাওভাবে হিন্দি সিনেমা প্রদর্শনের পক্ষে নই। একটি নীতিমালা করে এ সিদ্ধান্তটি নিলে ভালো হতো। তাড়াহুড়ো করে এমন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক হবে না। এছাড়া ৬টির বেশি সিনেমা বছরে প্রদর্শিত না হলেই ভালো হতো। সংখ্যা বেশি হলে তা আমাদের দেশি চলচ্চিত্রের ওপর প্রভাব পড়তে পারে। তবে আমি বিষয়টি পর্যবেক্ষণে রাখছি।

পাঠান সিনেমার প্রধান দুই ছবিতে শাহরুখ খান ও দিপীকা পাদুকোন। ছবি: সংগহীত

শিল্পী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও চিত্রনায়ক জায়েদ খান বলেন, হিন্দি সিনেমা প্রদর্শিত হওয়া শুরু হলে দেশি প্রযোজকরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন নতুন সিনেমা নির্মাণে। তাতে আমরা শিল্পীরা কর্মহীন হয়ে পড়ব। এমনিতেই শিল্পীদের বড় একটি অংশ কর্মহীনতার কারণে মানবেতর জীবনযাপন করছে। তাই ভারতীয় ছবি দেশে প্রদর্শনের বিষয়টি বন্ধ করা উচিত।

জানা গেছে, হিন্দি সিনেমাগুলো দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক মুক্তবাণিজ্য (সাফটা) চুক্তির আওতায় আনা হচ্ছে না। আমদানি করেই হিন্দি বাণিজ্যিকভাবে মুক্তি দেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, গত ২৫ জানুয়ারি ভারতে মুক্তি পায় বহুল আলোচিত সিনেমা ‘পাঠান’। মুক্তির এক সপ্তাহের মধ্যেই ১ হাজার কোটি টাকা ব্যবসা করেছে। পাঠানের এমন সাফল্য বাংলাদেশের দর্শকরাও সিনেমাটি দেখতে আগ্রহী হয়েছে। হিন্দি সিনেমা নিয়মিত প্রদর্শিত হলে, বাংলা সিনেমার ওপর কেমন প্রভাব পড়বে সেটাই এখন দেখার বিষয়।


সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //