গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসবে যোগ দেবে ৪৫ নাট্যদল

বাংলাদেশ-ভারত দুই দেশের অভিন্ন সংস্কৃতির অভিজ্ঞতা বিনিময় এবং জনগণের মৈত্রীর বন্ধন দৃঢ় করার লক্ষ্যে চার হাজারেরও বেশি সংস্কৃতিকর্মীর অংশগ্রহণে আগামী শুক্রবার (৬ অক্টোবর) শুরু হচ্ছে গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব। 

এদিন সন্ধ্যায় রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় উৎসবের দ্বাদশ আসরের উদ্বোধন করবেন নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার। এতে মোট ৪৫ টি নাট্যদল অংশগ্রহণ করবে।

আজ বুধবার (৪ অক্টোবর) শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান উৎসবের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব আখতারুজ্জামান।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ-ভারত দুই দেশের অভিন্ন সংস্কৃতির অভিজ্ঞতা বিনিময় এবং জনগণের মৈত্রীর বন্ধন দৃঢ় করার লক্ষ্য নিয়েই মূলত গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব আয়োজিত হয়ে আসছে গত ১১ বছর যাবৎ। উৎসবে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তন, পরিক্ষণ থিয়েটার হল, স্টুডিও থিয়েটার হল, সঙ্গীত, আবৃত্তি ও নৃত্য মিলনায়তন, বাংলাদেশ মহিলা সমিতির ড. নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে। এতে মঞ্চনাটক, নৃত্য, আবৃত্তি, সঙ্গীত, নৃত্যনাট্য ও পথনাটকের পাশাপাশি শিশু কিশোর সংগঠনগুলোর পরিবেশনা থাকবে।  

উৎসব আয়োজনের লক্ষ্য নিয়ে আখতারুজ্জামান বলেন, মৌলবাদের উত্থান ঠেকাতে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে বীরযোদ্ধার মত বরাবরই সম্মুখযোদ্ধা এদেশের সংস্কৃতিকর্মীরা। যেকোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে, সামাজিক অনাচারের বিরুদ্ধেও সংস্কৃতিকর্মীরা রাস্তায় নেমেছে, মানবিকতার পাশে থেকেছে অকুতোভয় সৈনিকের মতো। সবশেষে আমরা আবারও মেতে উঠি আমাদের শিল্পসৃষ্টির উন্মাদনায়, আমাদের নবনব সৃষ্টির উল্লাসে। সংস্কৃতির এ মহাশক্তিকে আরও একবার বিপুল জনগোষ্ঠীর সম্মুখে উপস্থাপনের লক্ষে আবারও আয়োজিত হচ্ছে গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব।

জাতীয় নাট্যশালার সামনে উৎসবের মুক্ত মঞ্চ নির্মিত হয়েছে৷ ওই মঞ্চে প্রতিদিন বিকেলে গান, কবিতা ও নৃত্যের আয়োজন থাকবে। প্রতিবন্ধীদের কথা বিবেচনা করে তাদের সংগঠন কারিশমা সাংষ্কৃতিক সংগঠন পারফর্ম করবে।

এবার অনলাইনে মঞ্চনাটকের অগ্রিম টিকিট www.bdeticket.com-এ পাওয়া যাবে। এছাড়া টিকিট প্রতিদিন বিকেল ৪টা থেকে হল কাউন্টারে পাওয়া যাবে। পাপেট শো এবং মঞ্চনাটকের টিকিটের মূল্য- ২০০, ৩০০ ও ৫০০ টাকা। সঙ্গীত, নৃত্য ও আবৃত্তি মিলনায়তনে যে অনুষ্ঠান হবে তার টিকিটের মূল্য ১০০ টাকা। উন্মুক্ত মঞ্চের অনুষ্ঠান ফ্রি।

গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক গোলাম কুদ্দুছ জানান, উৎসবের প্রাথমিক বাজেট ৩৬ লাখ টাকা, যার মধ্যে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় দিচ্ছে ২০ লাখ টাকা ও সাউথইস্ট ব্যাংক দিচ্ছে ৫ লাখ টাকা। এবছর ৫-৮ লাখ টাকার টিকিট বিক্রি হবে বলে আশা করছেন আয়োজকরা।

তিনি জানান, প্রথমে ভারতের কলকাতার অনেক নাট্যদল পশ্চিমবঙ্গের এবং আশেপাশের জেলাগুলোতে এই উৎসব কার্যক্রম শুরু করে। তাদেরই আগ্রহে বাংলাদেশে এই উৎসব শুরু হয়। প্রথমবার প্রচুর সাড়া পাওয়ায় এটি ধীরে ধীরে এখন নাট্যকর্মীদের প্রাণের উৎসবে পরিণত হয়েছে।

তিনি জানান, ভারতীয় যে শিল্পীরা আসছেন তারা সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের বিশেষ চিঠির প্রেক্ষিতে ভিসা প্রাপ্তির মাধ্যমে এই উৎসবে অংশ নিচ্ছেন। দুই দেশের মৈত্রীর অংশ হিসেবে উৎসবে অংশ নিচ্ছেন। তবে, তাদের অংশগ্রহণ করার জন্য ৯৩ হাজার টাকা ট্যাক্স দিতে হবে। যা বহন করবে উৎসব কমিটি। এই উৎসবে অংশগ্রহণকারী কোনো শিল্পীর জন্যই সম্মানীর ব্যবস্থা নেই। 

এরমধ্যে বাংলাদেশ থেকে ৩৮টি নাট্যদল ও একটি নৃত্যনাট্য দল এবং ভারত থেকে ৬টি নাট্যদল অংশগ্রহণ করবে। ভারত থেকে ডলস থিয়েটার শিশুদের জন্য পাপেট শোর আয়োজন করবে। এই পাপেট শো দেখা যাবে ১৩ অক্টোবর বিকেল ৫টা ও সন্ধ্যা ৭টায়।

এবার ঢাকা, নওগাঁ, মাগুরা, বগুড়া, বাগেরহাট, ফরিদপুর, চট্টগ্রামের নাট্যকর্মী ও শিল্পীরা অংশগ্রহণ করবে। 

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //