পরীমণির বিরুদ্ধে নাসিরের মামলা: তদন্ত কর্মকর্তাকে শোকজ

হত্যাচেষ্টা, মারধর, ভাঙচুর ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগে চিত্রনায়িকা পরীমণির বিরুদ্ধে করা ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদের মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল না করায় তদন্তকারী কর্মকর্তাকে শোকজ করেছেন আদালত। আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে সশরীরে আদালতে এসে এ বিষয় তাকে ব্যাখ্যা দিতে হবে।

আজ বুধবার (২৩ আগস্ট) ঢাকার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাবেয়া বেগমের আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল। এদিন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) প্রতিবেদন দাখিল করেনি। এজন্য তদন্ত কর্মকর্তাকে শোকজ করেন বিচারক।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার নাম নথিতে যুক্ত না হওয়ায় সিআইডির সদরদপ্তর বরাবর এ শোকজ পাঠানো হয় বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে। এদিকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নতুন করে ১১ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত।

এর আগে ২০২২ সালের ১৮ জুলাই ঢাকার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাজীব হাসান পরীমণির বিরুদ্ধে করা মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন সিআইডিকে।

একই আদালতে ঢাকা বোট ক্লাবের সভাপতি ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ বাদী হয়ে পরীমণিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। অন্য দুই আসামি হলেন পরীমণির সহযোগী ফাতেমা তুজ জান্নাত বনি ও জুনায়েদ বোগদাদী জিমি ওরফে জিম।

মামলায় নাসির উল্লেখ করেন, পরীমণি ও তার সহযোগীরা অ্যালকোহল সেবনে অভ্যস্ত। তারা সুযোগ বুঝে বিভিন্ন নামিদামি ক্লাবে ঢুকে অ্যালকোহল পান করেন এবং পার্সেল নিয়ে মূল্য পরিশোধ করেন না। পরীমণি তার পরিচিত পুলিশ কর্মকর্তাদের দিয়ে মিথ্যা মামলা করিয়ে হয়রানির ভয় দেখান। ২০২১ সালের ৯ জুন রাত ১২টার পর আসামিরা ঢাকা বোট ক্লাবে ঢোকেন এবং দ্বিতীয় তলার ওয়াশরুম ব্যবহার করেন। পরে তারা ক্লাবের ভেতরে বসে অ্যালকোহল পান করেন।

মামলায় আরও বলা হয়, বাদী (নাসির উদ্দিন মাহমুদ) ও তার সহযোগী শাহ শহিদুল আলম রাত ১টা ১৫ মিনিটে যখন ক্লাব ত্যাগ করছিলেন, তখন পরীমণি উদ্দেশ্যমূলকভাবে নাসিরকে ডাক দেন। তাদের সঙ্গে কিছু সময় বসারও অনুরোধ করেন। একপর্যায়ে পরীমণি অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে নাসিরকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেন। পাশাপাশি একটি ব্লু লেবেল অ্যালকোহলের বোতল বিনামূল্যে পার্সেল দেওয়ার জন্য চাপ দেন।

‘নাসির উদ্দিন এতে রাজি না হওয়ায় পরীমণি তাকে গালমন্দ করেন। নাসির ও আসামিদের মধ্যে বাদানুবাদের একপর্যায়ে পরীমণি বাদীর দিকে একটি সারভিং গ্লাস ছুড়ে মারেন এবং হাতে থাকা মোবাইল ছুড়ে মারেন। এতে মাথায় এবং বুকে আঘাতপ্রাপ্ত হন নাসির।’

বাদী মামলায় আরও উল্লেখ করেন, পরীমণি ও তার সহযোগীরা তাকে (নাসির উদ্দিনকে) মারধর ও হত্যার হুমকি দেন এবং বোটক্লাবে ভাঙচুর চালান। এ ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য পরীমণি সাভার থানায় নাসির উদ্দিনসহ দুজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে মামলা করেন।

২০২১ সালের ১৪ জুন নাসির ও তার বন্ধু অমির নাম উল্লেখ করে এবং চারজনকে অজ্ঞাত আসামি করে সাভার থানায় মামলাটি করেছিলেন পরীমণি।

ওই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কামাল হোসেন ঢাকার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নাসিরসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন।

এরপর ২০২২ সালের ১৮ মে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৯ এর বিচারক হেমায়েত উদ্দিন আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। অভিযোগ গঠনের সময় নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন নাসিরসহ তিন আসামি।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //