গঙ্গা যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসবে আগামী বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) মঞ্চস্থ হবে সফোক্লেসের ‘রাজা ইডিপাস’ অবলম্বনে জায়া প্রজায়িনী। এটি প্রযোজনা করেছে প্রতিভাস।
নাটকটি প্রসঙ্গে নির্দেশক মুনির হেলাল বলেন, আবহমান বাংলার সংস্কৃতি মূলত কৃষিজীবী মানুষের জীবন-জীবিকা নির্ভর একটি চলমান পথ পরিক্রমা। হাজার বছরের এই পরিক্রমা জীবন-জীবিকা, আনন্দ-বেদনা, প্রতিবাদ-প্রতিরোধের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে। আমাদের এই নাট্য আখ্যানটি চিরজীবী নাট্যকাহিনীর সমৃদ্ধ সংগ্রহশালা থেকে আহরিত। প্রাচীন বাংলা-বিহার-উড়িষ্যার সাধারণ মানুষের জীবনের গল্পকে বিশ্বমানবের জীবন জিজ্ঞাসার নতুন এক দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে মিলিয়ে রচিত হয়েছে এই নাট্য আখ্যান। এই ভঙ্গিটি যতটা না জাদুকরি, তার চেয়ে বেশি গীতিময়তায় উদ্ভাসিত।
তিনি বলেন, খ্রিস্টজন্মের পূর্বে গ্রীসের পাথুরে মাটিতে, জলপাই গাছের ছায়ায় সমুদ্রের কলতান শুনতে শুনতে অচেনা কোনো মেষপালক ভাগ্য বিড়ম্বিত এক সাহসী মানুষের গল্প শুনিয়েছিলেন। সেই গল্পই হাজার বছর ধরে মানুষের মুখে মুখে সারা পৃথিবী পরিভ্রমণ করছে। গ্রীক নাট্যকার সফোক্লেস এই কাহিনী নিয়ে তৈরি করেছিলেন ‘রাজা ইডিপাস’। এই নাটকের ‘দায়াদ’ নিয়তিকে মেনে নিয়ে, দুঃসহ জীবনসত্যকে গ্রহণ করে আপন মহিমায় উজ্জ্বল এক মানব। প্রতিভাস প্রযোজনা ‘জায়া প্রজায়িনী’র এই আখ্যানটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি এবং ভাবনার সন্নিবেশে রচনা করেছেন সলিল সরকার।
মানবের চিন্তাকে যদি ‘বীজ’ বলি, তবে সে চিন্তাবীজ রোপিত হয় আর বাড়ে মনোভূমিতেই। এই ট্র্যাজেডির চেনাগল্প আমাদের চিরাচরিত অভ্যস্থ মনে যদি নতুন করে কোনো ভাবনা বা জিজ্ঞাসার জন্ম দিতে পারে, অনুসন্ধানী করে তুলতে সাহায্য করে, তবেই নতুন বচন এবং বাচনভঙ্গির এই প্রযোজনা সার্থকতা পাবে- বলেন মুনির হেলাল।
চারদশক আগে, গত শতাব্দীতে সংস্কৃতি চর্চায় নিবেদিত কজন কর্মী-সংগঠক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে, আমরা একটা কিছু করতে চাই এবং সেটি মঞ্চনাটক। স্বৈরাচারী সেনাশাসক জেনারেল এরশাদ তখন ক্ষমতায় উপবিষ্ট হয়েছেন। স্বৈরশাসনে কণ্ঠরুদ্ধ সে কালসংকটে ১৯৮৩ খ্রিস্টাব্দে পহেলা বৈশাখে প্রতিভাস নাট্যদল প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। নাটকই ছিল সেসময়ে প্রতিবাদের অন্যতম ভাষা।
অভিনয়
দায়াদ : হিন্দোল রায়
জায়িনী : কংকন দাশ
মোড়ল ও গায়েন : দীপংকর দস্তিদার
ত্রিনয়ন : দুলাল দাশগুপ্ত
জায়দা : রথি দাশ গুপ্ত
বিধি : দীপা চৌধুরী
দূত : মোরশেদ হিমাদ্রী হিমু
রাখাল : অসীম বিশ্বাস/রাশেদুল ইসলাম
ক্ষোণিবাসী : আশরাফ মাসুদ, অসীম বিশ্বাস, অরুণা দত্ত,
সৌগতা দে ঐশী, বীনা দাশগুপ্ত, মামুন খান রাহী
বালিকা/বালক : আরিয়া জুনাইনাহ্ /স্বর্ণাভ বিশ্বাস নৈঋত
সঙ্গীত ও যন্ত্রীদল : সর্বাণী দস্তিদার, মধুলিকা মণ্ডল
দিগন্ত রায়, দিবাকর দস্তিদার
এই পালার দু’টি গানের
গীতিকার : রঞ্জন কুমার দেব
সুর : রওনক আনোয়ার
সঙ্গীত পরিচালনা : মধুলিকা মণ্ডল
নেপথ্যে
মঞ্চ : সঞ্জীব দত্ত
আলোক পরিকল্পনা : ফাইয়ায রাকিন নূর
পোষাক পরিকল্পনা : অমিত চক্রবর্তী
সহযোগী : মধুলিকা মণ্ডল
ফোটোগ্রাাফি ও ভিডিওগ্রাফি : পিকটোরাইম পিকচার্স
পোস্টার ও অলংকরণ : দীপংকর দস্তিদার
মোরশেদ হিমাদ্রী হিমু
মঞ্চ নির্মাণ : আবদুল মালেক
সার্বিক তত্ত্বাবধান : পার্থ প্রতীম ঘোষ, আশীষ রায় চৌধুরী
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2023 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh